মন্দায় বড় ধস রেলের পণ্য বহনে

অক্টোবরে সারা দেশে রেল প্রায় ৯.৪ কোটি টন পণ্য বহন করেছে। যা বিগত বছরের তুলনায় প্রায় ৮% কম এবং গত ন’বছরের হিসেবে যা সর্বনিম্ন।

Advertisement

ফিরোজ ইসলাম

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০১৯ ০১:১০
Share:

ছবি: সংগৃহীত।

একটানা আর্থিক সমস্যার মধ্যে খরচ কমাতে স্বেচ্ছাবসর, কর্মী-সংখ্যা নিয়ন্ত্রণের মতো নানা ধরনের ব্যবস্থা নিচ্ছে রেল। তার জন্য সমালোচনার মুখেও পড়ছে তারা। এর মধ্যেই দেশজোড়া মন্দার ধাক্কায় রেলে নজিরবিহীন ভাবে কমে গিয়েছে পণ্য পরিবহণ। এমনকি ব্যস্ত মরসুমে পণ্য পরিবহণের ক্ষেত্রে নির্ধারিত সারচার্জে ১৫% পর্যন্ত ছাড় দিয়েও পতন রোখা যায়নি বলে রেল সূত্রের খবর।

Advertisement

অক্টোবরে সারা দেশে রেল প্রায় ৯.৪ কোটি টন পণ্য বহন করেছে। যা বিগত বছরের তুলনায় প্রায় ৮% কম এবং গত ন’বছরের হিসেবে যা সর্বনিম্ন। টনের হিসেবে কিলোমিটার-প্রতি পণ্য পরিবহণ কমেছে প্রায় ১১%। উল্লেখযোগ্য ভাবে কমেছে কয়লা, ইস্পাত শিল্পের কাঁচামাল এবং সিমেন্ট পরিবহণের পরিমাণ। ঘাটতি পুষিয়ে দিতে রাসায়নিক সার এবং অন্য বেশ কিছু পণ্যের পরিবহণ বাড়ানো হয়েছিল। কিন্তু সুরাহা হয়নি।

রেলমন্ত্রী অক্টোবরে রেলের সব জ়োনকে পণ্য পরিবহণ বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই অনুযায়ী জ়োনগুলি তৎপর হলেও সব ক্ষেত্রে আশানুরূপ ফল মেলেনি। এপ্রিল থেকে অক্টোবর পর্যন্ত চলতি আর্থিক বছরের প্রথম সাত মাসের হিসেবে রেলের আয় কমেছে প্রায় ১৯ হাজার কোটি টাকা। ওই সময়ের মধ্যে এক লক্ষ ১৮ হাজার কোটি টাকা আয়ের লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছিল, কিন্তু রেলের আয় হয়েছে ৯৯ হাজার কোটির কাছাকাছি। ঘাটতি রয়েছে প্রায় ১৯ হাজার কোটি টাকার। এর মধ্যে পণ্য পরিবহণ খাতে ঘাটতির পরিমাণ প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি। যাত্রী-ভাড়া খাতে ওই ঘাটতি প্রায় দু’হাজার কোটি। মন্দায় বিজ্ঞাপন-সহ বিভিন্ন খাতে আয় কমেছে রেলের।

Advertisement

আরও পড়ুন: ‘মোদী-শাহরাই গুজরাত থেকে আসা অনুপ্রবেশকারী’, এনআরসি নিয়ে কটাক্ষ অধীরের

আয়ের ঘাটতি রেলের ‘অপারেটিং রেশিয়ো’য় গুরুতর প্রভাব ফেলতে পারে বলে রেলকর্তাদের আশঙ্কা। পরিস্থিতি সামাল দিতে কম ওজনের পণ্য পরিবহণের দিকে ঝুঁকছে রেল। যাতে সড়কপথে ট্রাকের বাজারের অন্তত কিছুটা রেলের ঘরে আনা যায়।

কয়েক মাস আগে শিয়ালদহ-ডানকুনি রুটে লোকাল ট্রেনে ই-কমার্স সংস্থার পণ্য পরিবহণ শুরু করেছে পূর্ব রেল। নতুন বাজার ধরতে মরিয়া রেল কর্তৃপক্ষ ই-কমার্সকে পাখির চোখ করছেন। তাতে আয় কিছুটা বাড়লেও পরিস্থিতি বদলাবে কি না, বলতে পারছেন না রেলকর্তারা। রেলে কন্টেনার ভাড়া নেওয়ার প্রবণতাও কমছে। এক রেলকর্তার

কথায়, ‘‘শিল্পোৎপাদনের হার না-বাড়লে পণ্য পরিবহণে আশানুরূপ ফল পাওয়া মুশকিল।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement