আর এস দুলত এবং আসাদ দুরানি। ফাইল চিত্র।
এক সঙ্গে বই লিখেছিলেন ভারতীয় গুপ্তচর সংস্থা ‘র’ এবং পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই-এর দুই প্রাক্তন প্রধান। নরেন্দ্র মোদীর জমানাতেই। ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের কয়েক মাস আগে।
কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদ, হাফিজ সইদ, বালুচিস্তান এবং কুলভূষণ যাদব প্রসঙ্গ এমনকি, পাকিস্তানের মাটিতে ওসামা বিন লাদেনের আত্মগোপন নিয়েও বেশ কিছু ‘বিতর্কিত’ আলোচনা ছিল বইটিতে। বুধবার কেন্দ্রের নয়া নির্দেশিকা বলবৎ হওয়ায় ভবিষ্যতে জাতীয় নিরাপত্তার কাজে জড়িত প্রাক্তনীদের এমন বই লেখা কঠিন হয়ে পড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে। কারণ, সংশ্লিষ্ট দফতরের প্রধানের অনুমতি ব্যতিরেকে ওই ধরনের কোনও লেখালেখি করতে পারবেন না জাতীয় নিরাপত্তার কাজে এককালে দায়িত্বপ্রাপ্তেরা।
‘র’-এর প্রাক্তন প্রধান অমরজিৎ সিংহ দুলাতের বিরুদ্ধে ভারত সরকার কোনও পদক্ষেপ করেনি। কিন্তু ‘র’ প্রধানের সঙ্গে মিলে বই লেখার জন্য সামরিক আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে সে সময় পাক সেনা কর্তৃপক্ষ অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল আসাদ দুরানিকে নোটিস পাঠিয়েছিল। পাকিস্তান পার্লামেন্টে ‘বিশ্বাসঘাতক’ দুরানির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিরও দাবি উঠেছিল।
১৯৯৯-২০০০ সাল পর্যন্ত ‘র’-এর প্রধান দুলত এবং ১৯৯০-’৯২ পর্যন্ত আইএসআই প্রধান পদে থাকা দুরানির যৌথ ভাবে লেখা বইটির নাম ‘দ্য স্পাই ক্রনিকল্স র, আইএসআই অ্যান্ড দ্য ইলিউশন অব পিস’। দুলত ‘র’-এ যোগদানের আগে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা (আইবি)-তে কর্মরত ছিলেন। অটলবিহারী বাজপেয়ীর আমলে সেই অভিজ্ঞতা নিয়েও একটি বই লিখেছিলেন তিনি। বই লিখেছিলেন প্রাক্তন আইবি প্রধান এম কে নারায়ণনও। তবে ইউপিএ জমানার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা এবং পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল পদে থাকা নারায়ণনের বইটি মূলত চিনের উত্থানের ফলে ভারতের সুরক্ষা-সংকটজনিত দৃষ্টিকোণ থেকে লেখা।
বিতর্ক তৈরি হয়েছিল আইবি-র প্রাক্তন জয়েন্ট ডিরেক্টর মলয়কৃষ্ণ ধরের লেখা ‘ওপেন সিক্রেট: ইন্ডিয়াজ ইনটেলিজেন্স সিক্রেটস আনভেল্ড’ বইটি ঘিরেও। ২০০৫ সালে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ জমানাতেই মলয় তাঁর বইয়ে লিখেছিলেন, জরুরি অবস্থার সময় রাজনৈতিক বিরোধীদের উপর তো বটেই, পুত্রবধূ মেনকা গাঁধীর উপর নজরদারির জন্যেও আইবি-কে ব্যবহার করেছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা। কেন্দ্রের নতুন নিয়মের ফলে আর তার অবকাশ থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে না।