দাউদি বোহরাদের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি পিটিআই
তাঁর আমলে ব্যাঙ্কের হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে শীর্ষ মন্ত্রীদের ঘনিষ্ঠ নীরব মোদী-মেহুল চোক্সীদের বিরুদ্ধে। অর্থনৈতিক অপরাধী বিজয় মাল্য ফেরার হওয়ার অব্যবহিত আগে খোদ অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন, যা নিয়ে প্রচুর জলঘোলা হচ্ছে। এমন একটি সময়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মধ্যপ্রদেশে ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের একটি অনুষ্ঠানে বললেন, চার বছর ধরে তাঁর সরকার এটাই নিশ্চিত করতে চেয়েছে— ব্যবসায়ীরা যেন আইনকানুন মেনে ব্যবসা করেন, সৎ ভাবে ব্যবসা করেন। কিন্তু তার পরেও হাতের পাঁচটা আঙুল তো সমান হয় না!
শিয়া মুসলিমদের একটি সম্প্রদায় দাউদি বোহরাদের অনুষ্ঠানে এই প্রথম কোনও প্রধানমন্ত্রী অংশ নিলেন। বোহরা সম্প্রদায় প্রধানত ধনী ব্যবসায়ী। এ দিন ছিল তাঁদের ‘আশারা মুবারক’ অনুষ্ঠান। এই সম্প্রদায়ের বেশ কিছু মানুষ গুজরাতে থাকেন করেন। মোদী সে কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘‘বরাবর তাঁদের সঙ্গে আমার খুবই হৃদ্যতা। এমনকি এখনও তাঁদের জন্য আমার দরজা খোলা থাকে।’’ মোদী বলেন— দেশের উন্নয়নে যেমন দাউদি বোহরাদের উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে, তেমনই গোটা দুনিয়ায় তাঁদের পরিচিতি সৎ ভাবে ব্যবসা করার জন্য। তিনি জানান, তাঁর সরকার সব ব্যবসায়ীর সৎ ভাবে ব্যবসা করাটা নিশ্চিত করতে চেয়েছে। সৎ ব্যবসাদারদের উৎসাহিত করতেই পণ্য ও পরিষেবা কর (জিএসটি) এবং দেউলিয়া আইন আনা হয়েছে।
মোদী এ দিন ব্যবসায়ীদের প্রশংসা করে বলেন, ‘‘এঁদের বেশির ভাগই সৎ ভাবে ব্যবসা করেন। আইন মেনে চলেন। কিন্তু তার পরেও হাতের পাঁচটা আঙুল তো সমান হয় না!’’ মোদী কারওর নাম উল্লেখ না-করলেও বিজয় মাল্য, নীরব মোদী, মেহুল চোক্সীদের মতো ফেরার ঋণখেলাপিদের নিয়ে হইচইয়ের মধ্যে তাঁর এই মন্তব্য বিশেষ ইঙ্গিতবাহী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন— তাঁর সরকার যে ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ এবং ‘স্বচ্ছ ভারত অভিযান’ কর্মসূচি নিয়েছে, তাতেও ব্যবসায়ীরা একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছেন। দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে তাঁদের ভূমিকা সবার আগে। এত চ্যালেঞ্জের মধ্যেও দেশের মানুষ তাই অর্থনৈতিক প্রগতির হারকে দুই অঙ্কে নিয়ে যাওয়ার কথা ভাবতে পারছেন। সরকারের ‘আয়ুষ্মান ভারত’ এবং ‘ঘর ঘর শৌচাগার’ কর্মসূচিও দেশের জনজীবনে বিরাট প্রভাব ফেলেছে বলে দাবি করেন মোদী। বলেন— তিনি যখন প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন তখন দেশের ৪০ শতাংশ বাড়িতে শৌচাগার ছিল। এখন সেটা ৯০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।