আজ মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর মোদীর ইস্তফা
Election Results 2019

বিগ ফোরে কারা, বাংলা থেকে কে কে, কত জন মন্ত্রী! নয়া মন্ত্রিসভা নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে

প্রোটেম স্পিকার নির্বাচিত হতে চলেছেন বরেলি থেকে নির্বাচিত প্রবীণ সাংসদ সন্তোষ কুমার গাঙ্গোয়ার। তিনিই নবনির্বাচিত সাংসদদের শপথবাক্য পাঠ করান।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০১৯ ১৮:১৭
Share:

বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল ছবি

ভোটের ফলে স্পষ্ট জনমত। এ বার সরকার গঠনের পালা। সেই লক্ষ্যেই আজ মন্ত্রিসভার বৈঠক করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আলোচনা হয়েছে শপথগ্রহণের দিনক্ষণ নিয়েও। তার মধ্যেই ভাসছে মন্ত্রিসভার জল্পনাও। স্বরাষ্ট্র, অর্থ, প্রতিরক্ষা, বিদেশ— এই ‘বিগ-ফোর’ এ কারা থাকবেন, সে সব নিয়ে রাজনৈতিক শিবিরে শুরু হয়েছে গুঞ্জন। বিজেপির অন্দরের খবর, অমিত শাহকে সংগঠনের পাশাপাশি মন্ত্রিত্বে আনা হতে পারে। অসুস্থতার জন্য মন্ত্রিসভার বাইরে রাখা হতে পারে অরুণ জেটলিকে। পশ্চিমবঙ্গে ব্যাপক সাফল্যের পর কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় এ রাজ্যের উল্লেখযোগ্য প্রতিনিধিত্ব থাকার সম্ভাবনা প্রবল।

Advertisement

শনিবারের এই বৈঠকের পর থেকেই কার্যত শুরু হয়ে গেল সপ্তদশ লোকসভা গঠনের প্রোটোকল বা রীতিনীতি। সব মন্ত্রী এবং মন্ত্রিসভার নেতা হিসেবে ইস্তফা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সেই পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দকে পাঠিয়ে দেবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পাশাপাশি রাষ্ট্রপতিকে ষোড়শ লোকসভা ভেঙে দেওয়ার সুপারিশ করবেন। রাষ্ট্রপতি লোকসভা ভেঙে দেওয়ার পরই নবনির্বাচিত সাংসদদের তালিকা রাষ্ট্রপতিকে তুলে দেবে নির্বাচন কমিশন। তার পর সপ্তদশ লোকসভা গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হবে। প্রধানমন্ত্রীর শপথগ্রহণের দিনক্ষণ জানতে চাইবেন রাষ্ট্রপতি।

প্রোটেম স্পিকার নির্বাচিত হতে চলেছেন উত্তরপ্রদেশের বরেলি থেকে নির্বাচিত প্রবীণ সাংসদ সন্তোষ কুমার গাঙ্গোয়ার। তিনিই নবনির্বাচিত সাংসদদের শপথবাক্য পাঠ করান। অন্য দিকে স্পিকার নির্বাচন নিয়েও জল্পনা রয়েছে। কারণ এ বার সুমিত্রা মহাজনকে টিকিট দেয়নি বিজেপি। ফলে সপ্তদশ লোকসভার স্পিকার নিয়েও শুরু হয়েছে ভাবনাচিন্তা।

Advertisement

শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান নিয়েও এ দিনের বৈঠকে আলোচনা হয়েছে বলে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব সূত্রে খবর। ২০১৪ সালে সার্কভুক্ত সব দেশের রাষ্ট্রপ্রধানকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। শপথগ্রহণের দিনক্ষণ ঠিক করার পাশাপশি এ বার কাকে কাকে আমন্ত্রণ জানানো হবে, এ দিনের বৈঠকে তার একটা রূপরেখা নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। সেই মতো আমন্ত্রণ জানানোর প্রক্রিয়াও শীঘ্রই শুরু হবে।

আরও পড়ুন: বাবার কাছে হেরে গেলাম, মন্তব্যের পরেই তৃণমূল থেকে সাসপেন্ড শুভ্রাংশু

২০১৪-র চেয়েও বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ফের সরকার গঠন করছে এনডিএ তথা বিজেপি। ফের প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে বসছেন নরেন্দ্র মোদী। এই পর্যন্ত স্পষ্ট। মোদী-শাহ জুটির এই বিপুল সাফল্যের পর মন্ত্রিসভা কি ঢেলে সাজবে, নাকি পুরনোদের উপরেই আস্থা রাখবেন, তা নিয়ে বিজেপির অভ্যন্তরে এবং রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মধ্যে গুঞ্জন চরমে। মোদী-অমিত শাহ জুটির ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে খবর, এ বার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে অমিত শাহকে। বিগ ফোর’-এর বাকি তিন মন্ত্রক—অর্থ, বিদেশ এবং প্রতিরক্ষা নিয়েও জোর গুঞ্জন।

অরুণ জেটলি দীর্ঘদিন ধরে কিডনি সংক্রান্ত রোগে ভুগছেন। একাধিক বার বিদেশে গিয়েও চিকিৎসা করিয়ে এসেছেন। ফলে এ বার তাঁকে মন্ত্রিসভার বাইরে রাখার সম্ভাবনা জোরদার। তা হলে অর্থমন্ত্রকের দায়িত্ব কে পেতে পারেন? উঠে আসছে পীযূষ গয়ালের নাম। অরুণ জেটলি বিদেশে থাকার সময় তিনিই অর্থমন্ত্রক সামলেছেন। এমনকি, ভোটের আগে অন্তর্বর্তী বাজেটও পেশ করেছেন। তা ছাড়া ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট। ফলে অরুণ জেটলি দায়িত্ব নিতে না চাইলে বা দলের সিদ্ধান্তে তাঁকে বাইরে রাখা হলে অর্থের দৌড়ে এগিয়ে মহারাষ্ট্র থেকে নির্বাচিত রাজ্যসভার সাংসদ গয়াল।

আরও পডু়ন: জয়ী-পরাজিত সব প্রার্থীকে নিয়ে কাল বৈঠকে মমতা, মুখ খুলতে পারেন সংবাদমাধ্যমেও

বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের কাজে সন্তুষ্ট প্রধানমন্ত্রী। মনোহর পর্রীকর প্রতিরক্ষা মন্ত্রক ছেড়ে গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে দায়িত্ব সামলাচ্ছেন নির্মলা সীতারামন। তাঁর পারফরম্যান্সও সন্তোষজনক। ফলে এই দুই দফতর পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। সেক্ষেত্রে অবশ্য রাজনাথ সিংহকে গুরুত্বপূর্ণ কোনও মন্ত্রক দেওয়া নিয়ে চিন্তা রয়েছে।

বিরোধী শিবিরে সবচেয়ে বড় ইন্দ্রপতন অমেঠীতে। প্রায় চার দশক ধরে উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেস তথা গাঁধী পরিবারের দুর্গ অমেঠীতে এ বার জিতেছেন স্মৃতি ইরানি। তাও আবার বিরোধী শিবিরের প্রধান মুখ তথা কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধীকে হারিয়ে। তার পুরস্কার হিসেবে বস্ত্র মন্ত্রক থেকে তাঁর পদোন্নতি প্রায় নিশ্চিত বলেই বিজেপি সূত্রে খবর।

দেশ জোড়া সাফল্যের মধ্যেই পশ্চিমবঙ্গে বিরাট সাফল্য পেয়েছে বিজেপি। ২ সাংসদ থেকে এ বার ১৮তে পৌঁছে গিয়েছে পদ্ম। আগের বার দার্জিলিংয়ের সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া এবং আসানসোলের সাংসদ বাবুল সুপ্রিয় দু’জনই কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছিলেন। এ বার সেই সংখ্যাটা যে বাড়বে তা প্রায় নিশ্চিত। শুধু কত জন বাড়বে এবং কারা শেষ পর্যন্ত মন্ত্রিসভায় জায়গা পাবেন, তা নিয়েই জল্পনা তুঙ্গে উঠেছে বিজেপির কেন্দ্রীয় এবং বাংলার নেতৃত্বের মধ্যেই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement