ক্যামেরা হাতে মোদীর ছবি ভাইরাল। ছবি: টুইটার
মধ্যপ্রদেশের জাতীয় উদ্যানে চিতাদের খাঁচামুক্ত করার পর তাদের ছবি তুলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বেশ কিছু ক্ষণ পশুগুলির দিকে তাঁকে ক্যামেরা তাক করে রাখতে দেখা গিয়েছিল। তার পর থেকেই নেটমাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কিছু ছবি ঘুরছে। দাবি করা হচ্ছে, ক্যামেরার সামনে থেকে লেন্সক্যাপ না খুলেই ছবি তুলছিলেন তিনি। এ নিয়ে ঠাট্টা-তামাশাও চলছে শনিবার থেকেই।
নেটমাধ্যমে ক্যামেরা হাতে মোদীর দু’ধরনের ছবি ভাইরাল হয়েছে। একটি ছবিতে দেখা গিয়েছে, যে ক্যামেরা তিনি ধরে রয়েছেন, তার লেন্সক্যাপের অংশটি অন্ধকার। তা খোলা রয়েছে না বন্ধ, পরিষ্কার বোঝার উপায় নেই। কংগ্রেসের একাধিক নেতা এই ছবি দেখিয়ে ঠাট্টা করেছেন। তাঁদের দাবি, ছবি তোলা সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীর সাধারণ জ্ঞানটুকুও নেই।
ভাইরাল ছবি। ছবি: টুইটার
অন্য একটি ছবিও ঘুরছে নেটমাধ্যমে। তাতে দেখা গিয়েছে, যে ক্যামেরা মোদী ধরে রয়েছেন, তার লেন্সক্যাপের অংশে মোটা হরফে লেখা ‘ক্যানন’। বন্ধ লেন্সক্যাপের উপর ক্যামেরা প্রস্তুতকারী সংস্থার নাম এ ভাবেই লেখা থাকে।
ক্যামেরা হাতে প্রধানমন্ত্রী। ছবি: টুইটার
সংবাদ সংস্থা ওপিইন্ডিয়া প্রধানমন্ত্রীর ভাইরাল ছবিগুলির সত্যতা যাচাই করেছে। তারা দেখিয়েছে, দু’টি ছবির কোনওটাই ঠিক নয়। ওপিইন্ডিয়া-র বক্তব্য, প্রধানমন্ত্রী ‘নিকন’ সংস্থার একটি ক্যামেরা ব্যবহার করছিলেন। তাতে জুম লেন্স লাগানো ছিল। নিকনের ক্যামেরাগুলিতে লেন্সের বাইরে মোটা হরফে সংস্থার নাম লেখা থাকে। ভাইরাল ছবিতে তেমন কিছুই দেখা যায়নি। সুতরাং, মোদীর হাতের ক্যামেরাতে লেন্স খোলাই ছিল, দাবি ওই সংস্থার।
ওপিইন্ডিয়া আরও জানিয়েছে, মোদীর ছবিটি জুম করলে খুব হালকা ভাবে লেন্সের চারধারের লেখা দেখা যাচ্ছে। ইউভি লেন্স ফিল্টারের কারণে এই লেখা দেখা যাচ্ছে বলে দাবি। লেন্সের কাচকে বাইরের ধুলোবালি থেকে রক্ষা করার জন্য এই ফিল্টার ব্যবহার করা হয়ে থাকে। ফিল্টারটি খোলা থাকলে দূর থেকে লেন্সের কাচ দেখা যায় না বললেই চলে। এ ক্ষেত্রে আলোর কারণে তা একেবারেই দেখা যায়নি, দাবি ওপিইন্ডিয়া-র।
দ্বিতীয় ছবিটির লেন্সের জায়গায় ‘ক্যানন’ লেখা রয়েছে। অথচ, ক্যামেরার ফ্ল্যাশের জায়গায় দেখা যাচ্ছে ‘নিকন’-এর নাম। ওপিইন্ডিয়া-র দাবি, মূল ছবিটি বাঁ দিকে ঘোরানো। তা ডান দিকে ঘুরিয়ে ক্যানন-এর লেন্সক্যাপ বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই ছবি যিনি এডিট করেছেন, উপরে যে নিকন লেখা রয়েছে, তা তিনি খেয়ালই করেননি বলে জানিয়েছে ওই সংবাদ সংস্থা। তাদের আরও দাবি, ক্যামেরা প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলির লেন্সের আকার সব সময় আলাদা হয়। ছবিটি তৈরির সময় তা-ও খেয়াল করা হয়নি। সেই কারণেই নিকনের ক্যামেরায় বসানো হয়েছে ক্যাননের লেন্স।
ভাইরাল দু’টি ছবিই কংগ্রেসের নেতারা নেটমাধ্যমে শেয়ার করেছেন। অন্যান্য বিরোধী দলগুলির কর্মী সমর্থকেরাও ছবি শেয়ার করে ঠাট্টায় যোগ দিয়েছেন। কিন্তু ওপিইন্ডিয়া সত্যতা যাচাই করে দেখিয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর ক্যামেরার লেন্স সংক্রান্ত দাবি আসলে ভুয়ো।