দফতরে টেলিফোন, বিদ্যুৎ কিংবা জলের মতো পরিষেবার বিল বকেয়া থাকলে রাজনৈতিক দলগুলিকে ভোটে লড়তে দিতে চাইছে না নির্বাচন কমিশন। এ নিয়ে তাদের প্রস্তাব ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রকের কাছে পাঠানো হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলির কাছে এ নিয়ে মতামত জানতে চেয়েছে কমিশন। দলগুলির বক্তব্য জানার পরেই এই বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ করবে কেন্দ্রীয় সরকার।
বর্তমানে বিদ্যুৎ, জল, টেলিফোনের মতো পরিষেবার বিল বাকি থাকলে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীর মনোনয়ন খারিজ হয়ে যায়। প্রার্থীকে কমিশনে হলফনামা দেওয়ার সময়ে জানাতে হয় যে তাঁদের এই ধরনের বকেয়া নেই। প্রার্থীরা তা না জানালে মনোনয়ন গৃহীত হয় না। এই কারণেই সাম্প্রতিক বিধানসভা ভোটে অনেকেরই মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে গিয়েছে। এ বার রাজনৈতিক দলগুলির ক্ষেত্রে সেই নিয়ম চালু করার জন্য সাতটি জাতীয় দল ছাড়াও সমাজবাদী পার্টি ও এডিএমকে-র মতো বিভিন্ন আঞ্চলিক দলের মতামত চাওয়া হয়েছে। এই নির্বাচনী সংস্কারের জন্য ইতিমধ্যেই আইন মন্ত্রকের কাছে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনার সুপারিশ করেছে কমিশন।
দু’বছর আগে দিল্লি হাইকোর্ট তাদের একটি রায়ে বলেছিল, বিধানসভা-লোকসভা নির্বাচনে মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার সময়ে প্রার্থীদের হলফনামা দিয়ে জানাতে হবে যে জল, বিদ্যুতের মতো পরিষেবায় কোনও বিল তাদের বকেয়া নেই। তার পরেই এই নিয়ম চালু হয়। প্রার্থীদের হলফনামা দিতে হয় নির্বাচন কমিশনকে। তবে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার নসীম জৈদীর মতে, হাইকোর্ট সেই সময়ে শুধু প্রার্থীদের জন্যই নয়, রাজনৈতিক দলগুলির ক্ষেত্রেও ওই ধরনের নিয়ম করার প্রস্তাব রেখেছিল। তার পরেই কমিশন বিষয়টি নিয়ে এগিয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলির মতামত জানতে চাওয়া হয়েছে।
কমিশন সূত্রের বক্তব্য, বিভিন্ন জাতীয় দল বা বড় আঞ্চলিক দলগুলি রাজধানী দিল্লিতে দলীয় দফতরের জন্য সরকারের কাছ থেকে জমি বা বাড়ি পেয়েছেন। সেই দফতরের ভাড়া বা জল-বিদ্যুৎ বা টেলিফোনের বিল বকেয়া রয়েছে কিনা, তা-ও এ বার কমিশনের আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে। পাশাপাশি, দেশের অন্যত্র রাজনৈতিক দলগুলি যাতে এই ধরনের পরিষেবায় বিল বকেয়া না রাখতে পারে, সে দিকে নজর রাখার চেষ্টা হচ্ছে। এই মুহূর্তে রাজনৈতিক দলগুলিকে জমা-খরচের হিসেব কমিশনকে জানাতে হয়। এই সূত্রে বকেয়া মেটানোর বিষয়টিও রাখতে চাইছে কমিশন।