ভারতে চিতা সংরক্ষণের জন্য বিশেষ পরামর্শ দিয়েছে আফ্রিকা। ফাইল চিত্র।
নামিবিয়া এবং দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে চিতা আনা হয়েছে ভারতে। কিন্তু চিতা সংরক্ষণের জন্য সেই সমস্ত আফ্রিকান দেশে যে পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়, তা এ দেশে হবে না। এমনটাই জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় কমিটির প্রধান।
আফ্রিকার দেশগুলিতে চিতা যেখানে রাখা হয়, সেই জঙ্গল বেড়া দিয়ে ঘিরে অন্য অংশের থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। এই পদ্ধতিতে আপত্তি আছে ভারতের। এ দেশে চিতা পুনঃপ্রবর্তন প্রকল্পের তদারকির জন্য কেন্দ্রীয় সরকার যে উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করেছে, তার প্রধান জানিয়েছেন, আফ্রিকার ধাঁচে ভারতে চিতার বাসস্থান বেড়া দিয়ে ঘেরা হবে না। কারণ, এই পদ্ধতি বন্যপ্রাণ সংরক্ষণের মৌলিক নীতির বিরোধী।
দক্ষিণ আফ্রিকা এবং নামিবিয়ার যে বিশেষজ্ঞেরা ভারতে চিতার পুনঃপ্রবর্তনের প্রকল্পে সাহায্য করছেন, তাঁরা চিতা সংরক্ষণের জন্য জঙ্গলে বেড়া দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। বলা হয়েছিল, এই পদ্ধতি অনুসরণ করলে চোরাশিকারিদের আটকানো সম্ভব হবে। সেই সঙ্গে মানুষের সঙ্গে চিতার সংঘাত এবং অন্যান্য বিপদও এড়ানো যাবে। কিন্তু পরামর্শে ‘না’ করে দেওয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে ভারতের চিতা কমিটির চেয়ারম্যান রাজেশ গোপাল বলেছেন, ‘‘পশুর সাধারণ বাসস্থান বেড়া দিয়ে ঘিরে ফেলা খুবই খারাপ জিনিস। এটি বন্যপ্রাণ সংরক্ষণের মৌলিক নীতির বিরোধী। আফ্রিকায় যা হয়, এখানে তা হবে না। আমাদের নিজস্ব সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক পরিবেশ রয়েছে। ৫০ বছর ধরে আমরা বাঘেদের সামলাচ্ছি। পশু এবং মানুষের সাক্ষাতে কী হয় না হয়, আমাদের ভাল করেই জানা আছে। আমরা চিতাদেরও সামলাতে পারব।’’
এর আগে দক্ষিণ আফ্রিকার এক বন্যপ্রাণ বিশেষজ্ঞ পিটিআইকে জানিয়েছিলেন, বেড়াহীন অসংরক্ষিত জঙ্গলে এখনও পর্যন্ত চিতা বাঁচিয়ে রাখার কোনও প্রকল্প সফল হয়নি। এমনকি, আফ্রিকাতেও সেই চেষ্টা একাধিক বার করা হয়েছিল। কিন্তু সফল হয়নি।
ভারতে এখনও পর্যন্ত ছ’টি চিতার মৃত্যু হয়েছে। গত সেপ্টেম্বরে নামিবিয়া থেকে আটটি এবং ফেব্রুয়ারিতে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ১২টি চিতা এ দেশে আনা হয়েছিল। কিন্তু পর পর চিতার মৃত্যুর খবরে উদ্বিগ্ন বিশেষজ্ঞেরা। অনেকেই মনে করছেন, ভারতের পরিবেশ চিতার জন্য আদৌ উপযুক্ত নয়। তবে চিতাদের বেড়া দিয়ে ঘেরা বদ্ধ জঙ্গলে রাখতেও নারাজ কেন্দ্র।