—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
একশো দিনের কাজের প্রকল্পে কাজের চাহিদার সঙ্গে গ্রামীণ অর্থনীতির দুর্দশার কোনও সম্পর্ক নেই বলে জানাল আর্থিক সমীক্ষা। কিন্তু সেই বিশ্লেষণে পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি জায়গা পেল না। কারণ, গত অর্থবর্ষে একশো দিনের কাজ বা এমজিএনআরইজিএ প্রকল্পে পশ্চিমবঙ্গ কোনও টাকাই পায়নি। আর্থিক সমীক্ষায় বলা হয়েছে, বিভিন্ন রাজ্যেই একশো দিনের কাজের টাকার নয়ছয় ধরা পড়েছে।
কোভিডের সময় লকডাউনের জেরে গ্রামে ফেরা পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য একশো দিনের কাজের প্রকল্প পেট চালানোর ভরসা হয়ে উঠেছিল। তার পরেও একশো দিনের কাজের প্রকল্পে কাজের চাহিদা কমেনি। ফলে অভিযোগ উঠেছে, গ্রামের অর্থনীতিতে দুর্দশা কাটেনি। আজ আর্থিক সমীক্ষায় দাবি করা হয়েছে, এই কাজের চাহিদার সঙ্গে গ্রামের অর্থনীতির দুর্দশার সম্পর্ক নেই। তা হলে যে রাজ্যে যত গরিব, যত বেকার— সে রাজ্যে তত বেশি মাত্রায় একশো দিনের কাজের টাকা খরচ হত। কিন্তু তামিলনাড়ুতে দেশের মোট গরিব জনসংখ্যার ১ শতাংশ মানুষের বসবাস হলেও একশো দিনের কাজের টাকার ১৫ শতাংশ ব্যয় হয়। কেরলে দেশের মোট গরিবদের মাত্র ০.১ শতাংশ মানুষের বাস। কিন্তু একশো দিনের কাজের তহবিলের ৪ শতাংশ ব্যয় হয়েছে। এই তত্ত্ব প্রমাণ করতে আর্থিক সমীক্ষায় কোন রাজ্য একশো দিনের কাজের প্রকল্পের বরাদ্দের কত ভাগ পেয়েছে এবং দেশের মোট গরিবদের মধ্যে সেই রাজ্যে গরিবদের ভাগ কতখানি, তার বিশ্লেষণ করা হয়েছে। কিন্তু এই বিশ্লেষণে পশ্চিমবঙ্গ, মণিপুর গরহাজির। কারণ এই রাজ্যগুলিতে একশো দিনের কাজে গত অর্থ বছরে কোনও টাকা যায়নি। বা খুব সামান্য টাকা গিয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গে একশো দিনের কাজের ক্ষেত্রে অনিয়মের অভিযোগে ২০২২-এর মার্চ মাস টাকা আটকে রয়েছে। বকেয়ার পরিমাণ ৫,৫৫৩ কোটি টাকা। বাজেটের আগে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে রাজ্যের অর্থমন্ত্রীদের বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গের তরফে চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এ নিয়ে দাবি তুলেছিলেন। আর্থিক সমীক্ষায় বলা হয়েছে, বিভিন্ন রাজ্যেই একশো দিনের কাজের টাকার নয়ছয় ধরা পড়েছে। অনেক টাকাই মানুষের কাছে পৌঁছয়নি। গত চার বছরে ৯৩৫ কোটি টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ উঠেছে। রাজ্যসভার বিজেপি সাংসদ শমীক ভট্টাচার্যের যুক্তি, ‘‘যদি কেউ বলে টাকা পাওয়া আমার অধিকার, হিসেব দেওয়াটা আমার অভ্যাস নয়, তা হলে সেটা চলতে পারে না।’’