ফাইল চিত্র।
আরএসএসে নিজের ‘গুরু’র নামে সরকারি পুরস্কার চালু করলেন নরেন্দ্র মোদী। শুধু তাই নয়, তাঁর নামে একটি গবেষণাকেন্দ্রও চালু করতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী।
লক্ষ্মণরাও ইনামদার। অনেকের কাছেই অপরিচিত নাম। কিন্তু যুবক বয়সে ঘর ছেড়ে রাজকোট, বেলুড় মঠ, গুয়াহাটি, আলমোড়া ঘুরে মোদী যখন ফের গুজরাত ফেরেন, তখন লক্ষ্মণরাওয়ের সান্নিধ্যেই আসেন তিনি। তারপর আর ফিরে তাকাতে হয়নি। তাঁর হাত ধরেই আরএসএসের যাত্রা শুরু হয় তরুণ মোদীর। মোদী যখন আরএসএসের প্রচারক, তখন গুজরাতের প্রান্ত প্রচারক ছিলেন ইনামদার। নিজের অনেক বইয়ে মোদী তাঁর জীবনে ইনামদারের গভীর প্রভাবের কথা লিখেছেন। এমনই একটি বই অটলবিহারী বাজপেয়ীর জমানায় প্রধানমন্ত্রী নিবাসে উদ্বোধন হয়েছিল। সেই সূত্র ধরে ২০০১ সালের সেই অনুষ্ঠানে মোদী-বাজপেয়ীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন তৎকালীন সরসঙ্ঘচালক কে সুদর্শন।
সেই লক্ষ্মণরাও ইনামদারের জন্মশতবার্ষিকীই আজ ধুমধাম করে পালন করল কেন্দ্র। দিল্লির বিজ্ঞান ভবনে আয়োজিত হল বড় মাপের অনুষ্ঠান। কিন্তু মোদীর রাজনৈতিক ‘গুরু’ হিসেবে নন, সমবায় আন্দোলনের জনক হিসাবে কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রকের মাধ্যমে সরকারি অনুষ্ঠানটি আয়োজন করলেন প্রধানমন্ত্রী। আর সেখানেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা সমবায় ক্ষেত্রের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের হাতে তুলে দেওয়া হল ইনামদারের নামাঙ্কিত পুরস্কার। ঘোষণা হল, এ বার থেকে ফি-বছর এই পুরস্কার দেওয়া হবে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী রাধামোহন সিংহও ঘোষণা করলেন, দিল্লির উপকন্ঠ গুরুগ্রামে সামনের বছর চালু হবে ‘লক্ষ্মণরাও ইনামদার অ্যাকাডেমি ফর কো-অপারেটিভ স্টাডিজ অ্যান্ড হিউম্যান রিসার্চ সেন্টার’।
আরও পড়ুন:মহিলা বিল নিয়ে মোদীকে চিঠি সনিয়ার
স্বাভাবিক ভাবেই স্বল্পপরিচিত কারও জন্মশতবর্ষ সরকারি বদান্যতায় পালন করায় বিরোধীদের ভুরু কুঁচকেছে। তাদের অনেকের কটাক্ষ, স্বাধীনতা আন্দোলনে বিজেপি বা সঙ্ঘের কোনও অবদান নেই। বিজেপির তাই ‘আইকন’-এর সঙ্কট রয়েছে। সে কারণেই বিভিন্ন জায়গা থেকে খুঁজে নতুন নতুন আইকন তৈরি করতে চাইছেন প্রধানমন্ত্রী। বিরোধীদের এই কটাক্ষ প্রধানমন্ত্রীর কানেও আগেই পৌঁছেছে।
তাই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীকে লক্ষ্মণরাও সম্পর্কে সবিস্তার ব্যাখ্যা করতে হল। কবুল করতে হল, ‘‘অনেকেই প্রশ্ন তুলতে পারেন, কে এই ব্যক্তি, আমরা তো নাম শুনিনি আর আপনি তাঁর জন্মশতবর্ষ পালন করছেন? আমি মানি, নাম শোনেননি, সেটিই তো সব থেকে বড় কামাল। সমবায় আন্দোলনের সাফল্য সেখানেই, যখন নিজেকে পিছনে রেখে সকলে মিলে কাজ করা যায়। কিছু ব্যক্তি কাগজের
হেডলাইনে থাকেন না, টেলিভিশনে চমকান না। নীরব সাধকের মতো সমর্পিত জীবন কাটান।’’