হানিপ্রীত ইনসান। ছবি: সংগৃহীত।
ইতিমধ্যেই তাঁকে দু’দফায় জেরা করে ফেলেছে হরিয়ানা পুলিশ। কিন্তু পুলিশের দাবি, কোনও ক্ষেত্রেই সদ্য গ্রেফতার হওয়া হানিপ্রীত ইনসানের কাছ থেকে সন্তোষজনক উত্তর মেলেনি। সত্য উদ্ঘাটনে এ বার হানিপ্রীতের নার্কো পরীক্ষার পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে হরিয়ানা পুলিশ। এ বিষয়ে আদালতের কাছে অনুমতি চাওয়া হবে বলে জানিয়েছে তারা।
আরও পড়ুন: ডোকলামে ফের রাস্তা গড়তে শুরু করেছে চিন
পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেফতার হওয়ার পর হানিপ্রীতকে রাতভর দু’দফায় জেরা করা হয়। পঞ্চকুলায় হিংসা ছড়ানো এবং আদালত চত্বর থেকে রাম রহিমকে নিয়ে পালানোর পরিকল্পনায় তাঁর ভূমিকা নিয়ে মোট ৪০টা প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করা হয় হানিপ্রীতকে। পুলিশের দাবি, এর মধ্যে ১৩টি প্রশ্নের উত্তর দিতে অস্বীকার করে সে। বাকি যে ২৭টি প্রশ্ন করা হয়েছিল, সেগুলোর উত্তর ছিল হয় নেতিবাচক অথবা বিভ্রান্তিমূলক। হানিপ্রীতের উত্তরে তাই সন্তুষ্ট না হয়েই নার্কো টেস্টের পরিকল্পনা করেছে পুলিশ।
তবে জেরার সময় দুটো প্রশ্নের সঠিক উত্তর বের করতে সক্ষম হয়েছেন পুলিশ আধিকারিকরা। পুলিশের দাবি, জেরায় হানিপ্রীত স্বীকার করেছে বেপাত্তা হয়ে গেলেও ডেরার সদস্যদের সঙ্গে রীতিমতো হোয়াট্সঅ্যাপের মাধ্যমে যোগাযোগ রাখতেন তিনি। আদিত্য ইনসানের সঙ্গেও তাঁর যোগাযোগ ছিল বলে স্বীকার করেছেন তিনি।
হানিপ্রীতকে প্রশ্ন করা হয়, ২৫ অগস্ট অর্থাত্ যে দিন পঞ্চকুলায় হিংসা ছড়িয়েছিল, সে দিন ডেরার গাড়িগুলোতে কেন প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র মজুত করা হয়েছিল? ডেরার গুন্ডাদের কে ৫ কোটি টাকা দিয়েছিল? শুধু তাই নয়, ৩৮ দিন নিখোঁজ থাকার সময় মোবাইলে যে সিমকার্ডগুলো ব্যবহার করতেন তিনি, সেগুলো কে তাঁকে জোগাড় করে দিয়েছিল? পুলিশের দাবি, এ প্রশ্নগুলিরই উত্তরই দেননি হানিপ্রীত। হানির দাবি, মোবাইল ফোন এবং সিম কার্ডগুলো হারিয়ে ফেলেছেন তিনি। পুলিশ মনে করছে, তাদের বিভ্রান্ত করতেই এ ধরনের গল্প ফেঁদেছে হানিপ্রীত। হানিপ্রীতের নামে ১৭টা সিমকার্ড ছিল। যার মধ্যে আন্তর্জাতিক সিমকার্ড ছিল তিনটি। পুলিশ বলছে, সিম কার্ডগুলো আদৌ তাঁর নামে, নাকি ডেরার অন্য কোনও সদস্যের নামে ছিল সে বিষয়টিও এখনও স্পষ্ট নয়।
আরও পড়ুন: সত্যি আর গোলাপে কাঁটা, টুইট লালুর
ধরা পড়ার পর থেকেই নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করেছেন রকস্টার ‘বাবা’র এই ‘পালিত কন্যা’। সেই সঙ্গে গুরমিত রাম রহিমকেও নির্দোষ দেখানোর চেষ্টা করেছেন তিনি। তাঁদের বাবা-মেয়ের সম্পর্ক নিয়েও মুখ খুলেছে হানিপ্রীত। সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানিয়েছিলেন, বাবা-মেয়ের পবিত্র সম্পর্ককে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে! আপাতত তাঁকে জেরা করার জন্য ৬ দিনের হেফাজত পেয়েছে পুলিশ। পঞ্চকুলার পুলিশ কমিশনার এ এস চাওলা জানিয়েছেন, হেফাজতের সময়সীমা বাড়াতে আদালতের কাছে আবেদন করা হবে।
গত ৩ অক্টোবর চণ্ডীগ়ড় জাতীয় সড়কের কাছ থেকে হানিপ্রীতকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ৩৮ দিন ধরে বেপাত্তা ছিলেন তিনি। তাঁর বিরুদ্ধে হরিয়ানা পুলিশ লুকআউট নোটিসও জারি করে। কোথায় হানিপ্রীত তা নিয়ে একটা ধোঁয়াশা তৈরি হয়। তার গতিবিধি নিয়ে বিভিন্ন মাধ্যম থেকে নানা রকম খবর আসতে থাকে। কখনও তাঁর নেপালে পালিয়ে যাওয়ার খবর রটেছে, কখনও শোনা গিয়েছে, বিদেশে নয়, দেশেই গা ঢাকা দিয়ে আছে গুরমিত-কন্যা।