কৌরবদের সভায় দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণের সময় চুপ করে ছিল সবাই। তিন তালাক প্রথার বিরোধিতা করতে গিয়ে সেই প্রসঙ্গ টেনে আনলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। তাঁর দাবি, তিন তালাকের বিরোধিতা না করে আজ চুপ করে বসে রয়েছেন যাঁরা, তাঁরাও সে দিনের মতোই দোষী।
তিন তালাকের বিরোধিতা করতে গিয়ে দ্রৌপদী প্রসঙ্গ টেনে আনা নিয়ে আপত্তি তুলেছে মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড। বোর্ডের সাধারণ সম্পাদক মৌলানা আলি রহমানি মন্তব্য করেছেন, ‘‘এমন বোকা কথার কী প্রতিক্রিয়া দেব জানিনা। উনি তালাক প্রসঙ্গে দ্রৌপদীর কথা টানছেন। স্থির মস্তিস্কের কেউ এটা করবে বলে মনে হয় না। উনি আলাদা রকমের চশমা দিয়ে সব কিছু দেখেন।’’ শুধু পার্সোনাল ল বোর্ডই নয়, মুসলিমদের আরও বেশ কয়েকটি সংগঠন যোগীর বক্তব্যের প্রতিবাদ করেছে।
গত কালই অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড জানিয়ে দিয়েছিল, তিন তালাক প্রথা তুলে না দেওয়ারই পক্ষপাতী নয় তারা। তবে এই প্রথার অপপ্রয়োগের বিরোধী। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রহমানি জানান, তিন তালাক নিয়ে একটি আচরণবিধি সামনে নিয়ে আসতে চাইছে বোর্ড। যাঁরা শরিয়ত আইন না মেনে বিনা কারণে তালাক দেবেন, তাদের সামাজিক বয়কটের প্রস্তাব দিচ্ছে বোর্ড। বোর্ডের দাবি, পার্সোনাল ল তাঁদের সাংবিধানিক অধিকার। এই অধিকার থেকে তাদের কেউ বঞ্চিত করতে পারবে না।
তালাক নিয়ে বোর্ড আচরণবিধি চালুর প্রস্তাব দিলেও বিজেপি তথা মোদী সরকারের সঙ্গে তাদের সংঘাত রবিবারই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। কারণ, বিজেপির নেতা ও মোদী সরকারের শীর্ষ মন্ত্রীদের বক্তব্য, তালাক নিয়ে মুসলিম মহিলাদের থেকে আসা প্রতিবাদকেই সম্মান জানিয়েই সরকার এই প্রথায় আপত্তি তুলেছে। এর পরে আজ ধর্মীয় আইন ও তালাক নিয়ে আরও এক কদম এগিয়ে আক্রমণ করেছেন আদিত্যনাথ।
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী চন্দ্রশেখরকে নিয়ে একটি বই প্রকাশের অনুষ্ঠানে যোগীর মন্তব্য, ‘‘তিন তালাক নিয়ে অনেকের নীরবতা আমাকে অবাক করে।’’ এই প্রসঙ্গে মহাভারতের কথা টেনে আনেন যোগী। বলেন, ‘‘আমি সবাইকে দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণের সময়টার কথা মনে করিয়ে দিতে চাই। সেদিন কেউ মুখ খোলেন নি। শুধু বিদূর বলেছিলেন, শ্লীলতাহানির করেছেন যাঁরা, তাদের মতোই অপরাধ করেছেন নীরব দর্শকেরাও।’’
দেশে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করার পক্ষেও সওয়াল করেছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী।