সিঙ্ঘু সীমানায় এখনও আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন হাজার হাজার কৃষক। ছবি: পিটিআই।
বিতর্কিত কৃষি আইন নিয়ে আরও একদফা আলোচনায় বসতে রাজি হলেন আন্দোলনকারী কৃষকরা। আগামী বুধবার দু’পক্ষের মধ্যে ফের আলোচনা স্থির হয়েছে। তাতে বিতর্কিত তিনটি আইন সম্পূর্ণ ভাবে প্রত্যাহার করা হবে, নাকি সেগুলি সংশোধন করা হবে, ওই দিনই তা চূড়ান্ত হয়ে পারে বলে সূত্রের খবর। তবে নিজেদের দাবি থেকে একচুলও নড়তে নারাজ আন্দোলনকারী কৃষকরা। কেন্দ্রের কোর্টে বল ঠেলে দিয়ে তাঁরা জানিয়েছেন, এ নিয়ে কেন্দ্রকেই সমাধানসূত্র বার করতে হবে। তা না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন তুলে নেওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই।
কৃষকরা প্রথমে বলেছিলেন, আইন প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত কোনও আলোচনায় তাঁরা যাবেন না। কিন্তু শনিবার আলোচনা শেষে তাঁদের অনড় অবস্থানের কিছুটা বদল হল।
সূত্রের খবর, শনিবারের বৈঠকে ফের কৃষি আইন বাতিলের দাবি তোলেন কৃষক সংগঠনগুলির প্রতিনিধিরা। কিন্তু আইন প্রত্যাহারে নারাজ কেন্দ্র। সে কথাও সরকারের তরফেও স্পষ্ট করে দেওয়া হয়। কৃষকরাও নিজেদের দাবিতে অনড় থাকেন। বৈঠকের সিদ্ধান্ত নিয়ে কেন্দ্রের কোর্টেই বল ঠেলে দেন কৃষকরা। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, শনিবারও কেন্দ্রের তরফে কৃষক সংগঠনগুলির প্রতিনিধিদের চা এবং খাবার দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তা আগের দিনের মতোই প্রত্যাখ্যান করেন প্রতিনিধিরা। তাঁরা নিজেদের আনা চা এবং খাবার খান।
আরও পড়ুন: কোভ্যাক্সিন নেওয়ার পর করোনা ধরা পড়ল হরিয়ানার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর
আরও পড়ুন: কৃষি আইন নিয়ে বিজেপি বিরোধিতায় আঞ্চলিক দলগুলির জোট চান মমতা
বিজ্ঞান ভবনে বৈঠকের সময় কৃষকদের একটি দল গ্রেটার নয়ডা দিয়ে দিল্লিতে ঢোকার চেষ্টা করে। কিন্তু তাঁদের যমুনা এক্সপ্রেস ওয়েতে আটকে দেওয়া হয়। দিল্লি পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দেশের রাজধানীর সিংঘু, অচণ্ডী, লামপুর, পিয়াও মানিয়ারি এবং মঙ্গেশ সীমানা এখনও বন্ধই রয়েছে। ৪৪ নম্বর জাতীয় সড়কের দু’দিক বন্ধ করে রাখা হয়েছে। যাত্রীদের বলা হয়েছে, আউটার রিং রোড এবং জিটিকে রোডও এড়িয়ে যেতে। সাফিয়াবাদ, ধানসা, কাপাসেরা, রাজোক্রি, পলাম বিহার এবং দৌন্দেরার রাস্তা ব্যবহারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
শনিবার সকালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাসভবনে গিয়ে বৈঠকে বসেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ, রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়াল এবং কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিংহ তোমর। সূত্রের খবর, কৃষকদের দাবি মেনে নয়া কৃষি আইনে সংশোধনী আনতে পারে মোদী সরকার। বিলে কী ধরনের সংশোধনী আনা হতে পারে, তা নিয়েই মোদীর সঙ্গে আলোচনা করেন অমিত-রাজনাথরা। এর পর বৈঠকে কৃষকদের লিখিত প্রস্তাবনা দেওয়া হয় বলেই সূত্রের খবর। সেই প্রস্তাব নিয়ে আলোচনাও হয়। কিন্তু শেষমেশ বরফ গলেনি। কৃষকরা নিজেদের অবস্থানে অনড় থাকেন। তাঁরা ওই বিলের ৩৯টি ত্রুটি তুলে ধরেন। তাঁদের একমাত্র দাবি, এই আইন প্রত্যাহার করতে হবে। এর পরই কেন্দ্রের কোর্টে বল ঠেলে দেন কৃষকরা। কৃষকরা বলেন, সমাধানসূত্র কেন্দ্রকেই বার করতে হবে।