ছত্রভঙ্গ সভা। শ্যামলী দে-র তোলা ছবি।
সভা নীতীশ কুমারের। অথচ স্লোগান উঠল নরেন্দ্র মোদীর নামে। আর তার জেরে শুরু হয়ে গেল মার-পাল্টা মার। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয়ে ওঠে যে, নীতীশ কুমার তাঁর গাড়িতে ফিরে যান। স্বাভাবিক ভাবেই এই গোলমাল নিয়ে শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। জেডিইউ-এর দাবি, পরিকল্পনা করে গোলমাল বাধিয়েছে বিজেপি। এই অভিযোগ নস্যাৎ করে দিয়েছে বিজেপি। নির্বাচন কমিশনের তরফেও ঘটনার রিপোর্ট চেয়ে পাঠানো হয়েছে।
নীতীশ-মোদীর মহাটক্কর হিসেবেই বিহারের বিধানসভা ভোটকে দেখছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। সেখানে নীতীশের সভায় মোদীর নামে স্লোগানের ঘটনা জেডিইউ-কে যে যথেষ্ট অস্বস্তিতে ফেলেছে, তা মানছেন অনেকেই। ঘটনাটি ঘটে নওয়াদা জেলার ওয়ারিসলিগঞ্জ বিধানসভা এলাকায় এক জনসভায়। আজ সকালে সেখানে স্থানীয় হাসপাতালের মাঠে নীতীশের সভা ছিল। নির্দিষ্ট সময়ে পৌঁছেও যান তিনি। কিন্তু হঠাৎই হাজির লোকজনের মধ্যে থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নামে স্লোগান ওঠে। মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তাকর্মীরা প্রথমে উত্তেজিত লোকজনকে শান্ত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু তাতে পরিস্থিতি আরও বিগড়ে যায়। তখন মাঠে নামেন জেডিইউ নেতারা। তার পরেই জনতার একাংশ খেপে গিয়ে নীতীশের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে শুরু করে— ‘নীতীশ কুমার ফিরে যাও’। ভিড়ের মধ্যে থেকে দেখানো হয় কালো পতাকাও।
অবস্থা দেখে নীতীশ গাড়িতে ফিরে যান। তত ক্ষণে জেডিইউ কর্মীদের সঙ্গে বিক্ষুব্ধ অংশের হাতাহাতি শুরু হয়ে গিয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান অনুযায়ী, মুখ্যমন্ত্রীর দিকে জুতো খুলেও দেখান কেউ কেউ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এর পর পুলিশ লাঠিচার্জ করে বলে অভিযোগ। ২০ জনকে আটকও করা হয়। পরে জেডিইউ-এর তরফে অভিযোগ করা হয়, আগে থেকে ছক কষেই বিজেপি এবং এবিভিপি সমর্থকেরা হামলা চালিয়েছে। এই ঘটনাকে তাঁরা ‘গণতন্ত্রের অপমান’ বলেও বর্ণনা করেছেন। বিজেপির আবার পাল্টা অভিযোগ, নীতীশের দলের অন্তর্দ্বন্দ্বের ফলেই এই গোলমাল।
ঘটনা হচ্ছে, স্থানীয় বিধায়ক প্রদীপ কুমারকে নিয়ে ভাল অসন্তোষ রয়েছে এলাকায়। প্রদীপ তোলাবাজদের আশ্রয় দেন— এমন অভিযোগ তুলে স্থানীয় কর্মী-সমর্থকেরা এ বার জেডিইউ নেতৃত্বকে তাঁকে প্রার্থী না করতে অনুরোধ করেন। কিন্তু প্রদীপকেই শেষমেশ টিকিট দেয় দল। স্থানীয়দের একাংশের বক্তব্য, এই নিয়েই আজ নীতীশের কাছে অভিযোগ জানাতে যেতে চেয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁদের হটিয়ে দেন। তার পরেই বিক্ষোভ এবং মোদীর নামে স্লোগান শুরু হয়।