কৃষি বিল নিয়ে বিরোধীদের তীব্র আক্রমণ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর।
তিনটি কৃষি বিলের প্রতিবাদে দেশ জুড়ে বিক্ষোভ-অবরোধ চলছিলই। সোমবার সেই আন্দোলন পৌঁছে গিয়েছিল রাজধানী দিল্লিতে। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই বিরোধীদের এক হাত নিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিরোধীরা কৃষকদের ভুল বুঝিয়ে উস্কানি দিচ্ছে বলে আগেই অভিযোগ তুলেছিলেন মোদী। এ বার চাষিদের ভাবাবেগকে কাজে লাগাতে তাঁর আক্রমণ, বিলের বিরোধিতা যাঁরা করছেন, তাঁরা কৃষকদের অপমান করছেন। নাম না করে কংগ্রেসকে খোঁচা দিয়ে বলেছেন, কালো টাকা রোজগারের উৎস বন্ধ হওয়াতেই কৃষকদের ভুল বোঝানো হচ্ছে।
উপলক্ষ ছিল উত্তরাখণ্ডের একাধিক উন্নয়ন প্রকল্পের সূচনা। ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে সেই অনুষ্ঠানে কৃষি বিলের প্রসঙ্গ টেনে আনেন মোদী। বলেন, ‘‘কৃষক ও কৃষি-শ্রমিক ও তাঁদের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত একাধিক বিল পাশ হয়েছে সদ্য শেষ হওয়া সংসদের অধিবেশনে। এই সংস্কারগুলি দিনমজুর, যুব সম্প্রদায়, মহিলা ও কৃষকদের শক্তিশালী করবে। কিন্তু দেশ দেখছে কী ভাবে কেউ কেউ শুধু বিরোধিতার জন্যই বিরোধিতা করছেন।’’
দিল্লিতে সোমবার সকালে বিক্ষোভ দেখানোর পাশাপাশি একটি ট্রাক্টরে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিলেন বিক্ষোভকারীরা। সংসদ ভবন ও রাষ্ট্রপতি ভবনের ১০০ মিটারের মধ্যে এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছে দিল্লি পুলিশ। তাঁরা সবাই পঞ্জাবের বাসিন্দা। দেশের অন্যান্য প্রান্তেও এমন ঘটনার নজির রয়েছে। সেই প্রসঙ্গ টেনে কৃষকদের আবেগকে নিজের দিকে টানার চেষ্টা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর বক্তব্য, ‘‘কৃষির সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতিকে কৃষকরা পুজো করেন। সেই যন্ত্রপাতি যাঁরা পোড়াচ্ছেন, তাঁরা অপমান করছেন কৃষকদের।’’
আরও পড়ুন: মোদী সরকারের সমালোচনার ‘শাস্তি’! ভারতে সব অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ, হাত গোটাল অ্যামনেস্টি
কৃষি বিলগুলি পাশ হওয়ায় চাষিরা তাঁদের উৎপাদিত ফসল শুধুমাত্র সরকারি প্রতিনিধিকে ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে বিক্রি করতে বাধ্য নন। বিরোধীদের অভিযোগ, এর ফলে ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের ধারণাই উঠে যাবে। কৃষকরা কম দামে ফসল-আনাজ বিক্রি করতে বাধ্য হবেন। সেই স্বাধীনতার বিষয়টি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী এ দিন বিরোধীদের নিশানা করে বলেন, ‘‘দেশে শুধু যে সহায়ক মূল্য থাকবে তাই নয়, চাষিরা তাঁদের পণ্য যেখানে খুশি বিক্রি করতে পারবেন। কিন্তু কিছু মানুষ সেই স্বাধীনতা মেনে নিতে পারছেন না। তাঁদের কালো টাকা রোজগারের আরও একটি পথ বন্ধ হয়ে গেল।’’
আরও পড়ুন: অবশেষে কাল বাবরি মসজিদ মামলার রায়, চার নজরে ২৮ বছর
কংগ্রেসের নাম না করেও মোদীর খোঁচা, বিরোধীদের এই রাজনীতির পিছনে রয়েছে এমন একটি দল, যারা চার পুরুষ ধরে অন্যের উপর নির্ভর করে ক্ষমতা ভোগ করে আসছে। এটা তাদের হতাশার বহিপ্রকাশ বলেও মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।