প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
আলফার সঙ্গে অসম ও কেন্দ্রের ত্রিপাক্ষিক শান্তি চুক্তির ১২ ঘণ্টার মধ্যেই আলোচনাপন্থী আলফায় ভাঙনের ইঙ্গিত করে বেনামি একটি বিবৃতি ভাইরাল হল রাজ্যে। আলফার লেটারহেডে টাইপ করা কিন্তু প্রেরকের নামহীন ওই বিবৃতিতে দাবি করা হল, সাধারণ সদস্যদের সঙ্গে কোনও রকম আলোচনা না করেই অরবিন্দ রাজখোয়া, অনুপ চেতিয়া, শশধর চৌধুরিরা কেন্দ্রের সঙ্গে চুক্তি সেরেছেন। চুক্তিতে অসমকে পূর্ণাঙ্গ স্বশাসিত প্রদেশ ঘোষণা না করা, অসমের জন্য পৃথক প্রশাসনের ব্যবস্থা না করা, অসমের ভূগর্ভস্থ সম্পদে অসমিয়ার অধিকার নিশ্চিত করার কথা না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলা হয়েছে, “চেতিয়া-রাজখোয়ারা কিছু টাকার বিনিময়ে আলফার এত দিনের সংগ্রাম, এত সতীর্থের বলিদান বিক্রি করে দিয়েছেন। তাই আমরা বেশিরভাগ সংগ্রামী সেনানী চুক্তি করা নেতাদের বাদ দিয়েই সংযুক্ত মুক্তি বাহিনী অসম (আলফা) সংগঠনকে বাঁচিয়ে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এ নিয়ে গোপন বৈঠক হয়েছে কলিয়াবরে।”
আলফার স্বাক্ষরকারী সাধারণ সম্পাদক অনুপ চেতিয়া বলেন, ‘‘মনে হচ্ছে পরিকল্পনা করে এ সব ছড়ানো হচ্ছে। সাহস থাকলে তারা নাম-সহ বিবৃতি প্রকাশ করুক।’’ তাঁর কথায়, ‘‘ওই বিবৃতি সম্ভবত ভুয়ো। কেউ ইচ্ছে করে ভুল বোঝাবুঝি তৈরি করতে আলফার লেটারহেডের অপব্যবহার করে ওই ভুয়ো বিবৃতি ছড়িয়ে দিয়েছে। আমাদের সংগঠনের ভিতরে কোনও মতান্তর নেই।’’ অসম পুলিশের এডিজি (বিশেষ শাখা) হীরেন নাথও ওই বিবৃতিতে পাত্তা দিতে নারাজ।
গত কালই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানান, শান্তি চুক্তির পরে আলফা ভেঙে দেওয়া হবে। সামনেই লোকসভা ভোট। শোনা যাচ্ছে, আলফার শীর্ষ নেতারা রাজনীতিতে যোগ দিতে পারেন। অবশ্য ‘বিদেশসচিব’ শশধর চৌধুরি বলেন, ‘‘আমি মনে করি না আলফা নেতৃত্ব এই নির্বাচনে অংশ নেবেন।’’
আলফার মূল দাবিগুলি বাদ দিয়েই করা চুক্তির পিছনে নেতাদের অসহায়তাও রয়েছে। চেতিয়া সাংবাদিকদের জানান, কী পরিস্থিতিতে আলফা নেতারা চুক্তি করলেন- তাও বিচার্য। তাঁর কথায়, ‘‘চুক্তির স্বার্থে ১৭ বছর বাংলাদেশে বন্দি থাকার পরে আমি দেশে ফিরতে পেরেছি। আমাদের হাতে মাত্র ১৩টি রাইফেল ছিল। এই ১৩টি রাইফেল থাকা সংগঠনকেও পর্যাপ্ত গুরুত্ব দিয়ে কেন্দ্র আলোচনায় বসেছে, যা দেওয়ার দিয়েছে। আমরা সন্তুষ্ট। অসমবাসীর জন্য কিছু হলেও আনতে পেরেছি। বাকিটা পরেশ বরুয়া এসে অর্জন করুন।’’ আলফার পরেশ বরুয়া গোষ্ঠী তথা আলফা স্বাধীনকে বাদ দিয়েই চুক্তি হয়েছে।