Assam

Lumding Eviction: শান্তিতে উচ্ছেদ শুরু লামডিংয়ে

বন দফতর সূত্রে জানানো হয়, লামডিং ও লংকা মিলিয়ে থাকা লামডিং সংরক্ষিত বনাঞ্চলের মোট জমি ২২,৪০২ হেক্টর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০২১ ১০:০২
Share:

চলছে উচ্ছেদ প্রক্রিয়া। ছবি সংগৃহীত।

দরং জেলার গোরুখুঁটির উচ্ছেদে জনতার সঙ্গে সংঘর্ষ, গুলি, মৃত্যুর ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে অসম সরকার লামডিংয়ের ৩৪০ হেক্টর জমিতে উচ্ছেদ চালানোর আগে বিরাট পুলিশ ও আধাসেনা বাহিনী মোতায়েন করল। বাসিন্দাদের অনেক আগেই নোটিস দেওয়া হয়। পুনর্বাসন মিলবে, এ কথা বুঝিয়ে বলা হয়। এর পর আজ উচ্ছেদ চলে ওই ৩৪০ হেক্টরে। সেখানে ৬৭০টি পরিবারের বা ছিল। বেশির ভাগ বাসিন্দাই সরকার-নির্ধারিত স্থানে চলে গিয়েছেন। তাই এ দিনের উচ্ছেদপর্ব শান্তিতে মিটেছে। এসপি বরুণ পুরকায়স্থ জানান, চার কোম্পানি সিআরপিএফ ও বিরাট পুলিশবাহিনী হাতি ও এক্সক্যাভেটরের সাহায্যে উচ্ছেদ চালানো হয়। নজর রেখেছিল ড্রোন।

Advertisement

বন দফতর সূত্রে জানানো হয়, লামডিং ও লংকা মিলিয়ে থাকা লামডিং সংরক্ষিত বনাঞ্চলের মোট জমি ২২,৪০২ হেক্টর। ১৪১০ হেক্টর জমি জবরদখল হয়েছে। অভিযোগ, জমির দালালরা নামনি অসম, মধ্য অসমের সংখ্যালঘু ও চাকমা, গারো-সহ বিভিন্ন জনজাতির মানুষকে জঙ্গলের জমি টাকার বিনিময়ে বিক্রি করেছে। দেওয়া হয়েছে ভুয়ো পাট্টা। সরল বিশ্বাসে তাঁরা কয়েক পুরুষ ধরে জঙ্গলের জমিতে বসত গড়ে থাকছিলেন। বাসিন্দাদের অনেকেই মরিগাঁও, নগাঁও এলাকার বন্যায় ভিটেহারা পরিবার। দালালরা ২৫ হাজার থেকে ১.৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত নিয়ে বনের জমি তাঁদের বেচে দিয়ে ঠকিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা এ-ও জানিয়েছেন, ঠিকাদারের নেতৃত্বে নগাঁও, ধুবুড়ি, বরপেটা থেকে লোক এসে বন ধ্বংস করে আদা চাষ করছে। ঠিকাদার মারফত আদা চাষের শ্রমিক হিসেবে আসা অনেকেই লামডিং বনাঞ্চলে পাকাপাকি বসবাস করছেন।

হোজাইয়ের প্রাক্তন বিধায়ক শিলাদিত্য দেব বনাঞ্চল জবরদখল মুক্ত করার আবেদন জানিয়েছিলেন হাই কোর্টে। আদালত উচ্ছেদের নির্দেশ দেয়। প্রশাসন সকলকে বিষয়টি বুঝিয়ে, বিকল্প পুনর্বাসনের আশ্বাস দিয়ে আপাতত সরকার-নির্ধারিত স্থানে থাকতে অনুরোধ জানায়।

Advertisement

সরকার এর পর ধিঙের চরে উচ্ছেদ অভিযান চালাবে। সেখানেও নোটিস দেওয়া হয়েছে। তবে সেখানে ইতিমধ্যেই বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। সিপিআই(এমএল)-এর দাবি সংখ্যালঘুদের হেনস্থা করতেই এই উচ্ছেদ অভিযান। বন্যায় জমি-বাড়ি হারানো মানুষই চরে বাস করছেন। তাঁদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা না করে উচ্ছেদ চলবে না।

উত্তর-পূর্ব ছাত্র সংগঠনের দাবি, জবরদখলকারীরা ভূমিহীন। তাঁদের মধ্যে বিভিন্ন ধর্ম ও জনজাতির মানুষ রয়েছেন। আগে তাঁদের পুনর্বাসন দিয়ে তার পরেই উচ্ছেদ করা উচিত। যদি জবরদখলকারীদের মধ্যে সত্যিই কেউ বিদেশি হন- তবে তা প্রমাণ করে দেশ থেকে বহিষ্কারের ব্যবস্থা করা হোক। অসমে উচ্ছেদের বিরুদ্ধে আজ দিল্লির যন্তর মন্তরে অবস্থান বিক্ষোভ করে আমসু। ১২ দফা দাবি নিয়ে স্মারকলিপি দেওয়া হয় প্রধানমন্ত্রীকেও। তাদের দাবি অসমের উচ্ছেদ পক্ষপাতদুষ্ট, সাম্প্রদায়িক ও অমানবিক। কোনও পুনর্বাসন না দিয়ে হাজার হাজার ভারতীয়কে ঘরছাড়া করে অতিমারির মধ্যে যাযাবর জীবন কাটাতে বাধ্য করছে সরকার। তাদের আরও দাবি, এনআরসির জন্য অনেকের আধার কার্ড আটকে রয়েছে। তারা সরকারি সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন না। প্রকৃত ভারতীয়দের নিঃশর্তে আধার কার্ড দিতে হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement