ছবি রয়টার্স।
বর্ষীয়ান মানুষেরা করোনার প্রতিষেধক নিতে চাইলে মোবাইল অ্যাপ ও সরকারি ভ্যাকসিন পোর্টালের মাধ্যমে কিংবা জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করে নিজেদের নাম নথিভুক্ত করতে পারবেন। আজ এই কথা জানিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। স্বাস্থ্যকর্মী, পুলিশ ও আধাসেনার মতো ‘ফ্রন্টলাইন’ কর্মীদের টিকাকরণ শুরু হওয়ার পরেই টিকা নিতে ইচ্ছুক প্রবীণদের নাম নথিভুক্তির কাজ শুরুর ইঙ্গিত দিয়েছে কেন্দ্র। তবে স্বাস্থ্য মন্ত্রক স্পষ্ট করে দিয়েছে, টিকা নেওয়া বাধ্যতামূলক নয়। টিকা নিতে কাউকে জোরও করা হবে না।
আগামী মাস থেকেই দেশ জুড়ে টিকাকরণ শুরুর প্রস্তুতি চালাচ্ছে মোদী সরকার। প্রথম ধাপে এক কোটি স্বাস্থ্যকর্মী, দু’কোটি পুরকর্মী, পুলিশ ও আধাসেনাদের টিকা দেওয়ার কথা রয়েছে। পরবর্তী ধাপে পঞ্চাশ বছরের বেশি বয়সি নাগরিকেরা এবং দীর্ঘদিন ধরে হৃদ্যন্ত্র, কিডনি বা ফুসফুসের রোগের শিকার যাঁরা, এমন ২৭ কোটি মানুষকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে সরকার। আজ স্বাস্থ্য মন্ত্রকের যুগ্মসচিব লব আগরওয়াল জানান, ইতিমধ্যেই দেশের বিভিন্ন রাজ্য থেকে ৫০ লক্ষ স্বাস্থ্যকর্মীর নামের তালিকা মন্ত্রকের কাছে পৌঁছে গিয়েছে। স্বাস্থ্যকর্মী ও পুলিশ ও আধাসেনার কর্মীদের নাম রাজ্যের মাধ্যমে স্বাস্থ্য মন্ত্রকে পৌঁছে গেলেও প্রশ্ন উঠেছে, যে বর্ষীয়ান মানুষেরা টিকা নিতে ইচ্ছুক, তাঁদের নাম কেন্দ্র জানবে কী ভাবে?
স্বাস্থ্য মন্ত্রকের কথায়, টিকাপ্রাপ্তদের সমস্ত তথ্য রাখা থাকবে ‘কো-উইন’ নামে এক মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনে। এতে কোনও ব্যক্তি কবে টিকা নিয়েছেন, কত দিন পরে বুস্টার বা পরবর্তী ডোজ় নিতে হবে, সে বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ তথ্য থাকবে। বয়স্কেরা টিকা নিতে চাইলে ওই মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমেই তা জানাতে পারবেন। জনগণনার তথ্য দেখে জেলা প্রশাসনের তরফেও ফোনে যোগাযোগ করা হতে পারে প্রবীণদের সঙ্গে। চাইলে তিনি নিজেও স্থানীয় জেলা স্বাস্থ্য প্রশাসন, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, টিকা সংক্রান্ত সরকারি পোর্টালের মাধ্যমে নাম লেখাতে পারবেন। তবে নাম নথিভুক্তি মানেই যে পত্রপাঠ টিকা মিলবে, এমন নয়। প্রত্যেকের, বিশেষত প্রবীণদের শারীরিক অবস্থা খতিয়ে দেখার পরে তবেই টিকা দেওয়ার প্রশ্নে ছাড়পত্র দেওয়া হবে। কারণ, প্রবীণদের মধ্যে যাঁদের শরীরে ‘ক্রনিক’ অসুখ বাসা বেঁধে রয়েছে, তাঁরা অগ্রাধিকার পাবেন।
স্বাস্থ্য মন্ত্রক সূত্রে জানানো হয়েছে, টিকা দেওয়া নিয়ে ইতিমধ্যেই জালিয়াতি শুরু করেছে বেশ কিছু সংস্থা। টিকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতির বিনিময়ে অগ্রিম টাকা নিয়ে নাম লেখানো হচ্ছে কিছু ওয়েবসাইটে। আজ এ নিয়ে সাবধান করে দিয়ে যুগ্মসচিব লব আগরওয়াল বলেন, ‘‘নাম নথিভুক্ত করা যায়, এমন কোনও ওয়েবসাইট খোলেনি সরকার। যখন নাম নথিভুক্ত করার জন্য সেগুলি খোলা হবে, তখন এ বিষয়ে সরকারি ভাবে ঘোষণা করা হবে।’’