গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
বিরোধী পক্ষের সাংসদদের হইচই, বাদানুবাদের মধ্যেই নতুন তিন তালাক বিল পেশ করা হল লোকসভায়। আগের বিলটি রাজ্যসভায় আটকে থাকায়, ষষ্ঠদশ লোকসভা ভেঙে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সেটি বাতিল হয়ে যায়। সেই বিলই ফের পেশ করা হল শুক্রবার। বিরোধীদের অভিযোগ, ‘এটি পক্ষপাতমূলক বিল।’’
বিলটি পাশ করাতে গত ফেব্রুয়ারিতে এনডিএ-র তরফে একটি অর্ডিন্যান্স ইস্যু করা হয়। কিন্তু সেটি রাজ্যসভায় পাশ করানো যায়নি। রাজ্যসভায় বিরোধীরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ। বিরোধীরা চেয়েছিলেন, পরীক্ষার জন্য একটি কমিটি গড়ে তার কাছে বিলটি পাঠানো হোক। কিন্তু সরকার পক্ষ সেই দাবি খারিজ করে দেয়। নতুন বিলটি সেই অর্ডিন্যান্সেরই প্রতিরূপ। গত ডিসেম্বরে লোকসভায় বিলটি পাশ হয়েছিল। তাতে বলা হয়েছিল, কোনও মুসলিম ব্যক্তি তাঁর স্ত্রীকে তাৎক্ষণিক ভাবে ‘তালাক' শব্দটি উচ্চারণ করে বিবাহ বিচ্ছেদ দিলে তাঁর তিন বছরের কারাদণ্ড হবে।
এ দিন বিল নিয়ে আলোচনা শুরু হলে কংগ্রেস নেতা শশী তারুর বলেন, ‘‘সরকারের উচিত একটা অভিন্ন আইন প্রণয়ন করা। তা যেন শুধুই মুসলিমদের লক্ষ্য করে না হয়। অন্য ধর্মের মানুষও তাঁদের স্ত্রীদের পরিত্যাগ করেন। এই বিলে কোনও পদ্ধতিগত সুরক্ষার ব্যবস্থা নেই। কোনও স্থায়ী কমিটির কাছে বিলটিকে পাঠানো উচিত। এটা একটা পক্ষপাতমূলক বিল।''
কংগ্রেসের বক্তব্য, গার্হস্থ্য অশান্তিতে এই ভাবে শাস্তিদানের বিধান দেওয়া যায় না। তাদের দাবি, এতে মুসলিমদের চক্রান্তের শিকার হতে হবে।
আরও পড়ুন- তিন তালাক ফৌজদারি অপরাধ, অর্ডিন্যান্স জারি করল কেন্দ্র
আরও পড়ুন- কর্নাটকে অন্তর্বর্তী নির্বাচনের কথা বলে ঢোঁক গিললেন দেবেগৌড়া
এনডিএ-র শরিক নীতীশ কুমারের সংযুক্ত জনতা দল, জানিয়েছে, তারা তিন তালাক বিলকে সমর্থন করবে না। জগন্মোহন রেড্ডির ওয়াইএসআর কংগ্রেস ও নবীন পট্টনায়েকের বিজু জনতা দলও জানিয়েছে তারা বিলটিকে সমর্থন করবে না।
জবাবে সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, এই বিল মেয়েদের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা থেকে বাঁচাবে। তাঁদের সমানাধিকার দেবে। এই প্রস্তাবিত আইন লিঙ্গসাম্য প্রতিষ্ঠার লক্ষেই। এই বিল সরকারের ‘সব কা সাথ, সব কা বিকাশ, সব কা বিশ্বাস', দর্শনেরই অংশ।
সপ্তদশ লোকসভার প্রথম অধিবেশনে সরকার ১০টি অর্ডিন্যান্সকে আইনে রূপান্তরিত করতে চায়। যার অন্যতম ‘তিন তালাক'। এই অর্ডিন্যান্সগুলিকে অধিবেশন শুরুর ৪৫ দিনের মধ্যে আইনে রূপান্তরিত করতে হবে। না হলে সেগুলি বাতিল হয়ে যাবে।