১৫ বছর পর জেল থেকে মুক্তি পেলেন প্রাক্তন সাংসদ আনন্দমোহন সিংহ। সেই নিয়েই শুরু বিতর্ক। — ফাইল ছবি।
বিহারের জেলবিধিতে পরিবর্তনের কারণে মুক্তি পেয়েছেন ২৭ জন বন্দি। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন আইএএস খুনে দোষী প্রাক্তন সাংসদ আনন্দমোহন সিংহ। ১৫ বছর পর জেল থেকে মুক্তি পেলেন তিনি। সেই নিয়েই শুরু বিতর্ক। ১৯৯৪ সালে আমলা জি কৃষ্ণাইয়াকে খুনে দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন আনন্দ। বিরোধীদের অভিযোগ, ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার এ সব করছেন। অনেকের অভিযোগ, নীতীশ সরকারের এই নতুন জেলবিধি দলিত-বিরোধী।
গোপালগঞ্জের জেলাশাসক ছিলেন কৃষ্ণাইয়া। একটি দলের হাতে খুন হয়েছিলেন তিনি। ওই দলটিকে প্ররোচনা দিয়েছিলেন প্রাক্তন সাংসদ আনন্দমোহন। ২০০৭ সালে আনন্দমোহনকে মৃত্যুদণ্ড দেয় বিহারের নিম্ন আদালত। পরে পটনা হাই কোর্ট তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়। ২০১২ সালে সেই সাদা বহাল রাখে সুপ্রিম কোর্ট।
চলতি মাসের শুরুতে জেলবিধিতে পরিবর্তন এনেছে বিহার। আগে কর্তব্যরত সরকারি কর্মী খুনে দোষীদের জেল থেকে মুক্তি নিষিদ্ধ ছিল। এই নীতিই বদলেছে বিহার সরকার। নতুন নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, সরকারি কর্মী খুনের অপরাধী যদি ১৪ বছর জেল খেটে ফেলেন তা হলে তাঁকে মুক্তি দেওয়া হবে। এর ফলেই জেল থেকে মুক্তি পান আনন্দমোহন।
এই মুক্তি নিয়ে শুরু বিতর্ক। মায়াবতীর বহুজন সমাজ পার্টি (বিএসপি) জানিয়েছে, সরকারের এই সিদ্ধান্ত ‘দলিত-বিরোধী’। রবিবার মায়াবতী টুইটারে লেখেন, ‘‘সৎ আইএএস অফিসার জি কৃষ্ণাইয়া, যিনি অন্ধ্রপ্রদেশের মেহবুবনগরের (এখন তেলঙ্গানা) এক দলিত পরিবারের সন্তান, তাঁকে খুনে দোষী আনন্দমোহনকে মুক্তি দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে নীতীশ সরকার। এই পদক্ষেপ নেতিবাচক এবং দলিত-বিরোধী হিসাবে গোটা দেশে আলোচিত হচ্ছে।’’ আনন্দমোহনকে মুক্তির সিদ্ধান্ত নীতীশ সরকারকে পুনর্বিবেচনা করার জন্যও অনুরোধ করেছেন মায়াবতী।
বিজেপির তথ্যপ্রযুক্তি শাখার প্রধান অমিত মালবীয় বলেন, ‘‘যিনি ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য অপরাধী সিন্ডিকেটের দিকে ঝুঁকছেন, তিনি কি ভারতের মুখ, এমনকি বিরোধী নেতাও হতে পারেন?’’
পাল্টা বিজেপিকে একহাত নিয়েছে জেডিইউ। উত্তরপ্রদেশে বিএসপি তাঁদের ‘বি টিম’ বলেও কটাক্ষ করেছে। জেডিইউ নেতা রাজীব রঞ্জন টুইটারে লিখেছেন, সাধারণ মানুষ এবং বিশেষ বন্দিদের এক সারিতে আনতেই জেলবিধিতে পরিবর্তন। প্রসঙ্গত, রাজপুত নেতা আনন্দমোহনের বিহারে রাজপুত ভোটব্যাঙ্কে প্রভাব রয়েছে যথেষ্ট। মনে করা হচ্ছে, লোকসভা ভোটকে নজরে রেখেই তাই তাঁকে জেল থেকে ছাড়ছে নীতীশ সরকার। এর আগে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশও প্রাক্তন সহকর্মীর আনন্দমোহনের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়েছিলেন।