বানভাসি কেরল। ছবি- পিটিআই
উদ্ধার ও ত্রাণে শুক্রবার সকাল থেকে সেনাবাহিনী নামল বানভাসি কেরলে। মোতায়েন করা হল জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর (এনডিআরএফ) আরও ১৩ কোম্পানি। বন্যায় ইতিমধ্যেই কেরলে মৃত্যু হয়েছে ২২ জনের। চূড়ান্ত সতর্কতা জারি করা হয়েছে কেরলের ৯টি জেলায়। বন্যাদুর্গত মানুষের জন্য কেন্দ্রের সাহায্যের আর্জি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ফোন করলেন রাহুল গাঁধী। আর মহারাষ্ট্রে গোটা কোলহাপুর শহরটাই চলে গিয়েছে প্রায় ১০ ফুট গভীর জলের তলায়। ফ্লাইওভারের উপর থেকে দেখা যাচ্ছে শুধুই বহুতলগুলির ছাদ। এমনকী, জল কোথাও কোথাও প্রায় ছুঁয়ে ফেলেছে ফ্লাইওভারকেও!
একটানা প্রবল বর্ষণের জেরে বানভাসি হয়ে গিয়েছে মালাপ্পুরম-সহ কেরলের বেশ কয়েকটি জেলা। জলের তোড়ে ভেসে গিয়ে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে কম করে ২২ জনের। সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা করছে রাজ্য প্রশাসন। ওয়েইনাড় জেলায় ধসে মৃত্যু হয়েছে দু’জনের। ঘরবাড়ি ডুবে যাওয়ায় ২২ হাজার মানুষকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ৩১৫টি শরণার্থী শিবিরে। চূড়ান্ত সতর্কতা জারি করা হয়েছে ওয়েইনাড়, ইদুক্কি, মালাপ্পুরম ও কোঝিকোড়-সহ ৯টি জেলায়। জল ঢুকে পড়ায় কোচি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রবিবার বিকেল পর্যন্ত বিমান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। রাজ্যের ১৪টি জেলার সব স্কুল, কলেজই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। উদ্ধার ও ত্রাণে সেনাবাহিনী নেমেছে আলাপ্পুঝা, পাঠানামথিট্টা ও এর্নাকুলামে। বন্যায় ভয়াবহ অবস্থা কর্নাটক ও মহারাষ্ট্রে। কেরল ও কর্নাটক বন্যায় মৃতের সংখ্যা ৪০ ছাড়িয়ে গিয়েছে।
কোচি বিমানবন্দর যেন একটি হ্রদ! বৃহস্পতিবার রাতের ছবি টুইটারের সৌজন্যে
কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতর আগামী ১৪ অগস্ট পর্যন্ত প্রবল বর্ষণের পূর্বাভাস দিয়েছে। জানানো হয়েছে, ৫০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে আর তার সঙ্গে প্রবল বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা পাঠানামথিট্টা, কোট্টায়াম, ইদুক্কি, এর্নাকুলাম এবং ত্রিশূরে।
কেরলে বন্যা: দেখুন ভিডিয়ো
আরও পড়ুন- শ্রমিক নিখোঁজ হলে তবেই হুঁশ?
আরও পড়ুন- দেড় লক্ষ মানুষ ঘরছাড়া মহারাষ্ট্রে, রেড অ্যালার্ট কেরলে, বানভাসি কর্নাটক-ওড়িশাও
বানভাসি মহারাষ্ট্রে চলছে উদ্ধারকাজ। ছবি- টুইটারের সৌজন্যে
তাঁর নির্বাচনী কেন্দ্র ওয়েইনাড় ও কেরলের বন্যাদুর্গত মানুষের উদ্ধার ও ত্রাণের ব্যাবস্থা যাতে পর্যাপ্ত হয়, তা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানিয়েছেন রাহুল গাঁধী।
ওয়েইনাড়ে বন্যা: দেখুন ভিডিয়ো
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ওয়েইনাড়ের একটি চা বাগানে ধস নামে। তার জেরে বহু শ্রমিকের ঘরবাড়ি ভেসে যায় জলের তোড়ে। জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, কম করে ১৫০ জন ধ্বংসাবশেষের নীচে আটকে পড়েছেন। জখম হয়েছেন ২০০ জন। ৬০ জনকে ইতিমধ্যেই উদ্ধার করা হয়েছে। মিলেছে ২ জনের দেহও। তবে ধসের জন্য উদ্ধারকাজ চালাতে অসুবিধা হচ্ছে। গত ২০ বছরে এতটা ধস নামেনি এই অঞ্চলে।
বানভাসি মহারাষ্ট্র। ছবি- পিটিআই
মালাপ্পুরমের নীলামপুর গ্রামটির বহু এলাকায় ধসের ফলে ওই এলাকা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে এবং সেখানে জলস্তর দ্রুত বাড়ছে। সেনাবাহিনী এবং এনডিআরএফের দলগুলি ওই এলাকায় উদ্ধার ও ত্রাণে নেমে পড়েছে।