লোকসভা ভোটের আগে দেশের সমস্ত রিটার্নিং অফিসারকে (আরও) ১০ মিনিটের একটি লিখিত পরীক্ষা ও একটি মৌখিক পরীক্ষা দিতে হবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
মুখ্য নির্বাচন কমিশনার ওম প্রকাশ রাওয়ত একান্ত সাক্ষাৎকারে এ খবর জানিয়ে বলেছেন, ‘‘ভোটের সময় রিটার্নিং অফিসারের হাতে থাকে চূড়ান্ত ক্ষমতা। ক্ষমতা অপব্যবহারের সুযোগ থাকে। তাই এই অফিসারদের সব আইন-কানুন খুব ভাল করে জানা দরকার। তাই পরীক্ষা’’ তাঁর দাবি, কর্নাটক নির্বাচনে কিছু ক্ষেত্রে পরীক্ষামূলক ভাবে এতে ভাল ফল মিলেছে। অন্য নির্বাচনী অফিসারেরও পরীক্ষা নেওয়া নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। এ ছাড়া, রিটার্নিং অফিসারের ভূমিকা দেখতে প্রত্যেক কেন্দ্রে কমিশন চার-পাঁচ জনের পর্যবেক্ষক দলও পাঠাবে
কমিশনের সিদ্ধান্তে আপত্তি রয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অরবিন্দ কেজরীবাল এবং চন্দ্রবাবু নায়ডুর। তাঁদের দলের বক্তব্য, এটা রাজ্যের অধিকারে হস্তক্ষেপ। এত দিন ধরে যে ভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে, সেটাই ভাল। ‘আরও’-দের পরীক্ষার নামে ভয় দেখানোর চেষ্টা হচ্ছে বলেও তাদের অভিযোগ।
নির্বাচন কমিশনের সূত্র বলছে, ভোট ঘোষণা হলে ‘আরও’-রা কমিশনের আওতায় আসেন। পরীক্ষায় পাশ করতে না-পারলে অফিসারকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা আছে কমিশনের। তৃণমূলের সন্দেহ, নির্বাচন কমিশনকে ব্যবহার করে আমলাদের মগজধোলাই করতে চায় কেন্দ্র। কংগ্রেসের বক্তব্য, কমিশন কী ভাবে, কোথায়, কার মাধ্যমে পরীক্ষা নেবে, না-জেনে তারা কিছু বলবে না। সব ঠিক থাকলে ১ জানুয়ারি থেকে রাজস্থান ক্যাডারের অফিসার সুনীল অরোরার মুখ্য নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার কথা। সুনীল প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। তাই তৃণমূল নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে, এই পরীক্ষা এবং অফিসারদের বদলি করার ক্ষমতার মধ্যে দিয়ে কেন্দ্র যাতে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতে না-পারে, তা দেখা দরকার। নির্বাচন কমিশন পাল্টা জানিয়েছে, তারা এই সিদ্ধান্তে অটল।
লোকসভার আসনসংখ্যা ৫৪২| সব মিলিয়ে ‘আরও’-র সংখ্যাও ৫৪২। সাধারণত জেলাশাসকেরাই রিটার্নিং অফিসার হন। যদি কোনও জেলায় একাধিক নির্বাচন কেন্দ্র থাকে, তা হলে জেলাশাসকের পাশাপাশি অতিরিক্ত জেলাশাসক অথবা মহকুমাশাসকদেরও রিটার্নিং অফিসার করা হয়।