খোশমেজাজে: ১০ জনপথে কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে রাহুল ও সনিয়া গাঁধী। ছবি: পিটিআই।
অবশেষে কংগ্রেসের সভাপতি পদে অভিষেকের দ্বারপ্রান্তে রাহুল গাঁধী। আজ ১০ জনপথে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটি বৈঠকে বসে দশ মিনিটের মধ্যে দলের সভাপতি পদে নির্বাচনের নির্ঘণ্ট স্থির করেছে। ঠিক হয়েছে, আগামী ১ ডিসেম্বর নোটিফিকেশনের মাধ্যমে সভাপতি নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হবে। ফলাফল ঘোষণা হবে ১৯ ডিসেম্বর। এর মাঝে থাকবে মনোনয়ন দাখিল, সেটি খতিয়ে দেখা, মনোনয়ন প্রত্যাহার, প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশের মতো নির্বাচন কমিশন নির্দিষ্ট ধাপগুলি।
আরও পড়ুন: নিঃশব্দেই বদল সারলেন সনিয়া
কিন্তু এগুলি নেহাতই নিয়মতান্ত্রিক আনুষ্ঠানিকতা। সূত্রের খবর, আজ ওয়ার্কিং কমিটির সদস্যরা সমবেত ভাবে রাহুল গাঁধীর নামই প্রস্তাব করেছেন। কমিটির এক নেতার কথায়, “আনুষ্ঠানিক ভাবে নাম ঘোষণা বাকি মাত্র। কিন্তু মনোনয়নপত্র দাখিলের পরেই তিনি কার্যত সভাপতি পদে অভিষিক্ত হয়ে যাবেন।’’ কংগ্রেস নেতা জনার্দন দ্বিবেদীর কথায়, ‘‘যদি আর কোনও প্রার্থী সভাপতি পদে না লড়েন, তা হলে নাম প্রত্যাহারের শেষ দিনেই অর্থাৎ ১১ তারিখ নতুন সভাপতির নাম ঘোষণা হয়ে যাবে।’’ এখনও পর্যন্ত রাহুল ছাড়া অন্য কোনও প্রার্থীর লড়ার কোনও সম্ভাবনাই নেই।
কংগ্রেস সূত্রের বক্তব্য, রাহুল গাঁধী অবশ্য নিজে চান গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে জিতে আসতে। নির্বাচন কমিশনের দেওয়া সময়সীমা সংক্রান্ত নির্দেশ মেনেই এগোতে চান তিনি। কিন্তু তিনি চাইলেও নেহাতই আলংকারিক ভাবে তাঁর বিরুদ্ধে কোনও প্রার্থীকে দাঁড় করানো হবে, এমন কোনও পরিকল্পনাও কংগ্রেসের নেই।
তেরো বছর আগে রাহুলকে ভোটের ময়দানে এনেছিলেন মা সনিয়া গাঁধী। অমেঠি থেকে লোকসভার টিকিটে লড়েছিলেন তৎকালীন মুখচোরা রাহুল। এর পর ধাপে ধাপে তাঁর পদোন্নতি ঘটেছে, কিন্তু দলের পূর্ণ কান্ডারির ভূমিকায় তাঁর ভূমিকা এখনও পরীক্ষিত নয়। এর আগে সাংসদ থেকে দলের সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন রাহুল। তার পর জয়পুর এআইসিসি-তে সহ-সভাপতিও হয়েছেন। কিন্তু সরকারের কোনও মন্ত্রিত্বের পদ যেমন নেননি (তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের অনুরোধ সত্ত্বেও), তেমনই দলের কান্ডারি হননি এখনও।
কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব মনে করছেন, ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে সেটাই দলের প্রধান শক্তি। নতুন অক্সিজেন নিয়ে এক ‘নতুন নেতা’র অধীনে ভোটের ময়দানে নামতে পারবে কংগ্রেস। তবে আগামি লোকসভা নির্বাচন নয়, ভাবি কংগ্রেস সভাপতি এখন পাখির চোখ হিসেবে দেখছেন সেমিফাইনাল অর্থাৎ গুজরাত নির্বাচন।
সূত্রের খবর, আজ সভাপতি নির্বাচনের নির্ঘণ্ট অনুমোদিত হয়ে গেলে নেতারা নিজেদের মধ্যে গুজরাত-কৌশল নিয়ে কথা বলেছেন। রাহুল গাঁধীর বক্তব্য, রাফাল কাণ্ড থেকে অমিত শাহের পুত্রের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ—এই বিষয়গুলি নিয়ে সরকারকে বাধ্য করতে হবে সংসদে জবাব দিতে। শীতকালীন অধিবেশনে (যদি তা গুজরাত ভোটের আগে হয়) সরকারকে দুর্নীতির প্রশ্নে কোণঠাসা করতে পারলে তার ফল বিধানসভা ভোটে পড়বে বলেই আত্মবিশ্বাসী রাহুল।