খাবারের বাসন চাটছেন এক দল যুবক। এই ভিডিয়োই ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। ছবি: ভিডিয়ো থেকে নেওয়া
কী ছড়িয়েছে?
একটি ভিডিয়ো যাতে দেখা যাচ্ছে এক দল যুবক বসে খালি থালা বাসন চাটছেন। ভিডিয়োটি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে যে এ ভাবেই ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে করোনাভাইরাস সংক্রমণ।
কোথায় ছড়িয়েছে?
হোয়াটস্অ্যাপে, টুইটার ও ফেসবুকে এই ভিডিয়ো ছড়িয়েছে। ফেসবুকে এই ভিডিয়োর সঙ্গে ছড়িয়ে পড়া একটি পোস্টে দাবি করা হচ্ছে যে ১৪ জন চিনা মুসলিমকে বিহারের একটি মসজিদ থেকে করোনাভাইরাস পরীক্ষা করাতে নিয়ে যাোয়া হয়েছে, তামিলনাড়ুর ইরোড থেকে পুলিশ তাইল্যান্ডের করোনাভাইরাস আক্রান্ত মুসলমানদের গ্রেফতার করেছে। তামিলনাড়ুর সালেমের একটি মসজিদ থেকে ইন্দোনেশিয়া থেকে আসা ১১ জন মুসলমানকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সেই সঙ্গে রয়েছে এই ভিডিয়োর বিবরণ।
অপর একটি ফেসবুক পোস্টে এই ভিডিয়ো শেয়ার করে দাবি করা হয়েছে এই ঘটনা দিল্লির নিজামউদ্দিনের।
এই তথ্য কি সঠিক?
না, এই সব দাবি একবারেই ঠিক নয়।
সত্যি কী এবং আনন্দবাজার কী ভাবে তা যাচাই করল?
এই ভিডিয়োটি ২০১৮ সালের। এই ভিডিয়োতে যে যুবকদের দেখা যাচ্ছে তাঁরা মুসলিমদের দাউদি বোহরা গোষ্ঠীর। এই ভিডিয়োতে যেটা দেখা যাচ্ছে সেটি বোহরা মুসলমানদের একটি রীতি। খাবারের অপচয় না করতে তাঁরা এমনটা করে থাকেন। আমরা এই গোষ্ঠীর একটি ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টও ঘেঁটে দেখি। সেখানে বিভিন্ন পোস্ট থেকে তাঁদের এই রীতি সম্পর্কে আরও জানা যায়। যেমন এই পোস্টটি
A post shared by Dana Committee International (@dana_committee) on
গুগ্ল–এ ‘Muslims licking utensils’ লিখলে ভিমিও-র একটি লিঙ্ক পাওয়া যায়।
এই ভিডিয়োতে লেখা বিবরণ অনুযায়ী, এই মুসলিমরা বোহরা গোষ্ঠীর। এই গোষ্ঠীর প্রধান ধর্মযাজক সঈদনা মুফদ্দল সইফউদ্দিনের কথা অক্ষরে অক্ষরে পালন করেন বোহরা মুসলমানরা। তাঁর মতবাদ হল, খাবারের একটা দানাও নষ্ট না করা। বোহরা মুসলিমরা একটি বড় থালার চারপাশে ৬-৭ জন বসে খাবার খান। এই থালাকে বলে থাল। এর পর সকলের খাওয়া হয়ে গেলে বোহরা মুসলমানরা এ ভাবে প্লেট পরিষ্কার করেন।
ভিডিয়োটি প্রথম আপলোড হয় দু’বছর আগে।
২০১৮ সালের ৩১ জুলাই আপলোড করা হয়েছিল ভিডিয়োটি। তার মানে এর সঙ্গে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে দেওয়ার কোনও সম্পর্ক নেই। এই প্রতিবেদবন প্রকাশ হওয়া পর্যন্ত বিহার, ইরোড বা সালেম থেকে কোনও মুসলমানের গ্রেফতার হওয়ারও খবর নেই।
হোয়াটস্অ্যাপ, ফেসবুক, টুইটারে যা-ই দেখবেন, তা-ই বিশ্বাস করবেন না। শেয়ারও করে দেবেন না। বিশেষত এই আতঙ্কগ্রস্ত অবস্থায় তো তো নয়ই। এ ভাবেই ছড়িয়ে পড়ে ভুয়ো খবর। যাচাই করুন। কোনও খবর, তথ্য, ছবি বা ভিডিয়ো নিয়ে মনে সংশয় দেখা দিলে আমাদের জানান এই ঠিকানায় feedback@abpdigital.in