মহুয়া, হাঁড়িয়ার নেশায় বুঁদ হয়ে ঘরে ফিরলেই জরিমানা গুণতে হবে আড়াই হাজার টাকা ঝাড়খণ্ডের লোহারডাগার প্রত্যন্ত গ্রামে এমনই ফরমান দিলেন স্থানীয় মহিলারা। শুধু তা-ই নয়, গ্রামে গ্রামে দেশি মদের কারবার রুখতে মহিলা-বাহিনী জানিয়েছে, মদ বিক্রি করলে শাস্তি হিসেবে দিতে হবে ৫ হাজার টাকা। জুয়ার জন্য জরিমানা হবে ২ হাজার।
নেশায় মত্ত বাড়ির ছেলেদের তাণ্ডব থামাতে এ পথেই এগিয়েছেন হনহট পঞ্চায়েতের গিতিলগড় গ্রামের মহিলারা। তাঁদের সঙ্গে সামিল আশপাশের এলাকার মানুষও। সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে প্রশাসনও।
গত কাল গিতিলগড় গ্রামের মহিলারা নেশা-বিরোধী প্রচারে মিছিল বের করেন। তাতে যোগ দেন হনহট পঞ্চায়েতের সদস্যরাও। লোক আসে অন্য গ্রাম থেকেও। জেলার এসপি মৃত্যুঞ্জয় কুমার জানান, সব মিলিয়ে মিছিলে হাঁটেন প্রায় ৭০০ মানুষ। হনহট, লালমাটিয়া, গিতিলগড়, তোড়াঙ্গ, হুডু গ্রামে ঢুকে দেশি মদ, জুয়ার ঠেক তাঁরা ভেঙে দেন। হনহটের পঞ্চায়েত প্রধান শ্যামসুন্দর ওঁরাও বলেন, “মহিলারা নেশার বিরুদ্ধে জেহাদ শুরু করেছেন। পরিবারে শান্তি ফেরাতে এ ছাড়া হয়তো অন্য কোনও উপায় তাঁদের সামনে ছিল না।”
পুলিশ জানিয়েছে, মদ খাওয়া এবং বিক্রির উপর ‘নিষেধাজ্ঞা’ জারি করেছেন মহিলারা। ফরমান না-মানলে জরিমানার হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়েছে। গিতিলগড়ের বাসিন্দা পুনম কুমারী বলেন, “আমার ছেলের বয়স এখন তিন বছর। স্কুলে যায়। কিন্তু স্বামী মদ খেয়ে বাড়িতে ফিরে ছেলের সামনেই অনেক বার আমাকে মারধর করেছে। অনেক সহ্য করেছি। ছেলের ভবিষ্যৎ চিন্তা করেই তাই মিছিলে যোগ দিয়েছি।” ফরমান অমান্য করলে অভিযুক্তদের ‘একঘরে’ করে দেওয়ার হুমকিও দিয়েছে প্রমীলা-বাহিনী।
লোহারডাগার ডেপুটি কমিশনার পরমজীন কউর বলেন, “পুলিশ কখনও কখনও বেআইনি মদ আটক করে। কিন্তু পুলিশের একার পক্ষে সব সময় নজরদারি চালানো সম্ভব নয়। গ্রামের মহিলারা এ ভাবে নেশা, জুয়ার বিরোধিতা করায় প্রশাসন অনেকটা নিশ্চিন্ত। ওই মহিলাদের সংগঠনকে জেলা প্রশাসন সব রকম ভাবে সাহায্য করবে। তবে তাঁরা যেন কখনও হাতে আইন না তুলে নেন।”