এমনই ১০০০ বেডের কোয়রান্টিন সেন্টার বানানোর পোস্ট ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
কী তথ্য ছড়িয়েছে:
করোনাভাইরাস আক্রান্তদের চিকিৎসায় সেনাবাহিনী মাত্র দু’দিনে রাজস্থানের বারমেঢ়ে ১ হাজার বেডের হাসপাতাল তৈরি করেছে। চিনের চেয়েও তাড়াতাড়ি তৈরি হয়েছে এই হাজার শয্যার হাসপাতাল। যত পারেন এই খবর শেয়ার করুন, ভারতীয় সেনাবাহিনীর পাশে দাঁড়ান।
এই বার্তার সপক্ষে রয়েছে তিনটি ছবিও।
কোথায় ছড়িয়েছে:
ফেসবুক, টুইটারে ছড়িয়ে পড়েছে এই তথ্য। কোনও কোনও পোস্টে আবার লেখা, কেন্দ্রীয় সরকারকে উৎসর্গ করা হয়েছে এই হাসপাতাল।
এই তথ্য কি সঠিক?
না, এই খবরের কোনও সত্যতা নেই।
সত্য কী এবং আনন্দবাজার সেটা কী ভাবে যাচাই করল:
ভারতীয় সেনাবাহিনীর তরফেই জানানো হয়েছে, এই খবর ঠিক নয়। গত ২৩ মার্চ তারা টুইটার এবং ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে পোস্ট করে জানায়, বারমেঢ়ে ১ হাজার বেডের ওই হাসপাতাল গড়ে তোলার খবরটি ভুয়ো। সে দিন পর্যন্ত শুধুমাত্র হরিয়ানার মানেসর এবং রাজস্থানের জয়সলমেরেই গড়ে উঠেছে সেনাবাহিনীর কোয়রান্টিন কেন্দ্র।
A post shared by Indian Army (@indianarmy.adgpi) on
এই ছবিগুলি তা হলে কিসের?
প্রথম ছবি:
গুগ্লে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে দেখা গিয়েছে, ছবিটা প্রথম ব্যবহার হয় কিরঘিজস্তানের ‘ট্রেন্ড’ ওয়েবসাইটে ২০১৯-এর ১১ সেপ্টেম্বরের একটি প্রতিবেদনে।
পরবর্তীতে আজারবাইজানের aze.az ওয়েবসাইটে গত ২৮ ফেব্রুয়ারির একটি প্রতিবেদনেও এই একই ছবি ব্যবহার করা হয়।
অতএব, এটি যে বারমেঢ়ের সেনা হাসপাতাল নয়, তা একেবারেই নিশ্চিত।
দ্বিতীয় ছবি
তাঁবুর মধ্যে নীল রঙের বেডের ছবিটি মার্কিন বিমানবাহিনীর মোবাইল ফিল্ড হাসপাতালের। ৬০০ বেডের অস্থায়ী হাসপাতালের এই ছবিটি প্রথম বার ব্যবহার হয়েছিল ২০০৮-এর নভেম্বরে, মার্কিন বিমানবাহিনীর মার্চ এয়ার রিজার্ভ বেস-এর একটি প্রতিবেদনে। অর্থাৎ এই ছবিটি ১২ বছর আগেকার!
তৃতীয় ছবি
একদল সেনার এই ছবিটি ২০১৫ সালের। সে বছর নেপালে ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর উদ্ধারকাজে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল ভারতীয় সেনাবাহিনী। ২৮ এপ্রিল প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরো কাঠমাণ্ডু বিমানঘাঁটির এই ছবি প্রকাশ করে। ছবিতে যাঁদের দেখা যাচ্ছে, তাঁরা সকলেই আর্মি মেডিক্যাল কোরের সদস্য।
ভাইরাল হওয়া তিনটি ছবি বিভিন্ন জায়গার, বিভিন্ন সময়ের। অথচ সেই ছবিগুলিই করোনা সংক্রান্ত খবরের সঙ্গে জড়িয়ে তুমুল শেয়ার হচ্ছে।
হোয়াটস্অ্যাপে, ফেসবুক, টুইটারে যা-ই দেখবেন, তা-ই বিশ্বাস করবেন না। শেয়ারও করে দেবেন না। বিশেষত এই আতঙ্কের মধ্যে তো নয়ই। এ ভাবেই ছড়িয়ে পড়ে ভুয়ো খবর। যাচাই করুন। কোনও খবর, তথ্য, ছবি বা ভিডিয়ো নিয়ে মনে সংশয় দেখা দিলে আমাদের জানান এই ঠিকানায় feedback@abpdigital.in।
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।