সংসদে বায়োমেট্রিক হাজিরা চালুর ভাবনা।
দিনভর দেখা নেই। অথচ কোন ফাঁকে এসে সই করে গিয়েছেন!
সংসদের অধিবেশন চলাকালীন সাংসদদের ‘ফাঁকি দেওয়া’র অনেক অভিযোগ জমা পড়ায় সাংসদদের জন্যও বায়োমেট্রিক ব্যবস্থা চালু করার ভাবনাচিন্তা করা হচ্ছে বলে লোকসভা সচিবালয় সূত্রের খবর। তাতে বোঝা যাবে, সাংসদ কখন সংসদে আসছেন, কখন বেরোচ্ছেন।
নিয়ম বলে, একবার সই হলে সাংসদ দিনের ভাতাটি পাবেন। প্রতি দিন দু’হাজার টাকা। লোকসভা ও রাজ্যসভায় ঢোকার মুখেই রাখা থাকে একটি খাতা। সেখানেই সই করতে হয়। কোনও সাংসদ দিনভর সংসদে হাজির থাকলেন, অথচ সই না করলে সেদিনের ভাতা পাবেন না।
প্রথম বার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরেই নরেন্দ্র মোদী দলের সাংসদদের পইপই করে বলেছিলেন, সংসদ চললে মন দিয়ে অধিবেশনে যোগ দিতে হবে। বিভিন্ন বিতর্কে অংশ নিতে হবে। এমনকি বিজেপির সাংসদরাও কেন্দ্রীয় সরকারকে সংসদে আরও চেপে ধরতে পারেন। এতে নিজের নির্বাচনী কেন্দ্রের দাবিদাওয়া যেমন যথাযথ ভাবে তুলতে পারবেন সাংসদ, তেমনই সরকারের উপরেও কাজ করার চাপ বাড়বে। দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসার পরেও প্রধানমন্ত্রী একই সতর্কবাণী শুনিয়েছেন। কিন্তু তারপরেও বিজেপিরই অনেক সাংসদ গরহাজির থাকছেন। এমনকি, গুরুত্বপূর্ণ বিলে ভোটাভুটির সময়েও অনেকে অনুপস্থিত থেকেছেন।
সংসদীয় মন্ত্রকের এক কর্তার মতে, ‘‘এই পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী সংসদীয় মন্ত্রীকে নিয়মিত রিপোর্ট দিতে বলেছেন। সংসদ চললে রোজ সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর দফতরে এই রিপোর্ট পাঠাতে বলা হয়েছে। যেখানে সংসদের দুই কক্ষেই বিজেপির কোন সাংসদ কখন উপস্থিত থাকছেন, কখন থাকছেন না, তার তালিকা থাকবে।’’ তবে বিজেপির নেতারা এমনও বলছেন, যদি বায়োমেট্রিক ব্যবস্থা চালু হয়, তা হলে তো ধরা পড়বেন রাহুল গাঁধীর মতো সাংসদেরা। যাঁরা অধিকাংশ সময়েই সংসদে থাকেন না। আবার কখনও সখনও কিছু ক্ষণের জন্য এসে সই করে বেরিয়ে যান। এখন একবার সই করলে বোঝা সম্ভব নয়, কতক্ষণ সংসদে তিনি সময় দিলেন। বায়োমেট্রিকে সেটিও ধরা পড়বে।
সংসদের স্থায়ী কমিটির বৈঠকেও সাংসদদের গরহাজিরার বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় চলছে। সদ্য গতকালই দিল্লির দূষণ নিয়ে স্থায়ী কমিটির বৈঠকে হাজির ছিলেন মাত্র ৪ জন সাংসদ। বাকি ২৫ জন আসেননি। আজ লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার কাছেও পৌঁছয় এই বিষয়টি। সর্বদল বৈঠকের পর এই বিষয়টিও খতিয়ে দেখার কথা জানান স্পিকার।