শেষ মুহূর্তেও থামানোর চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু কিন্তু ইভিএম হ্যাক করার প্রতিযোগিতা থামাতে রাজি হল না উত্তরাখণ্ড হাইকোর্ট। ফলে ইভিএমে কারচুপি করে দেখাতে নির্বাচন কমিশনের চ্যালেঞ্জ বহাল থাকছে। আগামিকাল সকাল দশটা থেকেই দিল্লির অশোক রোডে কমিশনের সদর দফতরে শুরু হচ্ছে ইভিএমে কারচুপি করে দেখানোর প্রতিযোগিতা।
উত্তরপ্রদেশে বিজেপির বিরাট জয় দেখে বিরোধী দলগুলি ইভিএমে কারচুপির অভিযোগ এনেছিল। কিন্তু কমিশন ইভিএমে কারচুপি করে দেখাতে রাজনৈতিক দলগুলিকেই চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেওয়ায় পিছিয়ে আসে প্রায় সকলেই। শুধু সিপিএম ও এনসিপি জানায়, চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করছে তারা। সিপিএমও অবশ্য পরে জানিয়ে দেয়, কমিশনে তাদের প্রতিনিধিরা ইভিএম হ্যাক করে দেখাবেন না।
বরং ইভিএমকে আরও ভাল ভাবে ব্যবহার করা যায় কী ভাবে, সেটাই দেখাবেন। তবে এনসিপি কাল কী করতে চলেছে, দলের পক্ষে তা জানানো হয়নি।
আরও পড়ুন: সুষমা-ছোঁয়ায় ভিসা, আপ্লুত পাক বাবা
এই পরিস্থিতিতে প্রতিযোগিতার যাবতীয় প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে নির্বাচন কমিশন। উত্তরপ্রদেশ, পঞ্জাবের ভোটে ব্যবহার করা হয়েছে— এমন ১৪টি ইভিএম রাজনৈতিক দলগুলির সামনে রাখার ব্যবস্থা হয়েছে। উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদ, গৌতম বুদ্ধ নগর, পঞ্জাবের পাটিয়ালা, ভাটিন্ডা, উত্তরাখণ্ডের দেহরাদূন থেকে ভোটে ব্যবহৃত ইভিএম নিয়ে আসা হয়েছে। কমিশন সূত্রের খবর, দু’টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের হাতে চারটি করে ইভিএম তুলে দেওয়া হবে। কারচুপি করে দেখাতে চার ঘণ্টা করে সময় পাবে তারা।
তবে এ দিন উত্তরাখণ্ড হাইকোর্টে এই সংক্তান্ত একটি জনস্বার্থ মামলা আসায় দিন ভর টানাপড়েনের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। হাইকোর্ট বলে, কমিশনের উচিত ভোটে ব্যবহৃত ইভিএম কারচুপির প্রতিযোগিতার জন্য ব্যবহার না করা। তবে যে ইভিএমে ভোট হয়নি, তা প্রতিযোগিতায় আনার প্রশ্নে আদালত আপত্তি করেনি। শেষ পর্যন্ত
নির্বাচন কমিশনের প্রতিযোগিতা আটকানোর আবেদনটি খারিজ করে দেয় হাইকোর্ট।
এখন প্রশ্ন, আগামিকাল চ্যালেঞ্জের জন্য যে ইভিএমগুলি রাজনৈতিক দলগুলির হাতে তুলে দেওয়া হবে, তা ভোটে ব্যবহৃত ইভিএম কিনা। বিরোধীদের অভিযোগ ছিল, উত্তরপ্রদেশের ভোট বিজেপির দিকে পাঠাতে ইভিএমে কারচুপি করা হয়েছে। কমিশন যদি ভোটে ব্যবহৃত মেশিন প্রতিযোগিতায় নিয়ে আসতে না পারে, তা হলে কোনও ভাবেই বিরোধীদের অভিযোগ শেষ করা যাবে না। তবে তা সত্ত্বেও কোনও
দল ইভিএম হ্যাক করে দেখাতে না পারলে নিঃসন্দেহে শেষ হাসি হাসবে নির্বাচন কমিশনই।
ইভিএমে কারচুপির অভিযোগ তুলে সব থেকে বেশি সরব ছিল অরবিন্দ কেজরীবালের দল আপ। কিন্ত শেষ পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের চ্যালেঞ্জ তারা গ্রহণ করেনি। আগামিকাল যদিও আলাদা ভাবে ইভিএম হ্যাক করার প্রতিযোগিতায় যাচ্ছে কেজরীর দল। সেখানে যদিও নকল ইভিএম ব্যবহার করা হবে। কমিশনের যদিও বক্তব্য, তাদের চ্যালেঞ্জ গ্রহণ না করে বাইরে কে কী করল, তাতে কিছু যায় আসে না।