প্রতীকী ছবি।
ইভিএমে কারচুপি (হ্যাক) করে দেখানোর জন্য প্রস্তুতি-আয়োজনের কোনও খামতি রাখেনি নির্বাচন কমিশন। সবেধন নীলমণি বলতে ছিল দু’টি মাত্র দল। দিনক্ষণ মেনে নির্দিষ্ট সময়ে সেই দুই দলের প্রতিনিধিরা এলেন বটে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত হ্যাক করতে গিয়ে পিছিয়ে গেল সিপিএম ও এনসিপি। ফলে অপরীক্ষিতই রয়ে গেল কমিশনের ইভিএম। নির্বাচনে ব্যবহৃত ইভিএম হ্যাক হতে পারে বলে বিরোধীদের তোলা অভিযোগের সত্যি-মিথ্যা প্রমাণ হল না। দিনের শেষে কমিশন জানিয়ে দিল, তাদের ইভিএমে যে কোনও খামতি নেই, সেটা প্রমাণিত হল। তবে ভবিষ্যতে কোনও দল ইভিএমে কারচুপি করতে চাইলে তাদের সুযোগ দেওয়া হবে।
পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা ফলের পর থেকেই ইভিএমে কারচুপির অভিযোগ তুলে সরব হয় বিরোধীরা। সব ক’টি বিরোধী দলের চাপে অস্বস্তিতে পড়ে যায় নির্বাচন কমিশন। তাদের ইভিএম যে নিখুঁত, তা বোঝাতে প্রথমে সর্বদলীয় বৈঠক ও পরে এক ধাপ এগিয়ে ইভিএমে হ্যাক করে দেখানোর জন্য ৭টি জাতীয় ও ৪৯টি আঞ্চলিক দলের উদ্দেশে চ্যালেঞ্জ ছোড়ে কমিশন। শেষ পর্যন্ত দু’টি দল ওই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে। আর কমিশনের শর্ত মেনে ইভিএম হ্যাক করা অসম্ভব এই যুক্তিতে পিছিয়ে যায় আম আদমি পার্টি, কংগ্রেস, তৃণমূল।
আজ হ্যাক করার প্রতিযোগিতা শুরু হয় বেলা বারোটায়। কমিশন সূত্রে খবর, সিপিএমের প্রতিনিধিরা এসে বলেন, তাঁরা হ্যাক করতে আগ্রহী নন। কী ভাবে ইভিএম কাজ করে, তা দেখতে চান।। মুখ্য নির্বাচন কমিশনার নসিম জৈদী বলেন, ‘‘সিপিএমের প্রতিনিধিদের বিস্তারিত ভাবে ইভিএমের কার্যপ্রণালী বোঝানো হলে তারা বিষয়টিতে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।’’ এনসিপি প্রতিনিধিরা জানান, তাঁরাও হ্যাক করতে আগ্রহী নন। তাঁদের ৮টি প্রশ্ন রয়েছে, সেগুলি স্পষ্ট করতে চান। এনসিপি নেতাদের সন্দেহ দূর করেন কমিশন-কর্তারা। জৈদী বলেন, ‘‘এনসিপি নেতাদের মহারাষ্ট্র পুরভোটের কিছু ইভিএম নিয়ে প্রশ্ন ছিল। আমরা জানাই ওই ইভিএমগুলি রাজ্য নির্বাচন কমিশনের। যার সঙ্গে আমাদের কোনও সম্পর্ক নেই।’’ যদিও কমিশনের বাইরে এনসিপি-র নেতারা গোটা প্রক্রিয়াটিকেই ‘প্রহসন’ হিসেবে ব্যাখ্যা করে অভিযোগ করেন, তাঁদের ইভিএম হ্যাক করার সুযোগই দেওয়া হয়নি! এই অভিযোগে কিছুটা অবাক জৈদী বলেন, ‘‘সমস্ত সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। ওই রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের হ্যাক করে দেখানোর জন্য ফের একবার স্বাগত জানাচ্ছি।’’
এই প্রতিযোগিতাকে শুরু থেকে প্রহসন বলে আসছে অরবিন্দ কেজরীবালের আপ। কমিশনকে কার্যত চ্যালেঞ্জ করে আপ আজ প্রটোটাইপ ইভিএম হ্যাক করার প্রতিযোগিতার কথা জানিয়েছে। বিধায়ক সৌরভ ভরদ্বাজ বলেন, ‘‘ইচ্ছুক ব্যক্তি, দল, হ্যাকারদের ওই প্রটোটাইপ মেশিন হ্যাকিং করে দেখানোর জন্য আহ্বান করা হচ্ছে।’’ আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে কমিশনের প্রতিনিধি এবং ইভিএম নির্মাতা ভারত ইলেকট্রনিক্স লিমিটেডকেও।