বিপজ্জনক: জল বাড়ছে ঝিলম নদীর। শ্রীনগরে শনিবার। ছবি: পিটিআই।
প্রবল বৃষ্টিতে কাশ্মীরের কয়েকটি এলাকায় জারি হয়েছে বন্যার সতর্কতা। শ্রীনগরের নিচু এলাকার বাসিন্দারা আশ্রয় নেওয়া শুরু করেছেন বাড়ির উপরের তলায়। স্থগিত রয়েছে অমরনাথ যাত্রাও। আর এরই মধ্যে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে পিডিপি-বিজেপির দিকে আঙুল তুললেন বিরোধীরা।
বুধবার থেকেই প্রবল বৃষ্টিতে ঝিলমের জলস্তর বাড়ছে। দক্ষিণ কাশ্মীরের লিডার আর ভিশো নদীতেও জল বিপদসীমার উপরে চলে যাওয়ায় আগেই ওই এলাকার পাঁচটি জেলায় বন্যা সতর্কতা জারি হয়েছিল। আজ সকালেও সঙ্গম এলাকায় ঝিলমের জলস্তর ছিল বিপদসীমার উপরে। ফলে শ্রীনগরের নিচু এলাকার বাসিন্দাদের জন্য সতর্কতা জারি হয়েছিল। তবে ওই এলাকায় জলস্তর নামতে শুরু করেছে। জম্মুর রাজৌরিতে দারহালি নদীরও জলস্তর বেড়েছে। সেইসঙ্গে শুরু হয়েছে ধস। গতকাল জম্মু-শ্রীনগর জাতীয় সড়কের উপরে ধসে অমরনাথ যাত্রীদের কনভয়-সহ বেশ কিছু গাড়ি আটকে পড়ে। বালতাল ও পহলগাম, দুই পথ দিয়েই অমরনাথ যাত্রা স্থগিত রাখা হয়েছে। ভগবতীনগর বেস ক্যাম্প থেকে তীর্থযাত্রীদের তৃতীয় দল রওনা হয়েছিল। তাঁদের আপাতত টিকরি বেস ক্যাম্পে রেখেছে প্রশাসন। জম্মু-কাশ্মীর প্যান্থার্স পার্টির নেতা বলবন্ত সিংহ মানকোটিয়ার বক্তব্য, ‘‘৫০০-৭০০ তীর্থযাত্রী টিকরি ক্যাম্পে রয়েছেন। তাঁদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’
২০১৪ সালের বন্যার স্মৃতি এখনও পিছু ছাড়েনি কাশ্মীরের। আপাতত মালপত্র নিয়ে বাড়ির উপরের তলায় আশ্রয় নিয়েছেন বাসিন্দারা। অমর সিংহ কলেজের শিক্ষক মহম্মদ খুরশিদ বলছেন, ‘‘ঝিলমের জলকে বিশ্বাস করা কঠিন। ২০১৪ সালে হঠাৎ সব কিছু জলের তলায় চলে গিয়েছিল।’’
বিজেপি-পিডিপি জোট সরকার ভেঙে যাওয়ার পরে জম্মু-কাশ্মীরে এখন রাজ্যপালের শাসন। অর্থাৎ বকলমে নরেন্দ্র মোদী সরকারের হাতেই রয়েছে নিয়ন্ত্রণ। বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে আজ জরুরি বৈঠক করেন রাজ্যপাল এন এন ভোরা। পরে রাজ্য ও কেন্দ্রের তরফে আশ্বাস দেওয়া হয়, বন্যা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে।
কিন্তু বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে পিডিপি ও বিজেপিকে খোঁচা দিতে ছাড়ছেন না বিরোধীরা। ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ওমর আবদুল্লার কথায়, ‘‘২০১৪ সালের পরে বন্যা রুখতে আদৌ কোনও কাজ হয়েছে কি? বিজেপি-পিডিপি সরকার ঝিলমের ড্রেজিং ও অন্যান্য বিষয়ে কী পদক্ষেপ করেছে? এ বাবদে আসা টাকাই বা গেল কোথায়?’’
আজ বিকেলের দিকে অবশ্য শ্রীনগরে বৃষ্টি থেমেছে। হাওয়া অফিস জানিয়েছে, আগামিকাল থেকে অবস্থার উন্নতি হবে। কিন্তু বন্যার ভূত পিছু ছাড়ছে না কাশ্মীরের। রাজনীতির বাজারেও সেই ভূতের ঠেলা আপাতত সামলাতে হবে নরেন্দ্র মোদীদের।