দাওয়াই: মোদীর বই।
পাঁচ বছর অন্তর বোর্ডের পরীক্ষায় বসতে হয় তাঁকেও, লোকসভা নির্বাচনে। এ ছাড়াও বছরের মাঝখানে মাঝে-মধ্যেই ‘ক্লাস টেস্ট’-র মতো হয়ে থাকে বিধানসভা নির্বাচন। তিনি প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন, পরীক্ষায় বসা থেকে ছাড় নেই তাঁরও। নির্বাচনী যুদ্ধে নামার আগে তিনি যেমন ভয়-ডরহীন থাকেন, ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশে লেখা তাঁর প্রথম বইয়েও পরীক্ষাকে উৎসব হিসেবে নিয়ে ঝাঁপানোর পরামর্শ দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আজ মোদীর লেখা ‘একজাম ওয়ারিয়র’ বইটির উদ্বোধন করেন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ ও কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর।
পরীক্ষা ভীতি নিয়ে এর আগেও ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে মুখ খুলেছেন মোদী। এ নিয়ে একাধিক চিঠি আসার পরেই ওই বইয়ের অবতারণা। বইয়ে পরীক্ষার চাপ সামলাতে ২৫টি সূত্রের হদিস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। আজকের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী অবশ্য ছিলেন না। তবে পরীক্ষা প্রসঙ্গে ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলতে মাসের মাঝামাঝি তালকাটোরা স্টেডিয়ামে একটি সম্মেলনের আয়োজন করেছে কেন্দ্র। প্রকাশকরা বলছেন, শুধু বোর্ডের পরীক্ষাই নয়, প্রধানমন্ত্রীর দাওয়াই মাথায় রাখলে জীবনের পরীক্ষাতেও সাফল্য অনিবার্য।
পরীক্ষা ভীতি, ব্যর্থতার আশঙ্কা ও খারাপ ফলের কারণে প্রতি বছর বহু জীবন অকালে ঝরে যায়। সেই বিষয়টি মাথায় রেখেই প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ— কোনও পরীক্ষার ফল সেই সময়ে সেই পড়ুয়ার প্রস্তুতির চিত্রটিকে তুলে ধরে। সার্বিক ভাবে সেই পড়ুয়াকে নয়। সুতরাং একটি পরীক্ষা খারাপ হওয়া মানেই জীবন শেষ হয়ে যাওয়া নয়। তাই বইয়ে পড়াশুনোর পাশাপাশি খেলাধুলো, পর্যাপ্ত ঘুম এমনকী দেশভ্রমণের উপরে জোর দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। আর একেবারে শেষ সূত্র হিসাবে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ, ছোট থেকেই যোগব্যায়াম ও প্রাণায়াম অভ্যাস করো। নিজের বইয়ে কী কী ব্যায়াম, কী ভাবে করা উচিত তারও বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছেন মোদী।
বইয়ে পড়ুয়াদের বাবা-মা ও শিক্ষকদের উদ্দেশেও খোলা চিঠি লিখেছেন মোদী। বাবা-মায়েরা সন্তানের মাধ্যমে নিজেদের অপূর্ণ ইচ্ছে পূরণের চেষ্টা করে সমস্যা ডেকে আনেন বলে তাঁদের সতর্ক করে দিয়েছেন। উদ্বিগ্ন ছাত্রদের উজ্জীবিত করতে শিক্ষকদের ভূমিকা নিতে অনুরোধ করেছেন মোদী। জাভড়েকরও মনে করেন, বইটি সকলের পড়া উচিত। তা হলে কি বইটি অবশ্যপাঠ্য হতে চলেছে সিবিএসসি বোর্ডে? প্রশ্নে থতমত সিবিএসসি বোর্ডের এক কর্তা বললেন, ‘‘এখনও এমন কোনও নির্দেশ আসেনি।’’
সুষমার ব্যাখ্যায় স্পষ্ট, বইটি লেখা হয়েছে দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের কথা ভেবে। বিজেপি শিবিরের একাংশ বলছে, বইটির সম্ভাব্য পাঠকদের অনেকে ২০১৯ সালে প্রথম ভোট দেবেন। নির্বাচন কমিশনের হিসাবে লোকসভার আগে অন্তত নতুন দেড় থেকে দু’কোটি ভোটার যোগ হবে। ২০১৪ সালেও তরুণ ভোটারদের ভোট পেয়েছিলেন মোদী। পাঁচ বছর পরে তার পুনরাবৃত্তির জন্যই কি লেখক হিসাবে আত্মপ্রকাশ করলেন নরেন্দ্র মোদী!