পাঁচটি মানুষখেকো নেকড়েকে ইতিমধ্যে ধরেছে বন দফতর। —ফাইল চিত্র।
উত্তরপ্রদেশের বহরাইচে মানুষখেকো নেকড়ের আতঙ্ক এখনও কমেনি। ছ’টি নেকড়ে প্রবেশ করেছিল লোকালয়ে। বন দফতর পাঁচটি নেকড়েকে খাঁচায় ধরতে পারলেও, ষষ্ঠ মানুষখেকো এখনও অধরা। সে ঘুরছে শিকারের খোঁজে। এ বার সেই ষষ্ঠ নেকড়েটিকে ধরতে বিশেষ এক ধরনের ফাঁদ পাতছেন বনকর্মীরা। স্ত্রী নেকড়ের স্বর ব্যবহার করে ওই মানুষখেকোকে ধরার পরিকল্পনা চলছে। আগে থেকে রেকর্ড করা ওই স্বর চালানো হচ্ছে একটি ছোট লাইডস্পিকারে। বন দফতরের কর্তারা আশা করছেন, এই ভাবে ফাঁদে ধরা দিতে পারে ষষ্ঠ মানুষখেকো।
বহরাইচের ওই নেকড়েগুলিকে ধরতে আগেই ‘অপারেশন ভেড়িয়া’ শুরু করেছিল বন দফতর। ব্যবহার করা হয়েছিল ড্রোন, ইনফ্রারেড ক্যামেরা, থার্মাল ক্যামেরা। খাঁচাবন্দি করতে হাতির মল, শিশুদের মূত্রমিশ্রিত পুতুল, আতশবাজিও ব্যবহার হয়েছিল। এত কিছু করার পরে পাঁচটি নেকড়েকে বনকর্মীরা ধরতে পারলেও, ষষ্ঠটি এখনও ঘুরছে শিকারের সন্ধানে। এই অবস্থায় ষষ্ঠ মানুষখেকোকে ধরতে নতুন পন্থা বন দফতরের। এ বিষয়ে বহরাইচের জেলা বন আধিকারিক অজিতপ্রতাপ সিংহ জানিয়েছেন, ষষ্ঠ মানুষখেকো নেকড়কে ধরতে এই নতুন পরীক্ষামূলক উদ্যোগ। আগে থেকে রেকর্ড করা ওই স্বর শুনে ষষ্ঠ নেকড়েটি মনে করতে পারে সেটি সত্যি কোনও স্ত্রী নেকড়ের স্বর।
বহরাইচে নেকড়ের দলের একের পর এক হামলাকে ‘বন্যপ্রাণী বিপর্যয়’ হিসাবে ঘোষণা করেছে যোগী আদিত্যনাথের সরকার। হামলায় মৃতদের পরিবারকে পাঁচ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্য ঘোষণা করা হয়েছে। জখমদের বিনামূল্যে জলাতঙ্কের টিকা দেওয়ারও ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে বহরাইচের বিভিন্ন জায়গায় পাহারা দেওয়া শুরু করেছেন বন দফতরের কর্মীরা। মানুষখেকো নেকড়েদের ধরতে ২৫টি দল গঠন করা হয়েছে। সেই দলে রয়েছেন ১৮ জন শার্প শুটার। যে এলাকাগুলিতে নেকড়ের হামলা হচ্ছে, সেখানে স্থানীয়দের নিরাপত্তার জন্য ২০০ জন পুলিশকর্মী মোতায়েন করা হয়েছে। তবুও হামলা থামার নাম নেই। ষষ্ঠ নেকড়েটি ধরা না পড়া পর্যন্ত এখনই স্বস্তি ফিরছে না বহরাইচে। গত জুলাই মাস থেকেই মানুষখেকো নেকড়ের হামলায় তটস্থ বহরাইচ। সরকারি হিসাব, নেকড়ের আক্রমণে এখনও পর্যন্ত অন্তত ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। জখম আরও অনেকে। নেকড়ের আতঙ্কে সিঁটিয়ে রয়েছেন ৩৫টি গ্রামের মানুষ।