রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে ভারতের বিদেশসচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা। ছবি—পিটিআই।
পুরনো বন্ধু রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক ঝালাই করতে এবং প্রতিরক্ষা-সহ বিভিন্ন নতুন ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক আদানপ্রদান বাড়ানোর লক্ষ্য নিয়ে আজ মস্কোয় বৈঠক করলেন ভারতের বিদেশসচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা। তাঁর কথায়, ‘‘নতুন বছরে এটাই আমার প্রথম বিদেশ সফর। কোভিডের মধ্যেও এ দেশে এসেছি। এর থেকেই প্রমাণিত, রাশিয়া আমাদের কাছে কতটা গুরুত্বপূর্ণ।’’
রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের সঙ্গে আজ বৈঠকের পর বিদেশসচিব জানিয়েছেন, দ্বিপাক্ষিক বিষয়সূচির পাশাপাশি আফগানিস্তান-সহ বিভিন্ন আঞ্চলিক বিষয় নিয়ে কথা হয়েছে।’ তাঁর কথায়, রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী ভারতের সঙ্গে ‘বিশেষ কৌশলগত সম্পর্কের’ গুরুত্বের কথা উল্লেখ করেছেন। এই বছরেই দু’দেশের রাষ্ট্রনেতার মধ্যে বার্ষিক সম্মেলন হবে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আমন্ত্রণে ভারতে আসবেন। বিদেশসচিব জানিয়েছেন দু’দেশের মধ্যে আলোচনা হয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদ নিয়েও।
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে পূর্ব লাদাখে চিনা সেনা প্রত্যাহারের ঠিক পরেই বিদেশসচিবের এই দু’দিনের রাশিয়া সফর। গত আট মাস ভারত-চিন সংঘাত নিয়ে পিছন থেকে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করে এসেছে মস্কো। কূটনৈতিক শিবিরের মতে, বেজিং যদি কারও কথায় কিছুটা গুরুত্ব দেয়, সেটা হল মস্কো। দুই দেশের বাণিজ্যিক এবং অন্যান্য স্বার্থ পরস্পরের সঙ্গে জড়িত। পাশাপাশি মস্কোও চায়, তাদের সামরিক পণ্যের বিশাল দুই ক্রেতা, ভারত এবং চিনের মধ্যে অস্থিরতা যেন মাত্রা না-ছাড়ায়। আর সে কারণেই গত কয়েক মাসে ভারত সব চেয়ে বেশি বৈঠক করেছে যে দেশের সঙ্গে, সেটা রাশিয়া।
এই দৌত্যের ভূকৌশলগত দিকও রয়েছে। আবার রাশিয়ার স্বার্থও বিষয়টির সঙ্গে যুক্ত। এই মুহূর্তে ব্রিকস (ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চিন, দক্ষিণ আফ্রিকা) এবং এসসিও (সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন)-এর চলতি বছরের নেতৃত্ব মস্কোর হাতে। ভারত-চিন এই দু’টি সংগঠনেই রয়েছে। রাশিয়া আন্তর্জাতিক শক্তির ভারসাম্য রক্ষায় তথা নিজের প্রভাব আরও সংহত করতে এই সংগঠনগুলোকে কাজে লাগাতে উন্মুখ। সূত্রের খবর, আজ আলোচনা হয়েছে এই বিষয়গুলি নিয়েও।