ফাইল চিত্র।
জামিয়া কাণ্ডের শুনানি এখানে নয়, প্রয়োজনে হাইকোর্টে যান। জামিয়া কাণ্ডে আবেদনকারীদের মঙ্গলবার এমনটাই জানাল সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে এ দিন এই মামলার শুনানি ছিল। বেঞ্চ তখন বলে, “ছাত্রদের উপর পুলিশি অভিযানের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট হাইকোর্টে জানালেই ভাল হয়। নিশ্চিত যে, হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতিরা এর যথাযথ উত্তর দেবেন।”
জামিয়া মিলিয়া এবং আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের উপর পুলিশি অভিযান নিয়ে সোমবার শীর্ষ আদালতে আবেদন করেছিলেন আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিং এবং কলিন গনসালভেস। প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদে তখন জানিয়েছিলেন, বিষয়টি নিয়ে শোনা হবে মঙ্গলবার। পাশাপাশি সতর্কবার্তাও দেন, দাঙ্গা বন্ধ না করলে মামলাটি শুনবে না আদালত। এ দিন মামলাটি উঠলে প্রধান বিচারপতি বলেন, “এটা আইন-শৃঙ্খলার সমস্যা। বাসগুলোই বা কী ভাবে পুড়ল? আপনারা কেন হাইকোর্টে আবেদন জানাচ্ছেন না?”
এই ঘটনায় এক সদস্যের তদন্ত কমিটির গঠনের জন্য আদালতে আবেদন জানান আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিং। আদালত তাঁর সেই আর্জিকে খারিজ করে দিয়ে বলে, “এটা সম্ভব নয়। কারণ ঘটনাগুলো বিভিন্ন রাজ্যে ঘটছে।” শান্তি ফিরিয়ে আনতে একটা রাস্তা বার করা উচিত আদালতের। জয়সিং-এর এই দাবির প্রেক্ষিতে আদালত বলে, “সংশ্লিষ্ট হাইকোর্টকে আমরা বলব। তারাই সঠিক সমাধানের পথ দেখাবে।”
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে দেশের নানা প্রান্তে অশান্তি চলছে। বিক্ষোভে সামিল হয়েছে দেশের প্রথম সারির শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোও। অশান্তি চলছে অসম, ত্রিপুরা-সহ উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে। পশ্চিমবঙ্গতেও এর আঁচ পড়ছে। ভাঙচুর চালিয়ে, আগুন জ্বালিয়ে প্রতিবাদ হচ্ছে। দেশের নানা প্রান্তের এই সব ঘটনা প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতি বলেন, “আলাদা আলাদা রাজ্যে এক একটি ঘটনা ঘটছে। বিভিন্ন প্রেক্ষিতে আলাদা আলাদা ঘটনা ঘটছে। কী ভাবে এগুলোকে এক সঙ্গে মেলানো সম্ভব, যেখানে ঘটনাগুলোই আলাদা?” এর পরই প্রধান বিচারপতি জানান, যে হেতু এক একটি রাজ্যে এক এক রকম ঘটনা ঘটছে, ফলে সেই সব রাজ্যগুলো থেকে প্রমাণ সংগ্রহের বিষয় রয়েছে। তাই আদালত মনে করে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের হাইকোর্টে আবেদন জানাক আবেদনকারীরা।
আরও পড়ুন: নির্ভয়ার ধর্ষক অক্ষয়ের সাজা পুনর্বিবেচনার আর্জি স্থগিত সুপ্রিম কোর্টে
আরও পড়ুন: রেলপথে বিচ্ছিন্ন উত্তরবঙ্গ, রাজ্যে আজও বাতিল বেশ কিছু ট্রেন
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে রবিবার উত্তাল হয়ে উঠেছিল দক্ষিণ দিল্লির নিউ ফ্রেন্ডস কলোনি। বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন জামিয়ার পড়ুয়ারা। সেই সময়ই পুলিশ ও পড়ুয়াদের মধ্যে গণ্ডগোল বাধে। তার পরই জামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অভিযান চালায় পুলিশ। অভিযোগ, ছাত্রদের বেধড়ক মারধর করে তারা। পুলিশের বিরুদ্ধে একই ঘটনার অভিযোগ উঠেছে উত্তরপ্রদেশের আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ে। পড়ুয়াদের উপর পুলিশের অভিযান নিয়ে উত্তাল হয়ে ওঠে গোটা দেশ। ছাত্রদের উপর কেন অভিযান চালাল পুলিশ তা নিয়ে সোমবার একটি মামলাও হয়।