আর বড়জোর দেড় মাস।
তার পরেই ভারতীয় বিমানবাহিনীর অস্ত্রভাঁড়ারে এসে যাবে হাল্কা যুদ্ধবিমান ‘তেজস’। মঙ্গলবার, বেঙ্গালুরুতে হিন্দুস্থান অ্যারোনটিক্স লিমিটেডের (হ্যাল) এলাকায়া ‘তেজস’-এর পরীক্ষামূলক উড়ানে চড়লেন বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল অরূপ রাহা।
একেবারেই দেশীয় প্রযুক্তিতে বানানো সুপারসোনিক ‘তেজস’ যুদ্ধবিমান ভারতীয় বিমানবাহিনীর মুকুটে নতুন পালক হয়ে উঠতে চলেছে। এই যুদ্ধবিমানটিতে চালক ছাড়া থাকতে পারবেন মাত্র এক জনই। ভারতীয় বিমানবাহিনীতে দীর্ঘ ৫/৬ দশক ধরে যে ভূমিকা ছিল সাবেক সোভিয়েত যুদ্ধবিমান ‘মিগ-২১’-এর, এ বার সেই জায়গাটাই নিতে চলেছে ‘তেজস’। প্রায় সাড়ে ১৩ মিটার লম্বা আর ১২ টন ওজনের যুদ্ধবিমানগুলোর সর্বোচ্চ গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় সাড়ে ১৩শো কিলোমিটার। সর্বাধিক ৪০০ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের এলাকা ঢুঁড়ে ফেলার জন্য ‘তেজস’-এ নতুন করে জ্বালানি ভরতে হবে না।
আরও পড়ুন- এ দোকানে দোকানি নেই, তবু চুরি নেই, ঠকানো নেই
ভারতীয় বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমানের ভাঁড়ারের হাল-হকিকৎ খুব একটা সন্তোষজনক নয়। বিমানবাহিনীতে এখন যুদ্ধবিমানের মোট ৩৩টি স্কোয়াড্রন রয়েছে। সেই সব স্কোয়াড্রনের প্রত্যেকটিতে রয়েছে ১৬ থেকে ১৮টি যুদ্ধবিমান। ওই ৩৩টি স্কোয়াড্রনের মধ্যে ১১টিতেই রয়েছে শুধু সেই সাবেক আমলের সোভিয়েত যুদ্ধবিমান ‘মিগ-২১’ আর ‘মিগ-২৭’। যার অনেকগুলোই এখন কার্যত, সব সময়ের জন্য ব্যবহারের অযোগ্য। বেশ কয়েকটি ‘মিগ-২১’ যুদ্ধবিমান একেবারেই বিকল হয়ে গিয়েছে। সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর যার যন্ত্রাংশ সারানো বা বদলে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
‘তেজস’- এক নজরে।
ফলে, সেই সাবেক সোভিয়েত যুদ্ধবিমানগুলো এখন ভারতীয় বিমানবাহিনীর ‘বোঝা’ হয়ে দাঁড়িয়েছে! যদিও সীমান্তের আকাশ-সীমায় আগের চেয়ে বহির্শত্রুর বিপদটা অনেক বেড়ে গিয়েছে। চিন তো বটেই, শক্তি-সামর্থ্যে সম্ভ্রম জাগানোর মতো জায়গায় চলে গিয়েছে পাকিস্তানের বিমানবাহিনীও। এই পরিস্থিতিতে ভারতীয় বিমানবাহিনীর অস্ত্রভাঁড়ারে যুদ্ধবিমানের অন্তত ৪৫টি স্কোয়াড্রন থাকা উচিত বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। তবে আশার কথা একটাই, এই ‘তেজস’ আর বছরদু’য়েকের মধ্যেই যুদ্ধবিমানের সেই সর্বাধুনিক মান (মার্ক-ওয়ান-এ) ছুঁতে চলেছে, ভারতীয় বিমানবাহিনীর বিমান-বিশেষজ্ঞরা যার দাবি জানিয়ে আসছিলেন দীর্ঘ দিন ধরে। আপাতত একটি স্কোয়াড্রন ‘তেজস’ (১৬ থেকে ১৮টি) আসছে ভারতীয় বিমানবাহিনীতে।