নতুন পদক্ষেপের কথা জানাল নির্বাচন কমিশন। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
ভোটার কার্ডের এপিক নম্বরের সঙ্গে আধার কার্ড সংযোগ নিয়ে পদক্ষেপ করা হবে বলে জানাল নির্বাচন কমিশন। মঙ্গলবার কমিশন জানিয়েছে, আধার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ওই বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। শীঘ্রই ওই কাজের জন্য আধার কার্ডের প্রযুক্তিবিদদের সঙ্গে কমিশনের আধিকারিকেরা বৈঠক করবেন। কমিশন সূত্রে খবর, শুধুমাত্র সংযোগ নয়, আধারের মতো ভোটার কার্ডও প্রযুক্তিগত ভাবে কাজ করবে। ভূতুড়ে ভোটার নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে সরব হয়েছে তৃণমূল-সহ বেশ কয়েকটি বিরোধী দল। সেই আবহেই পদক্ষেপের আশ্বাস দিল কমিশন।
ভোটার কার্ডের সঙ্গে আধার কার্ডের সংযুক্তিকরণ নিয়ে মঙ্গলবার দিল্লির নির্বাচন সদনে বৈঠকে বসে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার ওই বৈঠক ডাকেন। বৈঠকে ছিলেন নির্বাচন কমিশনার সুখবীর সিংহ সান্ধু, বিবেক জোশী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব, আধার কমিশনের সিইও, সংসদ বিষয়ক মন্ত্রকের সচিব, কেন্দ্রীয় আইন সচিব, ইউআইডিএআই-এর সিইও। কমিশন সূত্রে খবর, এক ব্যক্তি-এক আধারের মতো সচিত্র ভোটার কার্ডের এপিক নম্বরও একটি থাকবে, এমন পদক্ষেপ করা হবে। অর্থাৎ, এক ভোটার-এক এপিক করার ভাবনাচিন্তা রয়েছে। প্রসঙ্গত, এই দাবি তুলেছে তৃণমূল। গত ৬ মার্চ রাজ্যের শাসকদল রাজ্য নির্বাচন কমিশনে গিয়ে ভোটার কার্ডে ‘ইউনিক আইডি’ চালুর দাবি জানিয়ে এসেছে। কমিশনে স্মারকলিপি দিয়ে বেরিয়ে রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘বাংলার ভোটকে প্রহসনে পরিণত করার চেষ্টা করছে বিজেপি। একই এপিক নম্বরে বিভিন্ন রাজ্যে ভোটার কার্ড থাকা চলবে না। আধার কার্ড, পাসপোর্টে যেমন থাকে তেমন ভাবে ভোটার কার্ডেও ইউনিক আইডি চালু করতে হবে।’’ এই আবহে কমিশন এমন পদক্ষেপের কথা জানাল।
২০২৩ সালে আধারের সঙ্গে ভোটার সংযুক্তি নিয়ে এর আগে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের হয়েছিল। সেই সময় শীর্ষ আদালতে কমিশন জানিয়েছিল, আধারের সঙ্গে ভোটার সংযোগ বাধ্যতামূলক নয়। কমিশন সূত্রে খবর, এখন দেশে ভোটার সংখ্যা ১০০ কোটির কাছাকাছি। ২০২৩ সালে সারা দেশ জুড়ে ৬৬ কোটি ২৩ লক্ষ আধার কার্ডের নম্বর ভোটার কার্ডের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। এ বার সব ভোটার কার্ডের সঙ্গে আধার জোড়ার কাজ করতে চায় কমিশন।
তৃণমূলের অভিযোগ, আগে ভোটার কার্ডে বিধানসভা এবং লোকসভা কেন্দ্রের কথা উল্লেখ থাকত। কিন্তু নতুন প্রক্রিয়ায় তা থাকছে না। এতেই ‘চক্রান্ত’ রয়েছে বলে মনে করছে বাংলার শাসকদল। তৃণমূলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এই অভিযোগ নিয়ে সরব হয়েছেন। এই অভিযোগ ওঠার পরে জাতীয় নির্বাচন কমিশন জানিয়েছিল, একাধিক ভোটারের একই এপিক নম্বর থাকা নতুন কথা নয়। কিন্তু একই রাজ্যে এক এপিক নম্বর এক জনেরই থাকে। ফলে গোলমাল হওয়ার কোনও সুযোগ নেই। যদিও তৃণমূল এই যুক্তি মানতে নারাজ। মঙ্গলবার কমিশন জানিয়ে দিল, এপিক নম্বরের সঙ্গে আধার কার্ড সংযোগ নিয়ে পদক্ষেপ করা হবে। পাশাপাশি, সূত্রের খবর, এক ব্যক্তি-এক আধারের মতো সচিত্র ভোটার কার্ডের এপিক নম্বরও একটি থাকবে, এমন পদক্ষেপ করা হবে।