কৃষক আন্দোলনের নেতা রাকেশ টিকায়েত। ফাইল চিত্র।
সরকার ইচ্ছুক হলে আন্দোলনরত কৃষকেরাও আলোচনায় বসতে রাজি বলে জানালেন কৃষক আন্দোলনের নেতা রাকেশ টিকায়েত। তাঁর হুঁশিয়ারি, দশ দিনের মধ্যে সরকার আলোচনায় না বসলে ২২ জুলাই থেকে সংসদের সামনে বিক্ষোভ দেখাবেন কৃষকেরা। এ দিকে আজ ফের বিজেপি-শাসিত হরিয়ানার একাধিক স্থানে বিজেপি নেতাদের কর্মসূচি ভেস্তে দিতে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ-বিক্ষোভে জড়িয়ে পড়েন কৃষকেরা।
নরেন্দ্র মোদী সরকারের তিন কৃষি আইনের বিরুদ্ধে গত নভেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে দিল্লির সীমানা ঘিরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন ক্ষুব্ধ কৃষকেরা। গোড়ায় কৃষকদের বিরুদ্ধে রণং দেহি অবস্থান নেয় কেন্দ্র। কিন্তু তাতে জনমানসে ভুল বার্তা যাচ্ছে বুঝতে পেরে কৃষক বিক্ষোভ প্রশ্নে ‘ধীরে চলো’ নীতি নিয়েছে কেন্দ্র। তা ছাড়া উত্তরপ্রদেশ-সহ পাঁচ রাজ্যের নির্বাচন বছর ঘুরলেই। সেখানে এই বিক্ষোভের প্রবল আঁচ পড়ার আশঙ্কায় এখন আলোচনার মাধ্যমে গোটা বিষয়টির সমাধান করাই সরকারের লক্ষ্য। চলতি সপ্তাহে মন্ত্রিসভার রদবদলের পরে কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিংহ তোমর কৃষকদের নতুন করে আলোচনায় বসার প্রস্তাব দেন। আজ কৃষক নেতা রাকেশ টিকায়েত বলেন, ‘‘সরকার আলোচনায় বসতে চাইলে আমরাও রাজি আছি। কিন্তু যদি সরকার পূর্ব নির্ধারিত শর্ত মাথায় রেখে আলোচনা করতে চায়, তা হলে আমরা বৈঠক থেকে সরে আসব।’’ একই সঙ্গে টিকায়েতের হুঁশিয়ারি, আগামী দশ দিনের মধ্যে যদি সরকার আলোচনায় না বসে, সে ক্ষেত্রে আসন্ন সংসদ অধিবেশনে সংসদের বাইরে ধর্না দেবেন কৃষকেরা।
প্রায় ৯ মাস ধরে আন্দোলন করে চলেছেন রাকেশ টিকায়েতরা। দিল্লি সীমানায় এক সময়ে ভিড় হয়ে থাকা তাঁবুগুলি এখন প্রায় ফাঁকা। সরকারের ধৈর্য্যের সঙ্গে অপেক্ষার যে কৌশল নিয়েছে, তা অনেকটাই ভিত আলগা করে দিয়েছে টিকায়েতদের। সরকার এ ভাবে ‘ধীরে চলো’ নীতি নিয়ে এগোলে আগামী দিনে আন্দোলন ধরে রাখাই যে কঠিন হয়ে পড়বে, তা বিলক্ষণ বুঝতে পারছে টিকায়েত-শিবির। সেই কারণে দ্রুত এ বিষয়ে নির্ণায়ক পদক্ষেপ নেওয়ার পক্ষপাতী তাঁরা। যদিও কৃষকদের অন্য অংশের বক্তব্য, আগামী ছ’মাসের মধ্যে উত্তরপ্রদেশ-সহ পাঁচ রাজ্যে নির্বাচন। আন্দোলনের ফলে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনগুলিতে কৃষক সমাজের ভোট হারানোর ভয় রয়েছে বিজেপির। সেই সময়ে কেন্দ্রের উপর চাপ বাড়ালে বরং অনড় অবস্থান থেকে সরে আসতে পারে বিজেপি সরকার।