মেয়ের জন্য রোবট বানালেন দিনমজুর বাবা। ছবি: টুইটার
বিশেষ ভাবে সক্ষম মেয়ে নিজের হাতে খেতে পারে না। স্ত্রীও অসুস্থ। মেয়েকে খাইয়ে দেওয়ার জন্য তাই রোবট বানিয়ে ফেললেন দিনমজুর। কোনও রকম প্রযুক্তিগত বা কারিগরি বিদ্যা ছাড়াই কার্যত অসাধ্য সাধন করে দেখিয়েছেন তিনি।
জানা গিয়েছে, গোয়ার বাসিন্দা বিপিন কদম পেশায় দিনমজুর। তাঁর মেয়ে বিশেষ ভাবে সক্ষম। এত দিন বিপিনের স্ত্রীই মেয়েকে খাইয়ে দিতেন। কিন্তু তিনিও অসুস্থ। স্ত্রীর কষ্ট লাঘব করার উপায় খুঁজছিলেন বিপিন। মেয়েকে খাইয়ে দেওয়ার জন্য তাই একটি রোবট বানিয়ে ফেলেছেন। খাবার খেতে এখন আর কারও সাহায্য দরকার হয় না মেয়েটির।
বিপিন নিজের তৈরি রোবটের নাম রেখেছেন ‘মা রোবট’। তাঁর কীর্তিকে স্বীকৃতি দিয়েছে গোয়া স্টেট ইনোভেশন কাউন্সিল। মায়ের মতো করেই বিপিনের মেয়েকে এই রোবট খাইয়ে দেয়, তাই এমন নামকরণ।
কী ভাবে কাজ করে ‘মা রোবট’?
জানা গিয়েছে, বিপিনের মেয়ে হাত নাড়াচাড়া করতে পারে না। রোবটটির মধ্যেই একটি থালা বসানো রয়েছে। তাতে খাবার রাখা থাকে। মেয়েটি তার সামনে মুখ নিয়ে গিয়ে জানায় সে কী খেতে চায়। তার পর সেই খাবার মুখে এগিয়ে দেয় রোবট।
সংবাদমাধ্যমে বিপিন জানিয়েছেন, তাঁর মেয়ের বয়স ১৪ বছর। খাওয়ার বিষয়ে সে সম্পূর্ণ ভাবে মায়ের উপর নির্ভরশীল ছিল। কিন্তু বছর দু’য়েক আগে শারীরিক অসুস্থতার কারণে শয্যাশায়ী হয়ে পড়েন বিপিনের স্ত্রী। মেয়েকে খাওয়াতে পারছেন না বলে শুয়ে শুয়েই তিনি কান্নাকাটি করতেন। বাড়িতে এসে মেয়েকে খাওয়াতে হত বিপিনকেই।
মেয়ে ও স্ত্রীর এই কষ্ট লাঘব করার জন্য যন্ত্র নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি শুরু করেন বিপিন। প্রথমে তিনি এমন কোনও রোবট খুঁজছিলেন যা মেয়েকে খাইয়ে দিতে পারবে। কিন্তু তেমন কিছু না পেয়ে নিজেই রোবট তৈরি করতে শুরু করেন তিনি। অনলাইনে যাবতীয় তথ্য ও পদ্ধতি খুঁজে নেন। বিপিন জানিয়েছেন, ‘মা রোবট’ বানাতে তাঁর সময় লেগেছে এক বছর। এই এক বছর সব কাজ ফেলে যন্ত্র নিয়েই বসেছিলেন তিনি। কখনও কখনও টানা ১২ ঘণ্টাও কাজ করেছেন। নিজের তৈরি এই রোবটটি বিশ্বের দরবারে পৌঁছে দিতে চান বিপিন কদম।