প্রতীকী ছবি।
অলিম্পিকে যতই মানরক্ষা করুন মেয়েরা, যত বড় করেই ‘বেটি বাঁচাও’ স্লোগান তুলুক সরকার- এখনও এ দেশে মেয়ের জন্ম দেওয়াকে জন্মদাত্রী মায়ের ‘অপরাধ’ হিসেবেই দেখেন বহু বহু মানুষ। আর এক বার তার প্রমাণ মিলল অন্ধ্রপ্রদেশে। এ ক্ষেত্রে জন্ম দেওয়াও হয়নি। শুধু জ্যোতিষী বলেছিলেন আবার কন্যাসন্তান আসছে। এই কথা শুনেই ক্রোধে অন্ধ অন্ধ্রপ্রদেশের নেল্লোরের এক ব্যক্তি। যথারীতি সমস্ত রাগ গিয়ে পড়ল স্ত্রী গিরিজার উপর। শুরু হয় মারধর। এক দিকে স্বামী, অন্য দিকে শাশুড়ি এবং ননদ। প্রতি দিন অত্যাচার চলতে থাকে। গিরিজার পেটে অ্যাসিড ঢেলে খুন করারও চেষ্টা করে শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। জোর করে ভ্রূণ হত্যারও চেষ্টা করা হয়। গিরিজার পেটের ৩০ শতাংশ পুড়ে যায় অ্যাসিডে। গুরুতর জখম অবস্থায় প্রতিবেশীরা তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করান।
গিরিজার একটি দেড় বছরের কন্যাসন্তান রয়েছে। দ্বিতীয় বার সন্তানসম্ভবা হন তিনি। ছেলে হবে না মেয়ে এই নিয়ে একটা ডামাডোল চলে পরিবারের মধ্যে। গিরিজার অভিযোগ, স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির লোকদের দাবি, পুত্র সন্তানই চাই। ছেলে হবে না মেয়ে হবে তা ‘জানতে’ এক জ্যোতিষীর কাছে হাজির হন গিরিজার স্বামী। জ্যোতিষী তাঁকে বলেন গিরীজার কন্যাসন্তানই আসতে চলেছে। এর পরই চরম অত্যাচার শুরু হয় গিরিজার উপর।
ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসার পর নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। পুলিশ গিরিজার শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে একটি খুনের চেষ্টার মামলা রুজু করেছে। গ্রেফতার করা হয়েছে গিরীজার স্বামী এবং শ্বশুরকে।
একটি সমীক্ষা বলছে, নেল্লোরে এক হাজার পুরুষ পিছু ৯৩৯ জন মহিলা। কন্যা ভ্রূণ হত্যা নিয়ে সচেতনতা প্রচার চালানো হলেও এ দেশের অনেক রাজ্যেই ছবিটা প্রায় বদলায়নি। এর জন্য নরেন্দ্র মোদী সরকার ‘বেটি পড়াও, বেটি বাঁচাও’ প্রকল্পও চালু করেছে। কিন্তু নেল্লোরের ঘটনা আবার প্রমাণ করল এর শিকড় অনেক গভীরে।
আরও খবর...