পরিচালক মণীশ ঝা।
কন্যাভ্রূণ হত্যার জেরে সংখ্যা কমছে মেয়েদের। এমন হলে মেয়েরা যাবেন কোথায়? দেশ কি নারীশূন্য হয়ে যাবে? এক দশক আগে নিজের ছবি ‘মাত্রুভূমি’তে এমন প্রশ্নই তুলেছিলেন পরিচালক মণীশ ঝা। কন্যাভ্রূণ হত্যার জেরে এক নারীহীন কল্পিত দেশের কাহিনি তুলে ধরেছিলেন ছবিতে।
এখন কাশ্মীরের কাঠুয়া থেকে উত্তরপ্রদেশের উন্নাও— নারী-নির্যাতনের বিরাম নেই। এই পরিস্থিতিতে কী মনে হচ্ছে তাঁর? মণীশ বলছেন, ‘‘ছবিটা যখন মুক্তি পেয়েছিল, তখন বিদেশে প্রশংসিত হলেও দেশে অনেকেই সমালোচনা করেছিলেন। বলেছিলেন দেশের নেতিবাচক ছবি তুলে ধরতেই নাকি আমি ছবিটা বানিয়েছিলাম। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও আমাদের দেশে এমন ঘটনাই বাস্তব।’’
ছবি তৈরির সময়েও উদ্বেগ ছিল মণীশের। মধ্যপ্রদেশের একটি গ্রামে শুটিং হয়েছিল। কিন্তু এমন এক বিষয়ে যে ছবি করতে চলেছেন, তা ভরসা করে বাসিন্দাদের বলেননি। ভয় ছিল, গ্রামের বদনামের কথা ভেবে যদি তাঁরা শুটিং পণ্ড করে দেন! কিন্তু গল্প না জানিয়ে শুটিং করা উচিত নয় ভেবে শেষ দিকে মণীশ নিজেই গ্রামের মুখিয়াকে জানান ছবির গল্প। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের খুব অবাক করে দিয়ে ওই বৃদ্ধ আমাদের প্রশংসা করেন। বলেন, এমন ঘটনা তো বাস্তব, এগুলো তুলে ধরা দরকার।’’
তবে মণীশ তাঁর ‘মাত্রুভূমি’র সঙ্গে নিজের দেশের তুলনা চান না। তিনি বলছেন, ‘‘আমাদের দেশের অবস্থা এখনও এত খারাপ নয়।’’ ওই বৃদ্ধ মুখিয়ার মতো সাধারণ মানুষের এমন সচেতনতা থেকেই সেই আশা খুঁজে পান মণীশ। সম্প্রতি কাঠুয়ার ঘটনা নিয়ে কটু মন্তব্য করে কাজ হারিয়েছেন এক ব্যাঙ্ককর্মী। তার জোর এতটাই ছিল যে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ওই কর্মীকে বরখাস্ত করে ওই ব্যাঙ্ক। সেই ঘটনা উল্লেখ করে মণীশ বলছেন, ‘‘এটা তো এখনকার সময়ের ইতিবাচক দিক। আগে হয়তো কেউ এমন অন্যায় মন্তব্য করলে বাকি দেশের মানুষ তা জানতেই পারতেন না।’’