জম্মু ও কাশ্মীরে জঙ্গিদের সঙ্গে সেনা-সংঘর্ষ। ছবি: পিটিআই।
রবিবার সকাল থেকে উত্তপ্ত কাশ্মীর। দু’টি পৃথক জায়গায় সেনা অভিযান চলছে। জঙ্গিদের সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে জখম হয়েছেন তিন জন জওয়ান। তাঁদের উদ্ধার করা হয়েছে। বেশ কয়েক জন জঙ্গি এলাকায় আটকে রয়েছে বলে খবর। তাদের কাছে পৌঁছনোর চেষ্টা করছেন নিরাপত্তা আধিকারিকেরা।
কিস্তওয়ারের জঙ্গলাকীর্ণ চাস এলাকায় রবিবার সকাল সকাল হানা দেন ভারতীয় সেনা এবং ১১ রাষ্ট্রীয় রাইফেল্স বাহিনীর সদস্যেরা। গত ৮ নভেম্বর এই এলাকাতেই দু’জন গ্রামসুরক্ষা জওয়ানকে (ভিলেজ ডিফেন্স গার্ড) খুন করা হয়েছিল। গোপন সূত্রে সেনাবাহিনী জানতে পারে, ওই খুনে অভিযুক্ত জঙ্গিরা এই জঙ্গলে লুকিয়ে আছে। তার পরেই রবিবার সকালে অতর্কিতে সেখানে অভিযান চালানো হয়। জঙ্গিদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলির লড়াই শুরু হয়েছে সকাল থেকেই। এনকাউন্টারের ফলে ওই এলাকায় জঙ্গিরা আটকে পড়েছে বলে খবর। সেখানেই জঙ্গিদের গুলিতে তিন জওয়ান জখম হয়।
অন্য দিকে, শ্রীনগরের হারওয়ান এলাকাতেও পৃথক সংঘর্ষ চলছে। সকাল ৯টা থেকে সেখানে গুলির লড়াই শুরু হয়েছে। ওই এলাকায় কয়েক জন জঙ্গি গা ঢাকা দিয়ে আছে বলে গোপন সূত্রে জানতে পেরেছিল নিরাপত্তা বাহিনী। তার পরেই অভিযান চালানো হয়। সেখানে কোনও হতাহতের খবর এখনও পাওয়া যায়নি। তবে গুলির লড়াইয়ে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে এলাকা।
গত কয়েক দিন ধরেই সেনা-জঙ্গি সংঘর্ষ উত্তপ্ত কাশ্মীর। শনিবার পুলিশ এবং নিরাপত্তা বাহিনীর যৌথ অভিযানে বারামুলায় এক জঙ্গি নিহত হয়েছে। আরও জঙ্গির খোঁজে তল্লাশি অভিযান চলেছে রাত পর্যন্ত। সন্ধ্যায় বারামুলার সোপোরে এলাকায় হানা দিয়েছিল জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ এবং নিরাপত্তা বাহিনীর যৌথ দল। গোপন সূত্রে তারা খবর পেয়েছিল, ওই এলাকায় জঙ্গিদের একটি দল লুকিয়ে রয়েছে। রাতে জঙ্গিদের সঙ্গে বেশ কিছু ক্ষণ গুলির লড়াই চলেছে। তাদের গুলিতে এক জঙ্গির মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে কাশ্মীর পুলিশ।
কাশ্মীর জ়োন পুলিশ সমাজমাধ্যমে এই অভিযান সম্পর্কে লিখেছে, ‘‘বারামুলার রামপোরা সোপোরে এলাকায় জঙ্গিরা ঘাঁটি গেড়েছে বলে আমাদের কাছে খবর এসেছিল। তার ভিত্তিতে শনিবার রাতেই পুলিশ এবং সেনাবাহিনী যৌথ অভিযান চালায় ওই এলাকায়। জঙ্গিদের খোঁজে তল্লাশি চালানো হয়। তাদের সঙ্গে গুলির লড়াইও হয় কিছু ক্ষণ। এক জঙ্গির মৃত্যু হয়েছে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে।’’
ভারতীয় সেনার তরফে জানানো হয়েছে, সোপোরে এলাকায় দায়িত্বপ্রাপ্ত জওয়ানেরা টহলদারির সময়ে কিছু সন্দেহজনক কার্যক্রম দেখতে পেয়েছিলেন। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে তার পরেই ওই এলাকায় হানা দেয় যৌথ বাহিনী। জওয়ানদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে শুরু করেছিল জঙ্গিরা। কিন্তু সেনাবাহিনীর তরফে কারও আঘাত লাগেনি। এক জঙ্গির মৃত্যু হয়েছে। বাকি জঙ্গিদের খোঁজে ওই এলাকায় এখনও চলছে তল্লাশি। আরও কয়েক জন সেখানে লুকিয়ে থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। তার আগে শুক্রবারও শিরোনামে উঠে এসেছিল এই বারামুলা। সেখানে পৃথক একটি এনকাউন্টারে আরও দুই জঙ্গি নিহত হয়। তারও আগে গত ২ নভেম্বরের অভিযানে লস্কর-ই-তইবার কমান্ডার উসমান লস্করি-সহ তিন জঙ্গি নিহত হয়েছিল। ওই অভিযানে সিআরপিএফের দুই জওয়ানও জখম হয়েছিলেন।