কোনারকের সূর্যমন্দির।
মন্দিরটি যাতে ভেঙে না পড়ে, তার জন্য মন্দিরের ভিতরের একটি ঘরে বালি ভর্তি করে রাখা হয়েছিল। সেটা ১১৮ বছর আগের কথা, ব্রিটিশ আমলের ঘটনা। এত দিন পরে এ বার পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ (এএসআই) কোনারকের সূর্যমন্দির থেকে সেই বালি সরানোর কথা ভাবছে।
চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি। তবে ভুবনেশ্বর আইআইটি আয়োজিত একটি তিন দিনের কর্মশালায় সম্প্রতি পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের ভুবনেশ্বর সার্কল-এর প্রধান অরুণ মালিক বালি সরানো নিয়ে ভাবনাচিন্তার কথা বলেন।
এ বিষয়ে আলাপ আলোচনার সূত্রপাত অবশ্য আরও আগে। গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে সূর্যমন্দিরের রক্ষণাবেক্ষণ প্রসঙ্গেই দু’দিনের একটি জাতীয় সম্মেলন হয়। তৎকালীন কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রী প্রহ্লাদ সিংহ পটেল তখনই এএসআই-কে বলেছিলেন, নিরাপদে কী ভাবে বালি সরানো যায়, তার একটি রিপোর্ট তৈরি করতে। কারণ তার আগে ২০১৯-এর একটি সমীক্ষায় ধরা পড়েছিল যে, বালি ক্রমশ জমাট বাঁধছে। এবং তার ফলে বালির স্তূপ এবং মন্দিরের কাঠামোর মধ্যে প্রায় ১৭ ফুট দূরত্ব তৈরি হয়েছে। তাতে মন্দিরের ক্ষতি হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা।
এই সমীক্ষাটি করেছিল সেন্ট্রাল বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট (সিবিআরআই)। সিবিআরআই-এর পরামর্শ ছিল, হয় ওই ১৭ ফুট জায়গা নতুন বালি দিয়ে ভর্তি করতে হবে। নতুবা সমস্ত বালি বার করে এনে কাঠামোটি বাঁচানোর জন্য নতুন পন্থা ভাবতে হবে। তারা আশ্বাস দিয়েছিল, ১৭ ফুটের এই ব্যবধান তৈরি হওয়া সত্ত্বেও কাঠামোটি এখনও স্থিতিশীল রয়েছে।
এর পরে এএসআই-এর চার সদস্যের কমিটি যে রিপোর্ট দিয়েছে, তাতে বালি সরানোর কথাই বলা হয়েছে। এএসআই এবং মাদ্রাজ আইআইটি একসঙ্গে কাজটি তত্ত্বাবধান করতে পারে বলে প্রস্তাব। ত্রয়োদশ শতকে তৈরি এই মন্দিরের অভ্যন্তরে যে গৃহে বালি ভরা আছে, তার নাম ‘জগমোহন’। এখানে ব্রিটিশরা একটি প্রবেশপথ তৈরি করেছিল। তার খুব কাছেই একটি ৬ ফুট লম্বা, ৬ ফুট চওড়া নতুন জানলা ফোটানোর কথা প্রাথমিক ভাবে ভাবা হচ্ছে। তার মধ্য দিয়ে ঢুকে ভিতরের অবস্থা পরীক্ষা করে দেখা সম্ভব হবে। জগমোহন অংশটি মন্দিরের একমাত্র অংশ, যা পুরোপুরি অক্ষত। আর একটা প্রবেশপথ তৈরি করা হতে পারে ভিতর-মন্দির বা ‘অন্তরালে’। কাজ চালানোর জন্য একটা মাচাও তৈরি করা হতে পারে সেখানে। পরীক্ষানিরীক্ষা সম্পূর্ণ হওয়ার পরেই বালি সরানোর জন্য দরপত্র চাওয়া হতে পারে।