‘এক জন ধর্ষিতাকে কী ভাবে হাসির খোরাক করতে পারেন সলমন খান?’ ‘কী ভাবে ধর্ষণের মতো বিষয়কে হাল্কা চালে নিতে পারেন সলমন?’ প্রশ্ন তুললেন হরিয়ানার হিসারের এক গণধর্ষিতা রেশমা (নাম পরিবর্তিত)। শুধুমাত্র প্রশ্ন তুলেই থেমে থাকেননি তিনি। বলিউড সুপারস্টারের বিরুদ্ধে ১০ কোটি টাকার মামলাও ঠুকেছেন ওই গণধর্ষিতা। একই সঙ্গে জনসমক্ষে সলমনের ক্ষমার দাবি করেছেন তিনি। শনিবার সলমনকে এ নিয়ে আইনি নোটিসও পাঠিয়েছেন রেশমা।
তাঁর আগামী ছবি ‘সুলতান’-এ শুটিংয়ের কষ্টকর অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে গত সপ্তাহেই বেফাঁস মন্তব্য করেন সলমন খান। ছবিতে কুস্তি অনুশীলনের একটি দৃশ্যে শুটিংয়ের পর ‘নিজেকে ধর্ষিতার মতো’ মনে হয়েছিল বলে মন্তব্য করেন তিনি। এই কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যের পর বিতর্কের ঝড় ওঠে। নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকির মতো হাতেগোনা কয়েক জন বলি-সেলিব্রিটি সলমনের সপক্ষে মুখ খুললেও বিভিন্ন মহল নিন্দায় সরব হয়। সলমনের বাবা তথা এক কালের জনপ্রিয় চিত্রনাট্যকার সেলিম খান ছেলের হয়ে ক্ষমা চাইলেও বিতর্ক থিতু হয়নি। সলমনকে ক্ষমা চাইতে হবে বলে জানিয়ে দেয় জাতীয় মহিলা কমিশন। এর আগেও সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি খোলা চিঠিতে এক সময় গণধর্ষণের শিকার ও বর্তমানে সমাজকর্মী সুনীতা কৃষ্ণণ এ নিয়ে সলমনকে তুলোধোনা করেন।
বছর চারেক আগে অপহরণ করে রেশমাকে গণধর্ষণ করে ১০ জন দুষ্কৃতী। নির্যাতিতার আত্মীয়দের দাবি, ঘটনার ধাক্কা সামলাতে না পেরে আত্মহত্যা করেন রেশমার বাবা। ওই দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে আইনি সহায়তা নেন রেশমা। মামলার রায়ে অভিযুক্তদের মধ্যে চার জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দেয় আদালত। আদালতের রায়ে সম্তুষ্ট হননি রেশমা। পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্টে ওই ১০ জনের ফাঁসির সাজার আবেদন করেছেন তিনি।
পশ্চিম মুম্বইয়ে সলমনের বান্দ্রার বাড়িতে পাঠানো আইনি নোটিসে রেশমার আইনজীবী দাবি করেন, সলমনের খানের মন্তব্যে মানসিক ভাবে তীব্র আঘাত পেয়েছেন রেশমা। এমনকী, সেই মানসিক ক্ষত সারাতে তাঁকে মনোবিদের কাছে যেতে হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
একটি এনজিও-র হয়ে ধর্ষণের শিকার মহিলাদের পুনর্বাসনের কাজ করছেন রেশমা। সলমন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “সমাজের বিশিষ্টদের এক জন হয়েও কী ভাবে এ ধরনের কথা বলতে পারেন সলমন? ধর্ষণের শিকার মহিলাদের মানসিক পীড়া আমরা সকলেই অনুভব করতে পারি। আমি নিজে আমার সব কিছু হারিয়েছি, আমার বাবাকে হারিয়েছি। এত কিছুর পরেও এখনও পর্যন্ত আমার মনের ক্ষত সারেনি।”
সনমনের বিরুদ্ধে আইনি নোটিশ পাঠানোর নিয়ে রেশমার যুক্তি, “মহিলাদের যাঁরা ভোগ্যপণ্য হিসেবে মনে করে তাঁদের মতোই মতোই আচরণ করেছেন সলমন খান। শুধুমাত্র আমি নই, আমাদের মতো সব নির্যাতিতাই তাঁর মন্তব্যে অস্বস্তিতে পড়েছেন। এই কারণেই সলমনের বিরুদ্ধে আইনের দ্বারস্থ হয়েছি আমি।” এই আচরণের জন্য যাতে সলমনের উপযুক্ত শাস্তি হয় সে দাবিতে তিনি অনড় থাকবেন বলে জানিয়েছেন রেশমা।
আরও পড়ুন