অনুপম খের, আদুর গোপালকৃষ্ণন, ঋষি কপূর, রণবীর কপূর, কিরণ রাও তো ছিলেনই। এ বার যুক্ত হল আরও কয়েকটি নাম। পুণের ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়ার (এফটিআইআই) গভর্নিং কাউন্সিলের চেয়ারম্যান পদে বিজেপি ঘনিষ্ঠ অভিনেতা গজেন্দ্র চৌহানকে চাইছেন না বলিউডের অনেকেই। তালিকায় যেমন অমল পালেকরের মতো অভিজ্ঞ অভিনেতা রয়েছেন। তেমনই রয়েছেন রাজকুমার রাওয়ের মতো তরুণ প্রজন্মের মুখও। আজই আবার চৌহানকে এই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন পরিচালক সুধীর মিশ্র।
২৯ দিন ধরে কেন্দ্রীয় সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আসছেন এফটিআইআই-এর ছাত্র-ছাত্রীরা। চলছে ক্লাস বয়কটও। তাঁদের বক্তব্য, সম্পূর্ণ অযোগ্য এই অভিনেতাকে তাঁর পদ থেকে সরানো না হলে, আন্দোলন চলবে। এই অবস্থায় দু’দিন আগেই মধ্যস্থতা করতে এগিয়ে এসেছিলেন বিজেপি নেতা তথা অভিনেতা শত্রুঘ্ন সিন্হা। কিন্তু তাঁর প্রস্তাবে কার্যত আমল দেননি গজেন্দ্র। ঠিক যেমন পাত্তা পায়নি রণবীর কপূর, অনুপম খের বা ঋষি কপূরের আর্তি। সকলেরই বক্তব্য ছিল, ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে বাঁচানোর জন্যই সরে দাঁড়ানো উচিত গজেন্দ্রের। কিন্তু মহাভারতের ‘যুধিষ্ঠিরের’ সে সব দিকে ভ্রূক্ষেপ নেই। গজেন্দ্র কালও বলেছিলেন, আজ আবার বলেছেন যে কেন্দ্রীয় সরকার তাঁকে এই পদে বহাল করেছে। সুতরাং সরকার তাঁকে না সরালে কোনও মতেই তিনি চেয়ারম্যান পদ থেকে সরছেন না।
একদা এফটিআইআই-এর ছাত্র, জাতীয় পুরস্কারজয়ী অভিনেতা রাজকুমার রাও বিষয়টি নিয়ে টুইটারে সরব হয়েছেন। লিখেছেন, ‘‘এফটিআইআইকে একটা সুরক্ষিত হাতে রাখা দরকার। এমন কাউকে ছাত্র-ছাত্রীদের দরকার, যাঁকে বিশ্বাস করা যায়। এটা তাঁদের ভবিষ্যতের প্রশ্ন।’’ এক সুর প্রবীণ অভিনেতা তথা পরিচালক অমল পালেকরেরও। গজেন্দ্রর নিয়োগ নিয়ে তিনি তো স্পষ্টই বলছেন, ‘‘এটা স্বীকার করতেই হবে যে এটা একটা ভুল। ওঁর কোনও যোগ্যতাই নেই। আমি চৌহানের জায়গায় থাকলে নিজে থেকেই সরে যেতাম।’’ প্রবীণ পরিচালক সুধীর মিশ্র তো আরও এক ধাপ এগিয়ে বলেছেন, ‘‘চৌহান তো কোনও ক্যান্টিনের দায়িত্ব নেননি। পড়ুয়াদের ওঁকে এমন ভাবে পরিচালিত করতে হবে যাতে ভারতীয় সিনেমা একটা অন্য দিশা পেতে পারে।’’
তবে এত সমালোচনার পরেও গজেন্দ্র অনড়। ঋষি কপূর আর অনুপম খেরকে নিয়ে বিরূপ মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চাইবেন কি? গজেন্দ্র আজ পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি ওই অভিনেতাদের নিয়ে কোনও কটূ কথা বলেননি। ফলে ক্ষমা চাওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই। উল্টে এফটিআইআইয়ের পড়ুয়ারা এখনও কেন ক্লাস বয়কট করে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন, তা নিয়েই আজ বিস্ময় প্রকাশ করেছেন প্রতিষ্ঠানের নব নিযুক্ত চেয়ারম্যান।