ছবি: পিটিআই।
কৃষক সংগঠনগুলির সঙ্গে ফের আলোচনায় বসার জন্য এ বার মোদী সরকারের অন্দরমহল থেকেই চাপ তৈরি হচ্ছে। সরকারি সূত্রের ইঙ্গিত, আগামী সপ্তাহে মঙ্গলবার কেন্দ্র কৃষক সংগঠনগুলির সঙ্গে বৈঠকে বসতে পারে।
পঞ্জাবের বিজেপি নেতারা আজ কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিংহ তোমরের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সূত্রের খবর, বিজেপি নেতারা বোঝানোর চেষ্টা করেছেন, তিন কৃষি আইনের বিরুদ্ধে এই ক্ষোভ সামাল দিতেই হবে। না হলে তাঁদের পক্ষে পঞ্জাবে রাজনীতি করাই কঠিন হয়ে পড়বে। পঞ্জাবের বিজেপি নেতাদের মতে, মঙ্গলবার কৃষক সংগঠনগুলিকে বৈঠকে ডাকা হতে পারে। কৃষক নেতারা সরকারি ভাবেই বিজেপি নেতাদের বয়কট করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন। পঞ্জাবের পাশের রাজ্য হরিয়ানাতেও বিজেপি শরিক জেজেপি নেতৃত্বের উপর জোট ত্যাগ করার চাপ বাড়ছে। হরিয়ানার উপমুখ্যমন্ত্রী দুষ্যন্ত চৌটালাও শনিবার দিল্লিতে এসে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ, কৃষিমন্ত্রী তোমর এবং খাদ্য ও বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়ালের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠকের পর চৌটালা বলেন, “আমি আশা করছি, আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কেন্দ্রের সঙ্গে কৃষক নেতাদের চূড়ান্ত বৈঠক হবে। সেখানে কোনও সমাধানসূত্র বার হবে।” তবে কৃষক নেতাদের বক্তব্য, এখনও সরকার আমন্ত্রণ জানায়নি।
মোদী সরকার তিন কৃষি আইন সংশোধনে রাজি হয়ে কৃষক নেতাদের কাছে প্রস্তাব পাঠানোর পরে তাঁরা তা খারিজ করে দিয়েছিলেন। এর পর সরকারের দিক থেকেও আর আলোচনার চেষ্টা হয়নি। আজ কৃষক সংগঠনগুলি হুঁশিয়ারি দিয়েছে, রবিবারই তাঁরা দিল্লি-জয়পুর হাইওয়ে অবরোধ করবেন। রাজস্থানের কৃষকদের একটি মিছিল শাজাহানপুর থেকে দিল্লি পর্যন্ত মিছিল করবেন। এই মিছিলই সড়ক অবরোধ করবে। শনিবার কৃষকেরা জাতীয় সড়ক অবরোধ করবেন ভেবে বিরাট নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করা হয়েছিল। কিন্তু তার বদলে কর্মসূচি অনুযায়ী কৃষক সংগঠনগুলি পঞ্জাব, হরিয়ানা থেকে তেলঙ্গানা, ওড়িশার মতো বিভিন্ন রাজ্যের টোল প্লাজ়া দখল করে টোল আদায় বন্ধ করে দেন। অম্বানী-আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বিক্ষোভের কর্মসূচি মেনে অনেক জায়গায় রিলায়্যান্সের পেট্রল পাম্পের সামনে অবরোধ হয়। আজ কৃষক নেতারা জানান, সোমবার তাঁরা কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে অনশনে বসবেন।
আরও পড়ুন: কেন্দ্রের মুখে এ বার মাওবাদী ইন্ধন!
আরও পড়ুন: কৃষি আইন নিয়ে চিঠি প্রাক্তন আমলাদের
কৃষি আইনের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছে একটি সংগঠন। আগামী বুধবার প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে তার শুনানি হবে। কৃষি মন্ত্রক আজ দাবি করেছে, হরিয়ানার একগুচ্ছ সংগঠন কৃষিমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে আইনের জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছে। কিন্তু দিল্লির সীমানায় আন্দোলনকারী নেতাদের বক্তব্য, এই সব ভুঁইফোড় সংগঠন বিজেপির সাজানো। যেমন উত্তরপ্রদেশ থেকে দিল্লি ঢোকার চিল্লা সীমানা এত দিন বন্ধ ছিল। আজ তা খুলে দিয়েছেন চাষিরা। ওই এলাকায় চাষিদের দাবি, তাঁরা সমাধানের আশ্বাস পেয়েছেন। আন্দোলনকারীদের উপরে চাপ তৈরি করতে দিল্লির আলিপুর থানায় এফআইআর হয়েছে। অভিযোগ, কৃষকেরা কোভিড স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। কৃষক নেতাদের হিসেবে, দিল্লির সিংঘু সীমানায় প্রায় দেড় লক্ষ কৃষক জড়ো হয়েছেন। টিকরী সীমানায় রয়েছে ৬০ হাজার কৃষক। পালওয়ালে হাজার তিনেক কৃষক রয়েছেন। গাজিপুরেও তাই। পঞ্জাব থেকে আরও দেড় হাজার গাড়ি-ট্রাক্টর-ট্রলি ভর্তি মানুষ দিল্লির দিকে রওনা হয়েছেন। কৃষকদের আটকাতে হরিয়ানা সরকারই রাস্তা খুঁড়ছে বলে কৃষক নেতাদের অভিযোগ।