হোশিয়ারপুরের জনসভায় সুখবীর সিংহ বাদল।—ছবি পিটিআই।
এনডিএ ছেড়ে বেরোনোর এক দিনের মাথায় ‘চাষিদের স্বার্থরক্ষা’য় বিজেপি তথা এনডিএ-র বিরুদ্ধে বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দিল শিরোমণি অকালি দল। আজ অকালি দলের প্রধান সুখবীর সিংহ বাদল চাষিদের স্বার্থের কথা মাথায় রেখে অবিলম্বে সব বিরোধী দলকে কেন্দ্রের কৃষি-বিরোধী নীতির বিরুদ্ধে একজোট হওয়ার ডাক দেন। পঞ্জাবের রাজ্য রাজনীতির বাধ্যবাধকতায় কংগ্রেস এ নিয়ে নীরব থাকলেও তৃণমূল ও শিবসেনার মতো বিরোধীরা বাদলের পাশে দাঁড়িয়ে মুখ খুলেছে।
কৃষি বিল নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে প্রথমে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা ও পরে গত কাল এনডিএ থেকে বেরিয়ে এসেছে বিজেপির সবথেকে পুরনো সঙ্গী অকালি দল। তার পরেই আজ হোশিয়ারপুরের জনসভায় বাদল বলেন, ‘‘নতুন যে সব সংস্কারমুখী বিল সরকার এনেছে, তা কৃষকদের রোজগারকে অনিশ্চিত করে তুলবে। তাই অকালি দল বিরোধীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে একজোট হয়ে আন্দোলনে নামার পক্ষপাতী।’’
পঞ্জাবের কংগ্রেসি মুখ্যমন্ত্রী অমরেন্দ্র সিংহ অবশ্য এ দিনও খোঁচা দিয়ে বলেছেন, কৃষি বিল নিয়ে চাষিদের বিক্ষোভ খাদের কিনারায় ঠেলে দিয়েছিল অকালিকে। সে কারণেই তাদের এই ভোল বদল। কিন্তু বাদলের ডাকে সাড়া দিয়েছে তৃণমূল ও শিবসেনা। তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন টুইট করে বলেন, ‘কৃষকদের স্বার্থে বাদল ও অকালি দলের পাশে রয়েছে তৃণমূল। কৃষকদের জন্য আন্দোলন তৃণমূলের রক্তে রয়েছে।’ শিবসেনার নেতা সঞ্জয় রাউত বলেন, “কৃষকদের স্বার্থে অকালির এনডিএ ছাড়ার সিদ্ধান্তকে শিবসেনা সমর্থন করে।”
আরও পড়ুন: ভোটের মুখে জয়প্রকাশ, রাজমাতাকে স্মরণ মোদীর
দু’বছর পরে পঞ্জাবে নির্বাচন। অকালির সঙ্গে হাত মিলিয়ে ওই রাজ্যে ক্ষমতা দখলের ছক কষছিলেন অমিত শাহেরা। বর্তমান পরিস্থিতি বজায় থাকলে আগামী দিনে ত্রিমুখী লড়াই হতে চলেছে পঞ্জাবে। তাতে জেতার সম্ভাবনা নেই বলেই বুঝতে পারছে বিজেপি। বাদলেরা যখন সঙ্গে ছিলেন, তখন বাদল-বিরোধী কিছু বিক্ষুব্ধ অকালি নেতা বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে চলছিলেন। কিন্তু এখন সেই বিক্ষুব্ধদেরও পাশে পাওয়া যাবে না বলে ধরে নিয়েছে বিজেপি। বিজেপি নেতৃত্বের ব্যাখ্যা, শিরোমণি পুরনো শরিক ঠিকই, কিন্তু বিজেপি নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে ক্ষমতায় রয়েছে। সরকার চালানোয় হস্তক্ষেপ মানা হবে না। আবার অকালি নেতারা মনে করছেন, শরিকদের সঙ্গে সমীকরণটাই পাল্টে গিয়েছে। বলবিন্দর সিংহ ভুন্দর বলেন, “বিজেপির সঙ্গে অকালির চার দশকের সম্পর্ক। কিন্তু এখন বাজপেয়ী জমানার মতো শরিকদের কথা আর গুরুত্ব দিয়ে শোনা হয় না।” অকালির রাজ্যসভা সাংসদ নরেশ গুজরালের মতে, “অরুণ জেটলি চলে যাওয়ার পরে পঞ্জাবকে বোঝার মতো কোনও নেতাই নেই বিজেপিতে। পঞ্জাবের মানুষ যে খেপে রয়েছেন, সেটাই বুঝতে পারছে না কেন্দ্র।” শিবসেনার সঞ্জয় রাউত আর এক ধাপ এগিয়ে দাবি করেন, বিজেপি জোটকে আর এনডিএ বলাই উচিত নয়। কারণ শিবসেনা কিংবা অকালি পুরনো কোনও দলই আজ জোটে নেই।
আরও পড়ুন: নয়া আইনে লাভ চাষিদেরই: মোদী