ফাইল চিত্র।
পশ্চিমবঙ্গে ভোটের প্রচারে কোভিড স্বাস্থ্যবিধি ঠিক মতো মানা হচ্ছে না বলে আজ নির্বাচন কমিশন উদ্বেগ প্রকাশ করল। কমিশনের নির্দেশ, রাজ্যের মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে এ বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত কমিটি রয়েছে, তাকে সক্রিয় হতে হবে। কোথাও কোভিড স্বাস্থ্যবিধির লঙ্ঘন হলেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।
আজ মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুশীল চন্দ্র, নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, স্বাস্থ্যসচিব, পুলিশের ডিজি, কলকাতার পুলিশ কমিশনার-সহ রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। কমিশনের বক্তব্য, রাজ্যে ভোটের প্রচারে বিপর্যয় মোকাবিলা আইন মোতাবেক কোভিড বিধি যথেষ্ট ভাবে কার্যকর হচ্ছে না। মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষের যে কার্যকরী কমিটি রয়েছে, যার দায়িত্ব হল কোভিড বিধি কার্যকর করা, তাকে আরও সক্রিয় হতে হবে। জেলা প্রশাসনকেও এর দায় নিতে হবে। মুখ্যসচিবের নেতৃত্বাধীন কমিটিকে কমিশন কোভিড বিধি কার্যকর করা ও তার দিকে নজরদারির নির্দেশ দিয়ে বলে, প্রচারের সময় কোভিড বিধির লঙ্ঘন হলেই উপযুক্ত ব্যবস্থা
নিতে হবে।
রাজ্যে সপ্তম দফার ভোটের প্রচার শেষ হয়ে যাওয়ার পরে এখন শুধুমাত্র অষ্টম দফার ভোটের প্রচার বাকি রয়েছে। করোনার সময়ে পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচন হলেও নির্বাচন কমিশন শুধুমাত্র নির্দেশিকা জারি করেই দায় সেরেছে বলে তিন দিন আগেই কলকাতা হাইকোর্ট তোপ দেগেছিল। তারপরেই নির্বাচন কমিশন বাংলায় ভোটের প্রচারে রোড শো, পদযাত্রা, গাড়ি-বাইকে প্রচার মিছিলে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। কমিশনের নির্দেশ ছিল, জনসভাতেও পাঁচশো জনের বেশি জমায়েত করা যাবে না। কোভিড বিধি মানতে হবে। মূলত এই নির্দেশ কী ভাবে কার্যকর হচ্ছে, তার পর্যালোচনা করতেই আজ বৈঠকে বসেছিল কমিশন। কমিশনের বক্তব্য, রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় আশ্বাস দিয়েছেন, গোটা রাজ্য প্রশাসন আরও কঠোর ভাবে কোভিড বিধি পালনের দিকে নজর দেবে। গত ছয় দফায় ভোটগ্রহণের সময় কোভিডের সুরক্ষা বিধি মেনে ব্যবস্থার জন্য রাজ্য প্রশাসনের প্রশংসা করেছে কমিশন।
রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের (সিইও) দফতর সূত্রের খবর, আগামিকাল, সোমবার সপ্তম দফার ভোটে মোট ৬৫৩ কোম্পানি বাহিনী মোতায়েনের পরিকল্পনা করছে কমিশন। কলকাতার যে চারটি কেন্দ্রে ভোট হবে, তার জন্যই থাকার কথা ১০৮ কোম্পানি বাহিনী। পাশাপাশি, কলকাতার চারটি বিধানসভার ৪২৭টি বুথের ২০০ মিটারের মধ্যে ১৪৪ ধারা কার্যকর থাকবে। এ দিন সিইও দফতরে গিয়ে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কমিশনের স্থির করে দেওয়া বিধি ভঙ্গের অভিযোগ জানিয়েছে বিজেপি। তাদের অভিযোগ, প্রচার যখন শেষ হয়ে গিয়েছে, তখনও মমতা মুর্শিদাবাদে রাত্রিবাসের পরিকল্পনা করছেন। এখন প্রচার বন্ধ। তার পরেও তাঁর এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে বিজেপি। দল আরও অভিযোগ করেছে, তাদের কাছে খবর এসেছে, মমতা যে শুধু প্রচার করছেন তাই নয়, বরং ভোট অফিসারদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন। এ জন্য কমিশনের হস্তক্ষেপ চেয়েছে বিজেপি।