ইভিএমের পরিবর্তে কাগজের ব্যালট ফিরিয়ে আনার দাবিতে নির্বাচন কমিশনের কাছে ফের সরব হলেন বিরোধীরা।
নির্বাচনী সংস্কার নিয়ে আলোচনা করতে শাসক ও বিরোধী দলের প্রতিনিধিদের আজ দিল্লিতে বৈঠকে ডেকেছিল নির্বাচন কমিশন। সেখানে বিরোধীরা তো বটেই, এনডিএ শরিক শিবসেনাও একই দাবিতে জানায়। ব্যালট ছাড়াও ‘এক দেশ এক ভোট’ প্রশ্নে শাসক শিবিরের সঙ্গে মতান্তর ঘটে বিরোধীদের। নরেন্দ্র মোদী এ নিয়ে গত কাল ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে সরব হলেও, মুখ্য নির্বাচন কমিশনার ও পি রাওয়ত জানান, বৈঠকে বেশ কিছু দল লোকসভা ও বিধানসভার ভোট একসঙ্গে করার বিরোধিতা করেছে। আর ব্যালট ফেরানোর প্রশ্নে তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, এতে ফের বুথ দখলের আশঙ্কা ও উৎসাহ বাড়বে।
বৈঠকে প্রায় সব বিরোধী দল নিজে থেকেই ইভিএমে কারচুপি নিয়ে সরব হয়। তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বলেন, ‘‘ইভিএমে কারচুপির একাধিক ঘটনা সামনে এসেছে। স্বচ্ছতা ফেরাতে ব্যালটে ফিরে যাক কমিশন।’’ সমাজবাদী পার্টি বা বিএসপির মতো বিরোধী দলের পাশাপাশি শিবসেনাও সমর্থন করে তৃণমূলের দাবিকে। নীতিগত ভাবে কংগ্রেসও ব্যালটে ভোটের পক্ষে। তবে তারা জানিয়েছে, একান্তই ব্যালট ব্যবস্থায় ফেরা না গেলে প্রতি কেন্দ্রে অন্তত ৩০ শতাংশ বুথে ভিভিপ্যাট যন্ত্র বসানো হোক। তাতে ভোটারও কাগজে দেখতে পাবেন, তাঁর ভোট কার ঘরে পড়েছে। ভিভিপ্যাট
বসাতে রাজি হলেও, কমিশন জানিয়েছে, ব্যালটে ফেরা সম্ভব নয়।
কল্যাণবাবু এ দিন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা একটি চিঠি কমিশনের কাছে জমা দেন। দীর্ঘদিন ধরেই সরকারের বেঁধে দেওয়া খরচে লোকসভা-বিধানসভার ভোট করার দাবিতে সরব রয়েছেন মমতা। তাঁর বক্তব্য, ৬৪টি দেশে সরকারের টাকায় ভোট হয়। ভারতে কেন হবে না? এতে অপচয় কমবে। ছোট দলও পাল্লা দিতে পারবে বড় দলের সঙ্গে। লোকসভা ও বিধানসভায় মহিলাদের জন্য আসন সংরক্ষণ ও সময়ে ভোটার তালিকা সংশোধনেরও দাবি তুলেছেন তিনি।
প্রশ্ন লোকসভা ও সব বিধানসভার ভোট একসঙ্গে করার প্রস্তাব নিয়ে। বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ সম্প্রতি এর পক্ষে সওয়াল করে কমিশনকে চিঠি দিয়েছেন। কাল ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানেও বিতর্কটা উস্কে দেন মোদী। মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জানাচ্ছেন, অনেক বিরোধী দলই এর বিরোধী।
বিজেপির একাংশ ২০১৯-এ লোকসভার সঙ্গে অন্তত দশটি রাজ্যে ভোট চাইছিল। কিন্তু কমিশন কর্তারা স্পষ্ট করে দিয়েছেন, সেই পরিকাঠামো নেই। ফলে মোদী-অমিতরা চাইলেও প্রস্তাবটি নিয়ে আর এগোনো হবে কি না, তা নিয়ে দ্বিধায় কমিশনও।