মমতার সঙ্গে ফেলেইরো। নিজস্ব চিত্র।
তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়ে আজ গোয়ায় ফিরলেন সেখানকার ভূমিপুত্র রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লুইজ়িনহো ফেলেরো। পানাজিতে তিনি সাংবাদিক বৈঠক করলেন অদূরবর্তী সোফায় বসা পশ্চিমবঙ্গের চার তৃণমূল নেতাকে সঙ্গে নিয়ে। স্থানীয় বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই বিজেপি-র দিকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন। তৃণমূলই এখন একমাত্র রাজনৈতিক দল, যারা দেশের পূর্ব উপকূল এবং পশ্চিম উপকূলের মধ্যে সমন্বয় করে মোদী-অমিত শাহের বিরুদ্ধে লড়তে পারে।” একইসঙ্গে গোয়ার নব্য তৃণমূল নেতা স্পষ্ট জানিয়েছেন, রাহুল গাঁধীর বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে কটূক্তি তিনি করবেন না।
তাৎপর্যপূর্ণভাবে আজকের সম্মেলনে আগাগোড়াই সামান্য দূরত্ব বজায় রাখলেন তৃণমূল কংগ্রেসের ডেরেক ও ব্রায়েন, সুখেন্দুশেখর রায়, প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মনোজ তিওয়ারি। গোয়ায় স্থানীয় বিষয় এবং স্থানীয় নেতাদেরই সামনে রাখার কৌশল নিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমন কোনও বার্তা তিনি দিতে চান না, যাতে মনে হয় গোয়ায় তৃণমূল কলকাতার হাই কমান্ডের কথায় উঠছে বসছে। আর তাই সাংবাদিক বৈঠকে ডেরেক বা সুখেন্দুশেখর রায় কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী একটি সংবাদমাধ্যমকে জানান, তাঁকে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর (পিকে)। তাঁর কথায়, “আপনারা বিশ্বাস করুন বা না করুন, আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অথবা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কখনও দেখা করিনি। তাঁরা খুবই বড় মাপের নেতা। শুধু তৃণমূলেরই নয়, দেশেরও। আমার সঙ্গে আইপ্যাক-এর প্রশান্ত কিশোরের সাক্ষাৎ ঘটে। সিদ্ধান্ত নেওয়ার (তৃণমূলে যোগ দেওয়ার) ঠিক আগে ওঁর সঙ্গে আমার আলোচনা হয়।”
রাজনৈতিক শিবিরে চর্চা, পি কে একইসঙ্গে একটি রাজ্যে কংগ্রেসকে শক্তিশালী করার জন্য কৌশল রচনা করছেন, আবার অন্য রাজ্যে কংগ্রসকে পথে বসাচ্ছেন! নিজে কংগ্রেসে যোগ দেওয়া এবং এআইসিসি-র সাধারণ সম্পাদক পদ পাওয়ার জন্য তিনি দেখা করছেন রাহুল এবং সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে। পঞ্জাবে অমরেন্দ্র সিংহের পরামর্শদাতার কাজ ছেড়ে তাঁকেই সরানোর জন্য পরামর্শ দিয়েছেন কংগ্রেস নেতৃত্বকে। আবার গোয়ায় কংগ্রেসকে ডুবিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার জন্য লুইজ়িনহো এবং তার দলবদলকে পরামর্শ দিচ্ছেন! প্রশ্ন উঠছে সার্বিক ভাবে ২০২৪ লোকসভা ভোটের আগে তাঁর কাজকর্মের অভিমুখ নিয়ে।
সুখেন্দুশেখর রায় পরে বলেন, “গোয়ায় বিজেপি-কে হারানোর যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে যথেষ্ট সাড়া পড়তেও দেখছি। ৪০টি আসনেই তৃণমূল লড়বে, কারও সঙ্গে জোট গড়া হবে না এটা আমাদের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক আগেই জানিয়ে দিয়েছেন।” আগামী ৭ তারিখ গোয়ায় দলীয় কার্যালয়ের উদ্বোধন করবেন লুইজ়িনহো। আজও তিনি কংগ্রেসের ‘চার পরিবারের’ (তৃণমূল কংগ্রেস, ইন্দিরা কংগ্রেস, এনসিপি এবং জগন কংগ্রেস) প্রসঙ্গ তুলে বলেছেন, কংগ্রেসের বৃহত্তর আদর্শ এবং আবহাওয়ার মধ্যেই রয়েছেন তিনি।