জাতীয় সড়কে কৃষক-বিক্ষোভ। জ্বলল হিংসার আগুন। ছবি: সংগৃহীত।
জমি অধিগ্রহণকে কেন্দ্র করে কৃষক বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠল মহারাষ্ট্র। রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সরব হলেন কৃষকেরা। কৃষক-পুলিশ সংঘর্ষে হিংসার আগুন জ্বলল ঠাণে-বদলাপুর জাতীয় সড়ক-সহ রাজ্যের নানা প্রান্তে। ঘটনায় আহত হয়েছেন পুলিশকর্মী-সহ ১৪ জন। পরিস্থিতি সামাল দিতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার সকালে জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন বিক্ষুব্ধ কৃষকেরা। পুলিশের গাড়িতে অগ্নিসংযোগ-সহ একাধিক গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। প্রতিবাদীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে পরিস্থিতি আরও বিগড়ে যায়।
আরও পড়ুন
১ জুলাই থেকে কীসে বেশি খরচ, কীসে কম, দেখুন এক নজরে
হঠাত্ করে এমন পরিস্থিতি তৈরি হল কেন?
উত্তর-পূর্ব মুম্বই থেকে প্রায় ৪৫ কিলোমিটার দূরে নাভেলিতে পরিত্যক্ত এক বিমানঘাঁটিতে একটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর গড়তে চায় মহারাষ্ট্র সরকার। প্রস্তাবিত প্রকল্পের জন্য ওই এলাকায় প্রায় ১৬ হাজার একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। কৃষকদের দাবি, জোর করেই ওই জমি কেড়ে নেওয়া হয়েছে। রাজ্য সরকারের যদিও পাল্টা দাবি, বেআইনি ভাবে ওই এলাকার জমি দখল করে রেখেছিলেন কৃষকেরা। চলতি মাসের গোড়াতে বিষয়টির মীমাংসা চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন বিক্ষুব্ধ কৃষকদের একাংশ। এ নিয়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে বম্বে হাইকোর্টে মামলাও দায়ের হয়েছে। সেই মামলার আবেদনে বলা হয়েছে, ১৯৪৩-এর ফেব্রুয়ারিতে ঠাণে জেলাশাসকের একটি আদেশনামার ভিত্তিতে ওই জমি অধিগ্রহণ করে সরকার। আদেশনামার বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে ওই অধিগ্রহণকে বেআইনি বলে দাবি করা হয়েছে। যদিও একটি বিবৃতিতে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কম্যান্ডার রাহুল সিংহ জানিয়েছেন, জমিটি আসলে সরকারি। তার মালিকানা রয়েছে সেনা, নৌসেনা ও রাজ্য সরকারের কাছে। এবং বিভিন্ন নথিতে তার প্রমাণও রয়েছে।
ঠাণে-বদলাপুর জাতীয় সড়কে অশান্তির এই দৃশ্যই দেখা গেল। ছবি: সংগৃহীত।
পুলিশের এক শীর্ষকর্তা জানিয়েছেন, এ দিন সকাল ৮টা থেকেই ঠাণে-বদলাপুর জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন ১৭টি গ্রামের কৃষকেরা। ব্যস্ত রাস্তায় যান চলাচল রুখতে বেশ কয়েকটি গাড়ির টায়ার পুড়িয়ে দেন তাঁরা। জাতীয় সড়ক ছাড়াও নাভেলির একাধিক জায়গা অবরোধ করা হয়। তবে, সবচেয়ে বড় জমায়েত হয়েছিল জাতীয় সড়কে। পুলিশ এসে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করতে গেলে এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। পুলিশের সঙ্গে হাতাহাতি, মারপিট বেধে যায় প্রতিবাদীদের। পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছোড়াও হয় বলে অভিযোগ। পুলিশের একটি গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। সংঘর্ষে জখম হয়েছেন এক কমিশনার-সহ ১০ জন পুলিশকর্মী। আহত হয়েছেন ৪ জন কৃষক। সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান পুলিশের শীর্ষকর্তারা। আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলাকায় বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।