প্রতীকী ছবি।
কলেজ চত্বরের মধ্যে দলিত সম্প্রদায়ের এক নাবালিকাকে গণধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার তিন কলেজ ছাত্র। নাবালিকার প্রেমিকের সামনে তাকে গণধর্ষণ করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। এই ঘটনাটি রবিবার রাজস্থানের জোধপুরে একটি কলেজ ক্যাম্পাসের ভিতর ঘটেছে। অভিযুক্তদের নাম সমন্দর সিংহ, ধর্মপাল সিংহ এবং ভাতম সিংহ।পুলিশ সূত্রে খবর, ওই নাবালিকা এবং তার প্রেমিক শনিবার আজমের থেকে পালিয়ে যায়। শনিবার রাত সাড়ে দশটা নাগাদ জোধপুর বাস স্ট্যান্ডে পৌঁছয় তারা। রাত কাটানোর জন্য একটি অতিথি নিবাসে যায় দু’জনে। কিন্তু নাবালিকার প্রতি ওই অতিথি নিবাসের কর্মী অভব্য আচরণ করেন বলে নাবালিকার দাবি। তার পর সেখান থেকে বেরিয়ে যায় দু’জনে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নাবালিকা এবং তার প্রেমিক যখন অতিথি নিবাসের বাইরে দাঁড়িয়েছিল, তখন তাদের সঙ্গে গিয়ে ভাব জমান সমন্দর, ধর্মপাল এবং ভাতম। থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা হয়ে যাবে সেই মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে নাবালিকা এবং তার প্রেমিককে জোধপুরের একটি কলেজের ক্যাম্পাসের ভিতরে নিয়ে যান তিন জন। কলেজ ক্যাম্পাসের ভিতর দিয়ে স্টেশনের উদ্দেশে যাচ্ছেন বলে জানান ওই তিন জন। তার পর দু’জনকে কলেজ ক্যাম্পাসের হকি খেলার মাঠের কাছে নিয়ে যান সমন্দরেরা। সেখানে গিয়ে তিন জন প্রথমে নাবালিকার প্রেমিককে মারধর করে বলে অভিযোগ। তার পর নাবালিকাকে গণধর্ষণ করে ঘটনাস্থল ছেড়ে পালিয়ে যান বলে নাবালিকার অভিযোগ।
ক্যাম্পাসে যাঁরা প্রাতর্ভ্রমণের উদ্দেশে বেড়িয়েছিলেন তাঁরা নাবালিকা এবং তার প্রেমিককে আহত অবস্থায় উদ্ধার করেন। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। থানায় অভিযোগ দায়ের হওয়ার পরেই তদন্তে নেমে পড়ে পুলিশ। ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তিন জন কলেজ ছাত্র পুলিশের হাতে ধরা পড়ে। নাবালিকার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করার অভিযোগে অতিথি নিবাসের কর্মীকেও গ্রেফতার করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, জোধপুরের গণেশপুরের একটি বাড়ি থেকে তিন জন কলেজ ছাত্র ধরা পড়ে। পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে তাঁরা পালানোর চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হয়। পালাতে গিয়ে তিন জনেই চোট পেয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। দু’জনের হাতে এবং এক জনের পায়ে গুরুতর আঘাত লেগেছে বলে জানা গিয়েছে। এই ঘটনা নিয়ে শোকপ্রকাশ করেছেন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌত। টুইট করে তিনি লিখেছেন, ‘‘আমাদের মেয়েরা নিরাপত্তা এবং সম্মানের যোগ্য। ধর্ষণের ঘটনা আসলে সভ্য সমাজের কলঙ্ক।’’ বিজেপি দলকে আঘাতও করেছেন অশোক।
টুইটে তিনি লেখেন, ‘‘তবে এই ধরণের ঘটনার নিন্দা করার পরিবর্তে বিজেপির নেতারা মিথ্যা তাঁদের রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য মিথ্যা অভিযোগ করেন। রাজস্থানের জোধপুর এবং মধ্যপ্রদেশের ডাটিয়া অঞ্চলে এমন একাধিক ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে যার নেপথ্যে রয়েছেন বিজেপি দলের সঙ্গে যুক্ত কর্মীরা। দলের কদর্য দিকটা এ ভাবেই ধরা পড়ছে। কিন্তু ধর্ষণের বিষয়ে বিজেপি সভাপতি জেপি নড্ডা একেবারেই নীরব। এতদ্বারা বোঝা যায় বিজেপি আসলে মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়ে কতটা চিন্তিত। রাজস্থান পুলিশ যে তৎপরতার সঙ্গে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করেছে তা সত্যিই প্রশংসনীয়। অভিযুক্ত যতই প্রভাবশালী হোক না কেন, রাজ্য সরকার এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করবে।’’